বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কসহ নগরীর গুলশান ও বনানীর সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপি। এর আগে গতকাল সোমবার (৫ মে) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনাটি দেওয়া হয়।
গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (আজ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিজ বাসভবনে (গুলশান) আসবেন। এ উপলক্ষে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত রাস্তায় তাকে অভ্যর্থনা জানাতে অতিরিক্ত জনসমাগম হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
নির্দেশনাগুলো হলো—
১। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জনসাধারণকে গুলশান/বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান না করে ফুটপাতে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সংশ্লিষ্ট দলের নেতৃবৃন্দকে আগত জনসাধারণকে রাস্তা হতে সরিয়ে ফুটপাতে অবস্থান করানোর জন্য প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।a4
২। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান/বনানী হতে উত্তরা পর্যন্ত সড়ক যথাসম্ভব পরিহার করে বিকল্প রাস্তা হিসেবে নিম্নোক্ত রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো :
(ক) আব্দুল্লাহপুর কামারপাড়া ধউর ব্রিজ-পঞ্চবটী-মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে গাবতলী হয়ে চলাচল করা।
(খ) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা।
(গ) উত্তরা ও মিরপুরে বসবাসকারী সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে হাউজ বিল্ডিং- জমজম টাওয়ার-১২নং সেক্টর খালপাড়-মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশন- উত্তরা সেন্টার স্টেশন-মিরপুর ডিওএইচএস হয়ে চলাচল এবং উত্তরা সেন্টার স্টেশন হতে ১৮ নং সেক্টর-পঞ্চবটী হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করতে পারেন।
(ঘ) গুলশান, বাড্ডা এবং প্রগতি সরণী এলাকার যাত্রী সাধারণগণ কাকলী, গুলশান-২, কামাল আতাতুর্ক সড়কের পরিবর্তে গুলশান-১/পুলিশ প্লাজা-আমতলী-মহাখালী হয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন র্যাম্প ব্যবহার করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এয়ারপোর্ট/উত্তরা যেতে পারেন।
(ঙ) মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলগামী যানবাহনসমূহ মিরপুর-গাবতলী রোড হয়ে চলাচল করতে পারেন।
(চ) এয়ারপোর্ট/৩০০ ফিট রাস্তা থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনসমূহ বনানী/কাকলী র্যাম্পের পরিবর্তে মহাখালী র্যাম্প/এফডিসি র্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন।
(৩) ডিএমপি’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে ঢাকা সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তা (জিয়া কলোনি/জাহাঙ্গীর গেইট/সৈনিক ক্লাব/স্টাফ রোড) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শুধুমাত্র হালকা যানবাহন গমনাগমনের অনুমতি প্রদান করেছেন। সুতরাং সেনানিবাসের রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন।
(৪) ডিএমপি’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ সিএনজি চালিত অটো রিকশা ও মোটরসাইকেল নির্ধারিত টোল পরিশোধপূর্বক সর্বোচ্চ ৪০ কি.মি./ঘন্টা গতিসীমা মেনে ও এক্সপ্রেসওয়ের বাম পাশের সেইফ লেন ব্যবহার করে সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করেছেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ওভারস্পিড ও লেন পরিবর্তন করলে আইন প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
(৫) যাত্রীসাধারণকে বিকল্প হিসেবে ঢাকা-জয়দেবপুর চলাচল করা ট্রেনসমূহ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ডিএমপি’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে সম্মানিত যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলওয়ের সকল আন্তঃনগর ট্রেন মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী, এয়ারপোর্ট এবং তেজগাঁও স্টেশনে দুই মিনিটের জন্য থেমে যাত্রী বহনের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে মঙ্গলবার সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর-টঙ্গী রুটে অতিরিক্ত একটি শাটল ট্রেন পরিচালনা করবে।
(৬) সম্মানিত হজযাত্রীসহ বিদেশগামী যাত্রী সাধারণকে এয়ারপোর্টে গমানগমনের ক্ষেত্রে এবং ঐ এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থীগণকে যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসা হতে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৭) মিরপুর ও উত্তরাবাসীকে বিকল্প হিসেবে মেট্রোরেল ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৮) সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিগণকে কোন ব্যাগ, লাঠি ইত্যাদি বহন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৯) অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিগণ কোনো যানবাহন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে যুক্ত হতে পারবেন না।
(১০) অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিগণ মোটরসাইকেল নিয়ে কোনো ক্রমেই গুলশান/বনানী হতে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান করতে পারবেন না বা মোটরসাইকেলযোগে জনতার মধ্য দিয়ে চলতে পারবেন না। তবে এ রাস্তা দিয়ে (জনসমাগম না হলে) সাধারণ যানের সাথে মোটরসাইকেল চলতে পারবে।