নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামে অতিবর্ষণে অন্তহীন ভোগান্তির কবলে পড়ছে নগরবাসী। বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নগরের নিম্নাঞ্চলে। পানি জমে গেছে খান-খন্দের সড়ক, গলি-উপগলিতে। এছাড়া উন্নয়ন কাজ ও নালানর্দমার মাটিতে সড়কগুলো কাঁদায় একাকার হয়ে গেছে। ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন চলাচল। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
তবে ঈদ উৎসব সামনে থাকায় ভোগান্তির ধরণটা দ্বিগুণ হয়েছে। ঈদ কেন্দ্রিক কেনাকাটার যে ধুম পড়ে- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রবল বর্ষণে তা দারুণভাবে ভাটা পড়েছে বলে বিক্রেতারা। গতকাল সোমবারও নগরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ার কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গতকাল বিকাল তিনটা থেকে মুষলধারে বৃষ্টিও হয়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, চট্টগ্রামের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণও হতে পারে। তাছাড়া আগামী কয়েকদিনও এরকম বৃষ্টি হতে পারে।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ে। তবে দুপুরের পর থেকেই শুরু হয় ভারী বর্ষণ। তবে বিকালে বৃষ্টির মাত্রাটা আরো বেড়ে যায়। এ সময় পুরো আকাশজুড়ে নেমে আসে কালো মেঘের অন্ধকার। সঙ্গে ছিল বজ্রপাত ও দমকা হাওয়া। অনেক যানবাহনকে গাড়ি লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতেও দেখা যায়। এ সময় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় মার্কেটগামী ক্রেতাদের।
অন্যদিকে, প্রবল ও গুড়ি গুড়ি বর্ষণের ফলে সড়কগুলো হয়ে উঠে নরকে। উন্নয়ন কাজ, পাইলিংয়ের মাটি, নালা-নর্দমা থেকে তোলে রাখা মাটি সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এতে পুরো সড়ক জুড়ে কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে যায়। দুই নং গেইট থেকে বায়েজিদ সড়কের অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। ফ্লাইওভারের নির্মাণাধীন র্যামের কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাও দায়।
নগরের বহদ্দার হাট থেকে মোহরা পর্যন্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল করছে ‘নৌকা স্টাইলে’ হেলিয়ে দুলিয়ে। কোতোয়ালি থেকে নতুন ব্রিজ মোড় পর্যন্ত সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রিক্সা, অটোরিক্সা ও অটোটোম্পা চলাচল করা চরম দুস্কর। পক্ষান্তরে, ভারী বর্ষণে নগরের অনেক নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়। এ সব এলাকার মানুষ গত ২০ দিনে অন্তত তিনবার জলাবদ্ধতার শিকার হন। একবারের ক্ষত শুকাতে না শুকাতে আরেকবার জলাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। নগরের ষোলশহর দুই নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ, ছোটপুল, বড়পুল, হালিশহর, রামপুরা, বাকলিয়া, চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে অতিরিক্ত জনবল দিয়ে কাজ চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, ঈদের আগেই ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার করতে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজে একটু বেগ পেতে হচ্ছে।