কক্সবাজারে চলছে শুঁটকি তৈরির মহোৎসব!

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৩:২৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

দেশের বৃহত্তম শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্র কক্সবাজার নাজিরারটেকসহ জেলার সব উৎপাদন কেন্দ্রে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম পড়েছে। রাত-দিন সমান তালে চলছে শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতদের দম ফেলার ফুসরত নেই। উৎপাদন নিয়ে পল্লীগুলোতে চলছে তোড়জোড়।

আবহাওয়া অনুকূল ও মাছের জোগান থাকায় শুঁটকি উৎপাদন চলছে জোরেসোরে। এই অনুকূল অবস্থা বজায় থাকলে প্রচুর শুঁটকি রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

নাজিরারটেকের শুঁটকি ব্যবসায়ী ইয়াছিন মোহাম্মদ বলেন, প্রতি বছর বাংলা শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের ১৫ তারিখ থেকে মাছ শুকানোর কাজ শুরু হয়। মে মাসের ১৫ তারিখের দিকে শেষ হবে মাছ শুকানোর কার্যক্রম।

তিনি জানান, উৎপাদনের মৌসুমে নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করে। প্রতিটি নারী শ্রমিকের মজুরি সাড়ে ৩০০ টাকা আর প্রতি পুরুষ শ্রমিকের মজুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই শুঁটকি উৎপাদনের মাধ্যমে পুরো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তারা।

নাজিরারটেক শুঁটকি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রাথমিক হিসেবে গড়ে প্রায় ১০০ মাছ ধরার ট্রলার থেকে ৩ থেকে ৪ হাজার টন মাছ এই শুঁটকি শুকানোর চরে এসে খালাস করে। তার মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকারের মাছের প্রতি টনের গড় মূল্য ৪ হাজার টাকা। সে হিসাবে ৪ হাজার টন মাছের মূল্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তাদের নির্ধারিত বছরের অর্ধেক মৌসুমের মাছের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৯৬ কোটি টাকা।

সরেজমিন নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল ঘুরে দেখা যায়, শত শত শ্রমিক শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। একেকজন একেক উৎপাদন কার্যক্রমের সঙ্গে রয়েছে। নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে উৎপাদিত শুঁটকির মধ্যে রয়েছে, লইট্যা, ছুরি, পাছকাড়া, চিংড়ী, ফাসিয়া, রূপচাঁদা, কামিলা, লাউক্ষ্যা, করতি, ছুরি, রূপসা, সুরমা, তাইল্যা, পোঁপাসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

নাজিরারটেক শুঁটকি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ কোম্পানি বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে প্রতিদিন ১০-১৫ এবং মৌসুমের শেষের দিকে ৮-১০টি ট্রাক অর্থাৎ ৮০ থেকে ৯০ টন শুঁটকি মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে এসব শুঁটকি।

কক্সবাজার পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড নাজিরারটেক শুঁটকিপল্লী এলাকার কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। ধীরে ধীরে কাঁচা সড়ক থেকে ইটের সড়কে কিছু অংশ যাতায়ত উপযোগী করা গেলেও সম্পূর্ণ এখনো উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কক্সবাজারে চলছে শুঁটকি তৈরির মহোৎসব!

আপডেট সময় : ০৫:৫৩:২৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

দেশের বৃহত্তম শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্র কক্সবাজার নাজিরারটেকসহ জেলার সব উৎপাদন কেন্দ্রে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম পড়েছে। রাত-দিন সমান তালে চলছে শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতদের দম ফেলার ফুসরত নেই। উৎপাদন নিয়ে পল্লীগুলোতে চলছে তোড়জোড়।

আবহাওয়া অনুকূল ও মাছের জোগান থাকায় শুঁটকি উৎপাদন চলছে জোরেসোরে। এই অনুকূল অবস্থা বজায় থাকলে প্রচুর শুঁটকি রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

নাজিরারটেকের শুঁটকি ব্যবসায়ী ইয়াছিন মোহাম্মদ বলেন, প্রতি বছর বাংলা শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের ১৫ তারিখ থেকে মাছ শুকানোর কাজ শুরু হয়। মে মাসের ১৫ তারিখের দিকে শেষ হবে মাছ শুকানোর কার্যক্রম।

তিনি জানান, উৎপাদনের মৌসুমে নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করে। প্রতিটি নারী শ্রমিকের মজুরি সাড়ে ৩০০ টাকা আর প্রতি পুরুষ শ্রমিকের মজুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই শুঁটকি উৎপাদনের মাধ্যমে পুরো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তারা।

নাজিরারটেক শুঁটকি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রাথমিক হিসেবে গড়ে প্রায় ১০০ মাছ ধরার ট্রলার থেকে ৩ থেকে ৪ হাজার টন মাছ এই শুঁটকি শুকানোর চরে এসে খালাস করে। তার মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকারের মাছের প্রতি টনের গড় মূল্য ৪ হাজার টাকা। সে হিসাবে ৪ হাজার টন মাছের মূল্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তাদের নির্ধারিত বছরের অর্ধেক মৌসুমের মাছের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৯৬ কোটি টাকা।

সরেজমিন নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল ঘুরে দেখা যায়, শত শত শ্রমিক শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। একেকজন একেক উৎপাদন কার্যক্রমের সঙ্গে রয়েছে। নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে উৎপাদিত শুঁটকির মধ্যে রয়েছে, লইট্যা, ছুরি, পাছকাড়া, চিংড়ী, ফাসিয়া, রূপচাঁদা, কামিলা, লাউক্ষ্যা, করতি, ছুরি, রূপসা, সুরমা, তাইল্যা, পোঁপাসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

নাজিরারটেক শুঁটকি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ কোম্পানি বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে প্রতিদিন ১০-১৫ এবং মৌসুমের শেষের দিকে ৮-১০টি ট্রাক অর্থাৎ ৮০ থেকে ৯০ টন শুঁটকি মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে এসব শুঁটকি।

কক্সবাজার পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড নাজিরারটেক শুঁটকিপল্লী এলাকার কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। ধীরে ধীরে কাঁচা সড়ক থেকে ইটের সড়কে কিছু অংশ যাতায়ত উপযোগী করা গেলেও সম্পূর্ণ এখনো উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি।