আপনি জাপানে ঘুরতে গেছেন, হোটেলে উঠবেন এজন্য গেলেন হোটেলের রিসিপশনে, গিয়েই চমকে গেলেন, সেখানে নেই কোন মানুষ বসে আছেন আস্ত এক রোবট। যে মানুষের মতই ট্রিট করছে আপনাকে। রুমৃ বুকিং করার পর রুমে যাবেন হাতে ভারি মালপত্র, হতাশ হবার কিছু নেই এগুলোও নিয়ে যাওয়ার জন্য আছে মানুষ আকৃতির স্পেশাল রোবট।
জাপানের কিছু কিছু আবিস্কার আর ঘটনাপ্রবাহ হার মানায় কল্পবিজ্ঞানকেও। জাপানের নাগাসাকিতে অবস্থিত একটি হোটেল সম্পূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে রোবট দিয়ে! মানুষের উপস্থিতি ছাড়াই অতিথিদের স্বাগত জানানো থেকে শুরু করে রুম পরিষ্কার, খাবার সরবরাহ সবই করছে যন্ত্রচালিত কর্মীরা। হোটেলটির নাম “হেনা হোটেল” যার বাংলা অর্থ “অদ্ভুত হোটেল”। প্রযুক্তির দিক থেকে এটি যেনো ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচন করেছে।
এই হোটেলের সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, রিসেপশন ডেস্কে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানায় একটি ডাইনোসার আকৃতির রোবট! অতিথিরা রোবটের সাথে কথা বলেই চেক-ইন সম্পন্ন করেন। মালপত্র রুমে পৌঁছে দেয় স্বয়ংক্রিয় পোর্টার রোবট, এবং কক্ষ পরিষ্কারে নিয়োজিত রয়েছে বিশেষ ক্লিনিং রোবট।
হোটেলের প্রতিটি রুমে রয়েছে একটি এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট রোবট, যা আলো নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ঘড়ির অ্যালার্ম দেওয়া, আবহাওয়ার তথ্য জানানোসহ নানা সেবা দিতে সক্ষম। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রুম রিজার্ভ, খাবার অর্ডার এমনকি দরজা খোলার ব্যবস্থাও করা যায় এসব রোবটের মাধ্যমেই।
চীনা গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, “হেনা হোটেল” চালু হয়েছিল ২০১৫ সালে, মূলত কর্মী সংকট ও খরচ কমানোর লক্ষ্যেই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এখন প্রযুক্তি নির্ভর রোবট দারা চালিত হচ্ছে। এটি প্রযুক্তি-ভিত্তিক পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে বর্তমানে। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, মানুষের পরিবর্তে রোবট ব্যবহারে যেমন খরচ কমেছে, তেমনি বেড়েছে কার্যক্ষমতাও।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “হেনা হোটেল” ভবিষ্যতের আতিথেয়তা শিল্পের এক ঝলক মাত্র। প্রযুক্তির প্রয়োগে মানুষের জীবনযাত্রা যেভাবে বদলে যাচ্ছে, তাতে এমন রোবট-চালিত হোটেল হয়তো একসময় হয়ে উঠবে খুবই সাধারণ দৃশ্য।