নিউজ ডেস্ক:

দু’হাজার সতেরো কেমন যাবে উত্তর খুঁজছে বিশ্ব। উঠছে আশা-নিরাশার ঢেউ। ধন্দ নতুন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে। দায়িত্ব নিতে না নিতেই বিতর্কে। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি সই ইং ওয়েলের সঙ্গে তাঁর দশ মিনিটের ফোনালাপে ঝড়। ১৯৭৯-এর পর আমেরিকা-তাইওয়ান সংযোগ বন্ধ। তাইওয়ানকে চিনের প্রদেশ মেনেই আলাদা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় না আমেরিকা। ট্রাম্পের যুক্তি, তাইওয়ানকে কোটি কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করে আমেরিকা। তাতে দোষ নেই। সে দেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ফোনে কথা বললেই অপরাধ! ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতি রডরিগো দুর্তেতেকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে সমালোচনার মুখে ট্রাম্প। বেজিং-এর দিকে ঝুঁকে দুর্তেতে অপমান করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকে। তাঁর বিরুদ্ধে মানবিধাকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এ সব ভাল চোখে দেখছেন না। এখন তিনি কোর নেতা। মাও জে দং-এর মতো তাঁর কথাতেই চলছে প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ মন্ত্রক।

শুরুর আগেই যদি এই হয়, শুরুর পর কী হবে। জট পাকানো সহজ ছাড়ানো কঠিন। বাংলাদেশ-ভারত কিন্তু নতুন বছরের রাস্তাকে আরও মসৃণ করতে তৎপর। সম্পর্কে এক সুতো ব্যবধানও থাকবে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন বছরে দিল্লি সফর করবেন। কথা হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সব বিষয়ে সমাধান সুনিশ্চিত করার অঙ্গীকার। তিস্তা চুক্তিটা ঝুলে আছে অনেক দিন। হাসিনা দ্রুত নিষ্পত্তি চাইছেন। ভারতের জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব কুমার বালিয়ান লোকসভায় জানিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি রূপায়ণের বিষয়ে ভারত সরকার উদ্যোগী। সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অসুস্থ। ক’দিন আগেই তিনি জানিয়েছেন- তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঐকমত্যে পৌঁছনো জরুরি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।

সব কথাতেই ইতিবাচক ইঙ্গিত। এ বার কলকাতাতেও বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন নজিরবিহীন আড়ম্বরে। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পাঁচ দিনের উৎসবের অন্যতম সহযোগী পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পশ্চিমবঙ্গ চাইছে, উত্তরবঙ্গে জলের নিশ্চয়তা দিয়ে যেন তিস্তা চুক্তি করা হয়। চুক্তিতে কারা কতটা জল পাবে তা নিয়ে ভাবনা চলছে। বাংলাদেশ-ভারত আলোচনায় তার মীমাংসা হওয়ার আশা। বাংলাদেশ-ত্রিপুরার মধ্যে বয়ে যাওয়া মুহুরি নদী নিয়ে সমস্যা আছে। নদীটা আপন বেগে চলতে পারছে না। ত্রিপুরার দিকে চর জাগায় বাঁক নিয়ে ঢুকছে বাংলাদেশে। চরের মালিকানা দাবি করছে বাংলাদেশ। ভারত বলছে, চর নয় শুধু জলে বাংলাদেশের অধিকার। দ্বিমতকে একমতে আনাটাই এখন দু’দেশের লক্ষ্য। আন্তরিক আলোচনায় তার বিহিত হওয়ার সম্ভাবনা।

হাসিনা দিল্লিতে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর গোপালকৃষ্ণ প্রভু পর্রীকর ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফর করেছেন। চট্টগ্রামে সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন তিনি। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে শহিদ সেনাদের স্মারক ‘অনির্বাণ শিখা’য় শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কথা বলেছেন হাসিনার সঙ্গে। ৩০ মিনিটের কথাবার্তায় সন্ত্রাস দমনে দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও। সন্ত্রাসের শেষ দেখতে চান তিনি।