চাঁদপুরের কচুয়ার সফিবাদ গ্রামে গৃহবধূ শাহনাজ বেগম হত্যার ১৪ বছর পর ন্যায় বিচার চেয়ে ৩ জনকে অভিযুক্ত করে চাঁদপুরের মোকাম বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধূ শাহনাজ বেগমের ভাই দাউদকান্দি উপজেলার পিপিয়াকান্দি গ্রামের মো. শাহ আলমের পুত্র মোহাম্মদ মনির বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। যার সি.আর মামলা নং ৪৬১/২০২৫। মামলায় কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের মিয়াজী বাড়ির নুর মোহাম্মদ মিয়াজীর পুত্র মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মিয়াজী (৩৭), তার ভাই আলাউদ্দিন মিয়াজী (৪০) ও তাদের মা আয়েশা বেগম (৬০)কে আসামী করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে ও স্থানীয় ভাবে জানা গেছে, দাউদকান্দি উপজেলার পিপিয়াকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ শাহ আলমের মেয়ে শাহনাজ বেগমের সাথে ১৯৯৯ সালে কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের মনজিল হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের গৃহে নাজনীন আক্তার ও ইয়াছমিন আক্তার নামের ২টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এর মধ্যে নাজনীন আক্তারের বর্তমানে বয়স ২৪ ও ইয়াছমিনের বয়স ২১ বছর। মনজিল হোসেন আগ থেকেই সৌদি আরবে ছিলেন। এরই ফাঁকে একই বাড়ির ১নং বিবাদী নাসির উদ্দিন মিয়াজী ভিকটিম শাহনাজ বেগমের সাথে বিভিন্নভাবে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এতে ভিকটিম প্রত্যাখ্যান করলে নাসির উদ্দিন মিয়াজী বেপরোয়া হয়ে উঠে। এক সময়ে ভিকটিমের স্বামী মনজিল মিয়াজী সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে এসে সুখে শান্তিতে তাদের সংসার জীবন চলছিল।
পরবর্তীতে নাসির উদ্দিন মিয়াজী ভিকটিমের স্বামী মনজিল হোসেনের উপর ক্ষুব্ধ হতে থাকেন এবং ভিকটিমকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ও প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে ভিকটিমের স্বামী মনজিল হোসেনকে জরুরি কথা আছে বলে বাড়ির পাশে ধান চিড়ানো রাইস মেইলে নিয়ে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে দেন। যার ফলে মনজিল মিয়াজী জ্ঞান হাড়িয়ে ফেললে নাসির উদ্দিন মিয়াজী সু-কৌশলে শাহনাজ বেগমের গৃহে গিয়ে জোড় পূর্বক তাকে ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে নাসির উদ্দিন মিয়াজী তার ভাই আলাউদ্দীন মিয়াজী ও তার মায়ের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহায়তায় তাকে গলা চিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অপমৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার চালায়। নাছির উদ্দীন মিয়াজী তার ভাই এবং মায়ের সহায়তায় পূনরায় রাইসমিলে ঘুমন্ত মনজিলকে নেশা জাতীয় চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে সুকৌশলে লাশের পাশে রেখে ভিকটিমের বাবা ও বড় বোনকে প্রথমে অসুস্থর কথা বলেন কিন্তুু পরোক্ষণে মারা গেছেন বলে জানান। শুধু তাই নয়,নাছির মিয়াজী বাড়ির সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে সে আতœগোপনে চলে যান।
নাছির উদ্দীন মিয়াজী পূর্বের মামলার অন্যতম সাক্ষী হয়েও থানা এবং আদালতে ভয়ে উপস্থিত না হয়ে পালিয়ে বেড়ান। ওই সময়ে বিবাদীগন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ও ভুল বুঝিয়ে গৃহবধূ শাহনাজের বাবা মো.শাহ আলমকে প্ররোচনায় ফেলে মনজিল মিয়াজীর বিরুদ্ধে মামলা করে এবং মনজিল মিয়াজীকে সুকৌশলে মামলা থেকে দুরে সরিয়ে রেখে তার জমিন,বাড়ির জায়গা ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে মনজিলকে বাধ্য করেন এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়াতে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার জানতে পারেন ওই ঘটনার সাথে শাহনাজ বেগমের স্বামী মনজিল জড়িত নয় এবং প্রাথমিকভাবে অনেক প্রমানও পান।
মামলার বাদী মোহাম্মদ মনির জানান, আমার বোনকে প্রায় ১৪ বছর আগে বিবাদী নাসির উদ্দিন মিয়াজী সুকৌশলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অপমৃত্যু বলে অপপ্রচার চালায়। আমার বিশ্বাস আমিসহ আমার পরিবার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আমরা ন্যায় বিচার পাবো। ইনশাআল্লাহ্