শিরোনাম :
Logo উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের Logo পরীক্ষায় অসদুপায়ের দায়ে নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার Logo রমজানের লম্বা ছুটিতে ভোগান্তিতে পরেন ইবির ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা Logo উপদেষ্টা ফারুকীকে নিয়ে যা বললেন প্রিন্স মাহমুদ Logo রিজার্ভ ডে থাকছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে Logo চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ১৮ মাসে মাদক নির্মূলে  অভিযান Logo পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ডাকাতি করে পালানোর সময় আন্তজেলা ডাকাত চক্রের ৫ সদস্য আটক। Logo হঠাৎ অসুস্থ মির্জা ফখরুল, হাসপাতালে ভর্তি Logo ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেনশনের ৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট’ Logo আগামী নির্বাচনে যে কোন মূল্যে ইসলামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম চাই: মামুনুল হক

ঐতিহ্যের সাক্ষী শেরপুরের মাইসাহেবা মসজিদ

ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা গারো পাহারের পাদদেশে অবস্থিত শেরপুর জেলা। জেলায় রয়েছে নানান নিদর্শন। এর মধ্যে ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আড়াইশো বছরের পুরনো মাইসাহেবা জামে মসজিদ।

শেরপুর জেলা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরপুর সরকারি কলেজ। এর দক্ষিণ পাশে একটি নান্দনিক স্থাপনা; নাম মাইসাহেবা জামে মসজিদ। ঐতিহাসিক মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটা গল্প প্রচলিত। বলা হয়, একদিন শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার জমিদারকে দাওয়াত করেন। দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান, যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। আর সে সময় এ স্থানে তিনআনা জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরের পাশে একটা আলাদা ঘর ছিল, জমিদার ঘরের জায়গাটা মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং এ জন্য হাতি দিয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু হাতি যখনই ঘরটির কাছে আসে তখনই হাতিটি মাথা নুইয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতর একজন নারী আল্লাহর ইবাদতে মশগুল।

জমিদার ব্যাপারটিকে অলৌকিক মনে করেন এবং ক্ষমা চেয়ে ঘর ভাঙা থেকে বিরত থাকেন। এই ধর্মপ্রাণ নারীর নাম ছিল মাই সাহেবা। তার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এর নাম দেন মাইসাহেবা জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদের ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করা হলেও তাতে ঐতিহ্যের ছাপ রক্ষা করা হয়েছে।

আনুমানিক ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদটি শেরপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন।মসজিদটি ৩ তলা বিশিষ্ট। নীচতলায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা ও ওযুর ব্যবস্থা। দোতলা নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় পাঠাগার রয়েছে। ভিতরে রয়েছে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা মাইসাহেবার কবর। বর্তমানে মূল মসজিদে ৬ সহস্রাদিক মুসল্লী একত্রে নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদের প্রবেশ পথে দুইটি বড় গেইট এবং মসজিদের দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। বর্তমানে দশ হাজার মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা, মহিলাদের নামাজের স্থান ও সমগ্র মসজিদ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করার কাজ চলছে। নিরাপত্তা জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা।

রমজানের সময় প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মুসল্লীরা ইফতার করে থাকেন এ মসজিদে। ইফতারির খরচ মসজিদ কমিটির লোকজন এবং জেলার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের দানের অর্থায়নে করে থাকেন।

ট্যাগস :

উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের

ঐতিহ্যের সাক্ষী শেরপুরের মাইসাহেবা মসজিদ

আপডেট সময় : ০১:৫৫:০২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা গারো পাহারের পাদদেশে অবস্থিত শেরপুর জেলা। জেলায় রয়েছে নানান নিদর্শন। এর মধ্যে ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আড়াইশো বছরের পুরনো মাইসাহেবা জামে মসজিদ।

শেরপুর জেলা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরপুর সরকারি কলেজ। এর দক্ষিণ পাশে একটি নান্দনিক স্থাপনা; নাম মাইসাহেবা জামে মসজিদ। ঐতিহাসিক মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটা গল্প প্রচলিত। বলা হয়, একদিন শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার জমিদারকে দাওয়াত করেন। দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান, যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। আর সে সময় এ স্থানে তিনআনা জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরের পাশে একটা আলাদা ঘর ছিল, জমিদার ঘরের জায়গাটা মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং এ জন্য হাতি দিয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু হাতি যখনই ঘরটির কাছে আসে তখনই হাতিটি মাথা নুইয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতর একজন নারী আল্লাহর ইবাদতে মশগুল।

জমিদার ব্যাপারটিকে অলৌকিক মনে করেন এবং ক্ষমা চেয়ে ঘর ভাঙা থেকে বিরত থাকেন। এই ধর্মপ্রাণ নারীর নাম ছিল মাই সাহেবা। তার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এর নাম দেন মাইসাহেবা জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদের ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করা হলেও তাতে ঐতিহ্যের ছাপ রক্ষা করা হয়েছে।

আনুমানিক ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদটি শেরপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন।মসজিদটি ৩ তলা বিশিষ্ট। নীচতলায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা ও ওযুর ব্যবস্থা। দোতলা নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় পাঠাগার রয়েছে। ভিতরে রয়েছে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা মাইসাহেবার কবর। বর্তমানে মূল মসজিদে ৬ সহস্রাদিক মুসল্লী একত্রে নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদের প্রবেশ পথে দুইটি বড় গেইট এবং মসজিদের দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। বর্তমানে দশ হাজার মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা, মহিলাদের নামাজের স্থান ও সমগ্র মসজিদ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করার কাজ চলছে। নিরাপত্তা জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা।

রমজানের সময় প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মুসল্লীরা ইফতার করে থাকেন এ মসজিদে। ইফতারির খরচ মসজিদ কমিটির লোকজন এবং জেলার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের দানের অর্থায়নে করে থাকেন।