শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা থেকে এ এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্নতার পাশাপাশি গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে থাকে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়,মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করায় এর প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার সম্পর্কে সতর্কতা ও প্রস্তুতি গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেছে মোংলা উপজেলা প্রশাসন, মোংলা বন্দর ও পৌর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছে।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে এখানে উপকূলীয় মানুষের জানমাল রক্ষায় ১০৩ টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবাইকে আশ্রয়নে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া মজুত করা হয়েছে প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার ও ওষুধ। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় মোংলা উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত কোন আশ্রয় কেন্দ্রে দূর্গতরা আশ্রয় নেয়নি। উপজেলা ও পৌরসভায় পৃথক দুটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও নিশাত তামান্না।
এদিকে দুর্যোগকে ঘিরে দুপুরে জরুরি বৈঠক করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মোংলা বন্দরে নিজস্ব এলার্ট নম্বর ‘থ্রি’ জারি করা হয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত সকল প্রকার বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজসহ অপারেশনাল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দরের জেটিসহ পশুর চ্যানেলে নোঙর করা দেশি-বিদেশি ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধসহ ওই সকল জাহাজকে নিরাপদ নোঙ্গরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের অপারেশনাল সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক থেকে ঝড় মোকাবেলায় সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ওসি হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সাত নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের প্রতিটি ষ্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষকীদের নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের বণ্যপ্রাণীদেরও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।