শিরোনাম :
Logo ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর Logo ইবিতে ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo জবির স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আয় ১২ কোটি টাকা Logo বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার নির্বাচন সম্পন্ন Logo আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo সরকার উদ্যোগ না নিলে আমরা বসে থাকব না: নাহিদ ইসলাম Logo সার্কের বিকল্প জোট গঠনে কাজ করছে চীন-পাকিস্তান, রয়েছে বাংলাদেশও Logo পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্টের কর্মসূচি ঘিরে হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নতুন নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তারুণ্য’ Logo সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলা, আহত-৩০

রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের চক্র জড়িত : সিআইডি

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:১৯ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৮০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভেতরের একটি চক্র রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত বলে সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।

সিআইডি পুলিশের তদন্ত দলের প্রধান শাহ আলম বিবিসিকে বলেছেন, এই চক্রটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা অরক্ষিত করে হ্যাকিংয়ে বা অর্থ চুরিতে সহায়তা করেছে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা এই চক্রটিকে চিহ্নিত করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশে মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। তাদের তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।

তারা এখন নিশ্চিত হয়েছেন যে, অর্থ চুরির ঘটনায় বিদেশী চক্রকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা সহায়তা করেছে।

সিআইডি পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং তদন্ত দলের প্রধান শাহ আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভেতরের চক্রটি রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে দুর্বল করেছে। এর ফলে হ্যাকাররা বা বিদেশী চক্র সহজেই অর্থ চুরি করতে পেরেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তাদের এবং মূল হোতা বা বিদেশী চক্রটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই সুরক্ষিত ছিল। সেই সিস্টেমকে ধাপে ধাপে দুর্বল বা অরক্ষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা এবং দেশের বাইরের কিছু ঠিকাদার বা বিদেশীরা মিলে এই কাজ করেছে। আর এই অরক্ষিত করার ফলেই হ্যাকিং করা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা যারা সিস্টেম বা বিষয়গুলো জানেন বা বোঝেন, তারাই বিদেশীদের প্ররোচনায় সিস্টেমকে অরক্ষিত করেছেন। এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমরা পেয়েছি।’

তবে সিআইডি পুলিশ এই মুহূর্তে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি নয়।

সিআইডির কর্মকর্তা শাহ আলম বলেছেন, রিজার্ভ চুরির পিছনে পরিকল্পিত তিনটি ধাপ ছিল। প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল বা অরক্ষিত করতে হয়েছে। এবং সেটা ব্যাঙ্কেরই সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা করেছেন। তিনটি ধাপের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারেই সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্ত দল পেয়েছে বলে শাহ আলম জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘প্রথম ধাপে মূল হোতারা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে রিজার্ভের নিরাপত্তার সিস্টেমকে দুর্বল করে হ্যাকিংয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। দ্বিতীয় ধাপে বিদেশীরা হ্যাকিং করেছে। আর তৃতীয় বা শেষ ধাপে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ব্যাঙ্ক বা প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে তারা টাকাটা চুরি করে নিয়ে গেছে।’

অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার সরকারি তদন্ত কমিটির প্রধান এবং সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের পাঁচজন কর্মকর্তার অবহেলা এবং অসতর্কতার প্রমাণ সরকারি কমিটির তদন্তে পাওয়া গেছে। তবে সরকারি কমিটি মে মাসে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর কয়েক দফায় সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, দেশের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না।

তবে, রিজার্ভ চুরির বড় অংক ফিলিপিন থেকে উদ্ধারের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সম্প্রতি দেশটিতে সফরে গিয়েছিলেন।

আনিসুল হক বলেছেন, অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তদন্তেরে এসব অগ্রগতি সম্পর্কে এখন ফিলিপিনকে জানানো হবে। কারণ তার সফরের সময় ফিলিপিন সরকার বাংলাদেশের তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে।

তিনি বলেছেন, তারা শুধু তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে। সেটা জানাতে সমস্যা নাই এবং সেটুকুই বাংলাদেশ জানাবে।
রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর গভর্নর আতিউর রহমানকে বিদায় নিতে হয়েছে। কিন্তু কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তাদের কেউ জড়িত থাকতে পারে, এটা তারা আগে ধারণা করতে পারেন নি। এখন তদন্ত শেষ হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি মনে করেন।

ট্যাগস :

ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর

রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের চক্র জড়িত : সিআইডি

আপডেট সময় : ০৫:১৯:১৯ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভেতরের একটি চক্র রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত বলে সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।

সিআইডি পুলিশের তদন্ত দলের প্রধান শাহ আলম বিবিসিকে বলেছেন, এই চক্রটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা অরক্ষিত করে হ্যাকিংয়ে বা অর্থ চুরিতে সহায়তা করেছে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা এই চক্রটিকে চিহ্নিত করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশে মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। তাদের তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।

তারা এখন নিশ্চিত হয়েছেন যে, অর্থ চুরির ঘটনায় বিদেশী চক্রকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা সহায়তা করেছে।

সিআইডি পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং তদন্ত দলের প্রধান শাহ আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভেতরের চক্রটি রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে দুর্বল করেছে। এর ফলে হ্যাকাররা বা বিদেশী চক্র সহজেই অর্থ চুরি করতে পেরেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তাদের এবং মূল হোতা বা বিদেশী চক্রটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই সুরক্ষিত ছিল। সেই সিস্টেমকে ধাপে ধাপে দুর্বল বা অরক্ষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা এবং দেশের বাইরের কিছু ঠিকাদার বা বিদেশীরা মিলে এই কাজ করেছে। আর এই অরক্ষিত করার ফলেই হ্যাকিং করা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তা যারা সিস্টেম বা বিষয়গুলো জানেন বা বোঝেন, তারাই বিদেশীদের প্ররোচনায় সিস্টেমকে অরক্ষিত করেছেন। এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমরা পেয়েছি।’

তবে সিআইডি পুলিশ এই মুহূর্তে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি নয়।

সিআইডির কর্মকর্তা শাহ আলম বলেছেন, রিজার্ভ চুরির পিছনে পরিকল্পিত তিনটি ধাপ ছিল। প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের রিজার্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল বা অরক্ষিত করতে হয়েছে। এবং সেটা ব্যাঙ্কেরই সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা করেছেন। তিনটি ধাপের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারেই সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্ত দল পেয়েছে বলে শাহ আলম জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘প্রথম ধাপে মূল হোতারা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে রিজার্ভের নিরাপত্তার সিস্টেমকে দুর্বল করে হ্যাকিংয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। দ্বিতীয় ধাপে বিদেশীরা হ্যাকিং করেছে। আর তৃতীয় বা শেষ ধাপে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ব্যাঙ্ক বা প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে তারা টাকাটা চুরি করে নিয়ে গেছে।’

অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার সরকারি তদন্ত কমিটির প্রধান এবং সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের পাঁচজন কর্মকর্তার অবহেলা এবং অসতর্কতার প্রমাণ সরকারি কমিটির তদন্তে পাওয়া গেছে। তবে সরকারি কমিটি মে মাসে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর কয়েক দফায় সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, দেশের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না।

তবে, রিজার্ভ চুরির বড় অংক ফিলিপিন থেকে উদ্ধারের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সম্প্রতি দেশটিতে সফরে গিয়েছিলেন।

আনিসুল হক বলেছেন, অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তদন্তেরে এসব অগ্রগতি সম্পর্কে এখন ফিলিপিনকে জানানো হবে। কারণ তার সফরের সময় ফিলিপিন সরকার বাংলাদেশের তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে।

তিনি বলেছেন, তারা শুধু তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে। সেটা জানাতে সমস্যা নাই এবং সেটুকুই বাংলাদেশ জানাবে।
রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর গভর্নর আতিউর রহমানকে বিদায় নিতে হয়েছে। কিন্তু কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তাদের কেউ জড়িত থাকতে পারে, এটা তারা আগে ধারণা করতে পারেন নি। এখন তদন্ত শেষ হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি মনে করেন।