শিরোনাম :
Logo জরিমানার কবলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ Logo কচুয়ায় প্রবাসী নেতা কামরুজ্জামানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সংবর্ধনা ও জার্সি বিতরণ Logo সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যু: উত্তাল ক্যাম্পাস, উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হেল্থ অ্যান্ড ফুড সেফটি অ্যাসোসিয়েশন এর নেতৃত্বে আরিফুল ও রাফি Logo ইবিতে তারুণ্যে’র ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়: নাহিদ Logo ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে: আখতার Logo ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮ তীর্থযাত্রী নিহত Logo গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় Logo বেইজিংয়ে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ৩০ জনের মৃত্যু

সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যু: উত্তাল ক্যাম্পাস, উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

oppo_0

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন এলাকা। পরবর্তীতে উপাচার্যের আশ্বাসে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতৃবৃন্দ। পরে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী রবিবারের মধ্যে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘সাজিদ হত্যার বিচার চাই’, ‘খুনিদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কণ্ঠে আবার লাগাও জোর, প্রশাসনের কবর খোঁড়’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘আমাদের সংগ্রাম চলছেই চলবে’— এমন স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। যদি প্রশাসন ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেব, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অচল করে দেব।”

আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝি বলেন, “উপাচার্য স্যার বিদেশ থেকে ফিরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আজ তিনি আমাকে ডেকে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রধানকেও তিনি ডেকেছেন।”

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, “তদন্তের কাজ ইতোমধ্যেই অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা গঠনের পরপরই কাজ শুরু করেছি। রবিবারের মধ্যেই আমরা রিপোর্ট জমা দিতে পারব বলে আশা করছি। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু এখন বলা ঠিক হবে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “সাজিদের মৃত্যুতে আমিও ব্যথিত। তোমরা যেমন বলছ, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’— আমিও সেই দাবি সমর্থন করি। প্রশাসন কোনোভাবেই এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চায় না।

যদি আমাদের তদন্ত কমিটি প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে পিবিআই বা আরও উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে। আমরা অবশ্যই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করব।”

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, “তোমরা নিশ্চিত থাকতে পারো— প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আমরা কিছুই এড়িয়ে যাচ্ছি না এবং ভবিষ্যতেও যাব না।”

উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না তার সহপাঠী, বন্ধু এবং স্বজনেরা। ফলে মৃত্যু ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জরিমানার কবলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যু: উত্তাল ক্যাম্পাস, উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:২৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন এলাকা। পরবর্তীতে উপাচার্যের আশ্বাসে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতৃবৃন্দ। পরে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী রবিবারের মধ্যে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘সাজিদ হত্যার বিচার চাই’, ‘খুনিদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কণ্ঠে আবার লাগাও জোর, প্রশাসনের কবর খোঁড়’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘আমাদের সংগ্রাম চলছেই চলবে’— এমন স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। যদি প্রশাসন ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেব, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অচল করে দেব।”

আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন মিঝি বলেন, “উপাচার্য স্যার বিদেশ থেকে ফিরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আজ তিনি আমাকে ডেকে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রধানকেও তিনি ডেকেছেন।”

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, “তদন্তের কাজ ইতোমধ্যেই অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা গঠনের পরপরই কাজ শুরু করেছি। রবিবারের মধ্যেই আমরা রিপোর্ট জমা দিতে পারব বলে আশা করছি। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু এখন বলা ঠিক হবে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “সাজিদের মৃত্যুতে আমিও ব্যথিত। তোমরা যেমন বলছ, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’— আমিও সেই দাবি সমর্থন করি। প্রশাসন কোনোভাবেই এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চায় না।

যদি আমাদের তদন্ত কমিটি প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে পিবিআই বা আরও উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে। আমরা অবশ্যই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করব।”

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, “তোমরা নিশ্চিত থাকতে পারো— প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আমরা কিছুই এড়িয়ে যাচ্ছি না এবং ভবিষ্যতেও যাব না।”

উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না তার সহপাঠী, বন্ধু এবং স্বজনেরা। ফলে মৃত্যু ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা।