নিউজ ডেস্ক:
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাধা দূর করে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে হবে। ট্যারিফ-ননট্যারিফ শুল্কবাধা দূর করা হলে ভারতে রপ্তানি অনেক বাড়বে।
গত শুক্রবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নির্মলা সিতারামানের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স এবং বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তমে অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপী পার্টনারশিপ সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, ট্যারিফ ও ননট্যারিফ ব্যারিয়ার যাতে দুদেশের বাণিজ্যে বাধার সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে ভারত সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর যে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে; এ শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য সমস্যাগুলো দূর করতে অফিসিয়াল আলোচনার উদ্যোগ প্রয়োজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশ ভারতে ৬৮৯ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ৫৬৯৫ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য বাধা দূর করা হলে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বাড়বে। বাণিজ্য বাধার কারণে বাংলাদেশ ভারতে আশানুরূপ রপ্তানি করতে পারছে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে পৃথিবীর অনেক দেশ বিনিয়োগ করছে। বৈদেশিক বিনিয়োগে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। দেশের জিডিপি অর্জন ৭ দশমিক ১১ ভাগ, সেখানে ভারতের ৭ দশমিক ৬। মানুষের মাথাপিছু আয় ১৪৬৬ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। নিজ অর্থায়নে বাংলাদেশ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের একটি মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাংলাদেশ এখন ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করছে। এ অঞ্চলের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যে ভারতের পার বাংলাদেশের স্থান। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করছে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সৈন্য, অর্থ, খাদ্য, আশ্রয় দিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী এ তথ্য জানিয়েছেন।
অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সামিটের এ সেশনে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নির্মলা সিতারামান, ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইকোনমি মিনিস্টার সুলতান বিন সায়েদ, শ্রীলংকার বাণিজ্যমন্ত্রী রিশাদ বাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।