জেলায় আজ ব্যবসায়ী মো. ইউছুপ ভূঁইয়া টিপু (২৮) হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন এবং অপর ছয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ১০ বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মরকোটা গ্রামের মৃত ডা. আবুল হাসেমের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে জামশেদ (২১) এবং একই উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়া গ্রামের শহীদুল ইসলাম ওরফে মাসুদ ওরফে মাসুম (৩২)।
দশবছর কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন ফেনীর সোনাগাজী মো. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী (৩২), মো. আলাউদ্দিন ওরফে তোতা (২৮), কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের মো. জামাল হোসেন মানিক (৩১), মো. একরামুল হক মিলন (৪১), নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জের ইব্রাহিম ওরফে বড় মিয়া (৪৫), চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাইয়ের মো. শাহাবুদ্দিন (৩৮)। সব আসামিই পলাতক রয়েছেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট মো. ইফতেখার হোসেন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২০০৯ সালের ১৬ মে দিবাগত রাত ২টার দিকে জুতা ব্যবসায়ী মো. ইউছুপ ভূঁইয়া টিপু ঘরের বাইরে গেলে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা ব্যক্তিরা তাকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ইউছুপ ভূঁইয়া টিপুর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যবসায়ী টিপুকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতমো. ইউছুপ ভূঁইয়া টিপুর পিতা মো. আলী জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে সিআইডি ও থানা পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়। চারজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি ৩৯৬ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
২০১৩ সালের ১৮ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী মামলার রায় ঘোষনা করেন।
মামলার ১৭ আসামির মধ্যে বিচার চলাকালে তিনজন ইব্রাহিম, তাজু ও আবদুর রাজ্জাক মারা যান। অপর ছয় আসামি আবুল হাসেম ভূঁইয়া ওরফে ভুটু, মো. দুলাল, ফারুক হোসেন, ইলিয়াস ভূঁইয়া, আবুল কাশেম ও সাইফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।