‘বয়স কেবল একটি সংখ্যা’এই বাক্যটির জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের মুহাম্মদ কাইসার হামিদ (৫১) ও মোছাম্মৎ রোকেয়া আক্তার (৪৪) দম্পতি। দুজনেই চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সমান জিপিএ তথা ৪ দশমিক ১১ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলে উত্তীর্ণ হওয়ার খবর পেয়ে যেন আনন্দের বন্যা বইছে এই দম্পতির মাঝে। বাবা-মায়ের এমন সাফল্যে খুশির জোয়ারে ভাসছে ছেলে-মেয়েরাও।
দম্পতির শিক্ষা জীবনের এই নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে। ওই মাদ্রাসা থেকে তারা দুজন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর অধীনে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ কেন্দ্রে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এ সফলতা অর্জন করেছেন।
পড়া-লেখার মাঝপথে থেমে যাওয়া এ দম্পতির জীবনে এসএসসি পরীক্ষা যেন দ্বিতীয় সূচনা। তাদের এই যাত্রা শুধু তাদের নিজেদের জন্যই নয়, বরং সমাজের অনেক মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে ‘শিখতে কোনো বয়স লাগেনা।’ এই দম্পতি এখন কিশোরগঞ্জ জেলার পরিচিত মুখ।
কাইসার হামিদের বাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার পশ্চিম গোবরিয়া গ্রামে। মুছাম্মৎ রোকেয়া আক্তার জেলার কটিয়াদী উপজেলার দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের মেয়ে। তারা দুজনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন আজ থেকে ৩১ বছর আগে।
পারিবারের অন্যান্য সদস্যরা উচ্চ শিক্ষিত হলেও তারা দুজন মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ না করায় তাদের মনে দুঃখ ছিল। অদম্য ইচ্ছা আর মানসিক শক্তির জোরে এবার তারা সেই দুঃখ ঘুচিয়েছেন।