শিরোনাম :
Logo উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের Logo পরীক্ষায় অসদুপায়ের দায়ে নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার Logo রমজানের লম্বা ছুটিতে ভোগান্তিতে পরেন ইবির ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা Logo উপদেষ্টা ফারুকীকে নিয়ে যা বললেন প্রিন্স মাহমুদ Logo রিজার্ভ ডে থাকছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে Logo চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ১৮ মাসে মাদক নির্মূলে  অভিযান Logo পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ডাকাতি করে পালানোর সময় আন্তজেলা ডাকাত চক্রের ৫ সদস্য আটক। Logo হঠাৎ অসুস্থ মির্জা ফখরুল, হাসপাতালে ভর্তি Logo ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেনশনের ৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট’ Logo আগামী নির্বাচনে যে কোন মূল্যে ইসলামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম চাই: মামুনুল হক

গাজায় রমজান: ধ্বংসস্তূপের মাঝে বিশ্বাসে অবিচল

ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজার মানুষের রোজা বিশ্বের অন্য দেশের মতো উৎসবের আবহে কাটছে না। ধ্বংস, শোক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রমজান শুরু করেছে ফিলিস্তিনের এই বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের বাসিন্দারা। সোয়া এক বছরের যুদ্ধে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের বিচ্ছিন্ন এই ভূ-খন্ডের মানুষ রোজা করছেন দুঃখ ও শোকের আবহে।

শনিবার দক্ষিণ গাজায় ধ্বংসস্তূপের ঢিবির মধ্য দিয়ে কয়েকশ মিটার দীর্ঘ লাল রঙে আচ্ছাদিত টেবিল তৈরি করেছেন ফিলিস্তিনিরা। সেখানে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে রোজা ভাঙতে একসঙ্গে জড়ো হন তারা। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিবেশে ইফতার করেন তারা।

ধ্বংসস্তূপের কাছে সম্মিলিতভাবে এই ইফতারের আয়োজন করেছিলেন মালাক ফাদ্দা। তিনি বলেন,  ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং আমাদের চারপাশের সবকিছু হৃদয়বিদারক। তাই আমরা এ রাস্তায় আনন্দ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঠিক যেমনটি যুদ্ধের আগে ছিল।’

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার শিক্ষার্থী ইসরা আবু কামার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় গাজার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, “গত বছরের রোজা অকল্পনীয়ভাবে কঠিন ছিল। ক্ষুধা ছিল সর্বত্র, বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে স্বাদহীন খাবার চিবিয়ে কাটাতে হয়েছে আমাদের।”

গাজায় ইফতারের সময় আজানের পরিবর্তে গোলার শব্দ শুনতে হয়েছে মানুষকে। ইসরায়েলি হামলায় মসজিদ ধ্বংস হওয়ায় তারাবির নামাজ আদায়ও ছিল দুঃসাধ্য।

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এবার রোজা শুরু হলেও গাজার বাসিন্দারা নতুন আশঙ্কায় দিন পার করছেন। মানবিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাদ্যসংকট আরও তীব্র হচ্ছে।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী ইসরা আবু কামার দমবন্ধ করা এ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। তার ভাষায়, “এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারপর কী হবে, তা নিয়ে মানুষজন এখনও উদ্বিগ্ন। তারা ভীত, যুদ্ধ আবারও ফেরত আসতে পারে। গত এক বছরে আমরা যা দেখেছি এবং অনুভব করেছি, তা আমাদের স্মৃতিতে প্রবলভাবে রয়েছে।”

গত বছর গাজাবাসী রোজার দিনগুলো পার করেছেন ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমানের উড়ে আসা ও বোমা ফাটার বীভৎস অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে।

ইসরা আবু কামার লিখেছেন, “আমাদের মসজিদ ধ্বংস করা যাবে, কিন্তু বিশ্বাস ভাঙা যাবে না। আমরা আমাদের অর্ধ-ভগ্ন বাড়িতে তাঁবু টানিয়ে তারাবিহ পড়ব, দোয়ায় শান্তি খুঁজব।”

মোহাম্মদ আবু আল-জিদিয়ান বলেন, ‘আমরা এখানে ধ্বংসস্তূপের মাঝে আছি এবং ব্যথা এবং ক্ষত সত্ত্বেও আমরা অবিচল আছি। আমরা আমাদের জমিতে ইফতার খাচ্ছি এবং আমরা এ জায়গা ছেড়ে যাব না।’

ট্যাগস :

উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের

গাজায় রমজান: ধ্বংসস্তূপের মাঝে বিশ্বাসে অবিচল

আপডেট সময় : ০৩:৫৭:৪৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজার মানুষের রোজা বিশ্বের অন্য দেশের মতো উৎসবের আবহে কাটছে না। ধ্বংস, শোক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রমজান শুরু করেছে ফিলিস্তিনের এই বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের বাসিন্দারা। সোয়া এক বছরের যুদ্ধে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের বিচ্ছিন্ন এই ভূ-খন্ডের মানুষ রোজা করছেন দুঃখ ও শোকের আবহে।

শনিবার দক্ষিণ গাজায় ধ্বংসস্তূপের ঢিবির মধ্য দিয়ে কয়েকশ মিটার দীর্ঘ লাল রঙে আচ্ছাদিত টেবিল তৈরি করেছেন ফিলিস্তিনিরা। সেখানে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে রোজা ভাঙতে একসঙ্গে জড়ো হন তারা। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিবেশে ইফতার করেন তারা।

ধ্বংসস্তূপের কাছে সম্মিলিতভাবে এই ইফতারের আয়োজন করেছিলেন মালাক ফাদ্দা। তিনি বলেন,  ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং আমাদের চারপাশের সবকিছু হৃদয়বিদারক। তাই আমরা এ রাস্তায় আনন্দ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঠিক যেমনটি যুদ্ধের আগে ছিল।’

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার শিক্ষার্থী ইসরা আবু কামার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় গাজার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, “গত বছরের রোজা অকল্পনীয়ভাবে কঠিন ছিল। ক্ষুধা ছিল সর্বত্র, বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে স্বাদহীন খাবার চিবিয়ে কাটাতে হয়েছে আমাদের।”

গাজায় ইফতারের সময় আজানের পরিবর্তে গোলার শব্দ শুনতে হয়েছে মানুষকে। ইসরায়েলি হামলায় মসজিদ ধ্বংস হওয়ায় তারাবির নামাজ আদায়ও ছিল দুঃসাধ্য।

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এবার রোজা শুরু হলেও গাজার বাসিন্দারা নতুন আশঙ্কায় দিন পার করছেন। মানবিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাদ্যসংকট আরও তীব্র হচ্ছে।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী ইসরা আবু কামার দমবন্ধ করা এ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। তার ভাষায়, “এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারপর কী হবে, তা নিয়ে মানুষজন এখনও উদ্বিগ্ন। তারা ভীত, যুদ্ধ আবারও ফেরত আসতে পারে। গত এক বছরে আমরা যা দেখেছি এবং অনুভব করেছি, তা আমাদের স্মৃতিতে প্রবলভাবে রয়েছে।”

গত বছর গাজাবাসী রোজার দিনগুলো পার করেছেন ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমানের উড়ে আসা ও বোমা ফাটার বীভৎস অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে।

ইসরা আবু কামার লিখেছেন, “আমাদের মসজিদ ধ্বংস করা যাবে, কিন্তু বিশ্বাস ভাঙা যাবে না। আমরা আমাদের অর্ধ-ভগ্ন বাড়িতে তাঁবু টানিয়ে তারাবিহ পড়ব, দোয়ায় শান্তি খুঁজব।”

মোহাম্মদ আবু আল-জিদিয়ান বলেন, ‘আমরা এখানে ধ্বংসস্তূপের মাঝে আছি এবং ব্যথা এবং ক্ষত সত্ত্বেও আমরা অবিচল আছি। আমরা আমাদের জমিতে ইফতার খাচ্ছি এবং আমরা এ জায়গা ছেড়ে যাব না।’