শিরোনাম :
ছোটগল্প

“ফেব্রুয়ারি-আমাদের অস্তিত্ব “

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭২৬ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

ফেব্রুয়ারী মাস!

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে লাল রক্তিম কৃষ্ণচূড়া,  দেয়ালে দেয়ালে একুশে ফেব্রুয়ারির পোস্টার, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সারা দেশ জুড়েই মাতৃভাষার জন্য এক অন্যরকম আবেগ।

স্বাধীন , শাকিল,  ইয়াকুব আর  তাকরীম —চার বন্ধু ভাষা আন্দোলন ও একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করছে। নাটকের নাম দিয়েছে “ভাষার জন্য”! তারা চায়, তরুণ প্রজন্ম যেন শুধু বইয়ের পাতায় নয়, হৃদয় দিয়েও ভাষার গুরুত্ব বুঝতে পারে।

কিন্তু সমস্যা বাঁধল অন্য জায়গায়। অনুশীলনের  সময় তারা লক্ষ্য করল, অনেকেই বাংলা সংলাপ বলার সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে গিয়ে ইংরেজির দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে।

ইয়াকুব বলল, “আমরা কি সত্যি ভাষার প্রতি দায়িত্বশীল? যদি হই, তবে কেন বাংলায় স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারছি না?”

শাকিল  মাথা চুলকে বলল, “সমস্যা আসলে আমাদের অভ্যাসে। আমরা ছোটবেলা থেকে ইংরেজির প্রতি এত ঝুঁকে গেছি যে বাংলা ঠিকমতো চর্চা করিনি। অথচ আমাদের পূর্বপুরুষরা এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন!”

তাকরীম একটু ভেবে বলল, “তাহলে আমাদের নাটক শুধু নাটকই হবে না, এটা হবে একটা প্রচেষ্টা—আমাদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা জাগানোর!”

স্বাধীন  উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, “তাহলে ঠিক আছে! আমরা শুধু নাটক করব না, আমরা ক্যাম্পাসে বাংলা ভাষার প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ক্যাম্পেইন চালাবো। সবাইকে বলব বাংলা ভাষার সঠিক চর্চা করতে, মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা জানাতে!”

২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারের সামনে তারা নাটকটি পরিবেশন করল। উপস্থিত দর্শকরা যেন নতুনভাবে ভাষার গুরুত্ব অনুভব করল। নাটকের শেষ সংলাপ ছিল—”ভাষা শুধু কথা বলার মাধ্যম নয়, ভাষা আমাদের পরিচয়, আমাদের অস্তিত্ব। একে ভুলে গেলে, নিজেদেরই হারিয়ে ফেলব।”

শ্রোতাদের চোখে এক ধরনের আলোর ঝলক দেখা গেল। তরুণদের এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মের মনে মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার নতুন ভোরের সূচনা করল।

 

লেখক :তাহমিনা আক্তার, আইন বিভাগ (১৭ তম ব্যাচ), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শহিদ আবু সাইদকে নিয়ে কটুক্তি করায় বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছোটগল্প

“ফেব্রুয়ারি-আমাদের অস্তিত্ব “

আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফেব্রুয়ারী মাস!

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে লাল রক্তিম কৃষ্ণচূড়া,  দেয়ালে দেয়ালে একুশে ফেব্রুয়ারির পোস্টার, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সারা দেশ জুড়েই মাতৃভাষার জন্য এক অন্যরকম আবেগ।

স্বাধীন , শাকিল,  ইয়াকুব আর  তাকরীম —চার বন্ধু ভাষা আন্দোলন ও একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করছে। নাটকের নাম দিয়েছে “ভাষার জন্য”! তারা চায়, তরুণ প্রজন্ম যেন শুধু বইয়ের পাতায় নয়, হৃদয় দিয়েও ভাষার গুরুত্ব বুঝতে পারে।

কিন্তু সমস্যা বাঁধল অন্য জায়গায়। অনুশীলনের  সময় তারা লক্ষ্য করল, অনেকেই বাংলা সংলাপ বলার সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে গিয়ে ইংরেজির দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে।

ইয়াকুব বলল, “আমরা কি সত্যি ভাষার প্রতি দায়িত্বশীল? যদি হই, তবে কেন বাংলায় স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারছি না?”

শাকিল  মাথা চুলকে বলল, “সমস্যা আসলে আমাদের অভ্যাসে। আমরা ছোটবেলা থেকে ইংরেজির প্রতি এত ঝুঁকে গেছি যে বাংলা ঠিকমতো চর্চা করিনি। অথচ আমাদের পূর্বপুরুষরা এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন!”

তাকরীম একটু ভেবে বলল, “তাহলে আমাদের নাটক শুধু নাটকই হবে না, এটা হবে একটা প্রচেষ্টা—আমাদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা জাগানোর!”

স্বাধীন  উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, “তাহলে ঠিক আছে! আমরা শুধু নাটক করব না, আমরা ক্যাম্পাসে বাংলা ভাষার প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ক্যাম্পেইন চালাবো। সবাইকে বলব বাংলা ভাষার সঠিক চর্চা করতে, মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা জানাতে!”

২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারের সামনে তারা নাটকটি পরিবেশন করল। উপস্থিত দর্শকরা যেন নতুনভাবে ভাষার গুরুত্ব অনুভব করল। নাটকের শেষ সংলাপ ছিল—”ভাষা শুধু কথা বলার মাধ্যম নয়, ভাষা আমাদের পরিচয়, আমাদের অস্তিত্ব। একে ভুলে গেলে, নিজেদেরই হারিয়ে ফেলব।”

শ্রোতাদের চোখে এক ধরনের আলোর ঝলক দেখা গেল। তরুণদের এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মের মনে মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার নতুন ভোরের সূচনা করল।

 

লেখক :তাহমিনা আক্তার, আইন বিভাগ (১৭ তম ব্যাচ), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।