শিরোনাম :
Logo আছিয়ার মরদেহ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় নেওয়া হবে Logo মাগুরায় শিশু ধর্ষণের বিচার কাজ ৭ দিনের মধ্যে শুরু: আইন উপদেষ্টা Logo মাগুরার শিশুর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচারের নির্দেশ Logo না ফেরার দেশে, চলে গেল শিশু আছিয়া Logo কচুয়ায় বায়েক-রাগদৈল সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী Logo চাঁদপুর সদরের লক্ষ্মীপুর ও হানারচর ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ Logo সরকার ও আইনের উদাসীনতায় বাড়ছে নারী ধর্ষণ ও সহিংসতা Logo সিমাগো র‌্যাঙ্কিংয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ স্থান অর্জন Logo কোচিংয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ভাই-বোন সহ তিন জনের মৃত্যু Logo চুয়াডাঙ্গায় ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

ইউনূসের চীন মিশনে মোদি থ!

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০২:০৪:২১ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • ৭০৯ বার পড়া হয়েছে
ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ। সীমান্তের অধিকাংশ জুড়ে রয়েছে তাদের অবস্থান। বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর। হাসিনা সরকারের অবসানের পরে নতুন অন্তবর্তী সরকারের ভারত প্রশ্নে আর পেছনে ফেরার অবস্থা নেই । একই অবস্থান শেখ হাসিনা প্রশ্নেও। রয়ে-সয়ে নয়, একেবারে সোজাসাপ্টা কথা বলে দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বরাবরের মতো মতামত জানাতে বিদেশি গণমাধ্যমে বেশি স্বস্তি বোধ করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত দ্য গার্ডিয়ানের কাছে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন।

ভারত ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে চলে এসেছে আরও অনেক কথা। তার ভাষায়, দেশের বিশাল ক্ষতি করে গেছেন শেখ হাসিনা। গাজার মতো বিধ্বস্ত এক দেশে পরিণত করে গেছেন বাংলাদেশকে। পার্থক্য যা হলো এখানে ভবন নয়, তিনি ধ্বংস করেছেন প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরশাসন, সহিংসতা ও দুর্নীতিতে ভরা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেছেন, হাসিনার আমলে কোনো সরকার ছিল না, এটি ছিল ডাকাতদের একটি পরিবার। নেতার কাছ থেকে যেকোনো নির্দেশ এলে তা পালন করা হতো। বলতে বলতে এসেছে ভারত প্রসঙ্গও।

ড. ইউনূস জানান, সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ভারতের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ‘কোনো সাড়া’ পাওয়া যায়নি। তার আশা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশকে একটি বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ‘বিনিয়োগের ভালো সুযোগ’ হিসেবে দেখতে পারেন। এদিকে এত দিন আলোচনায় থাকলেও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে আগামী সপ্তাহেই হতে যাচ্ছে বিশেষ আইন।

বিএফআইইউ এবং যৌথ দলের তদন্তে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার এবং স্বার্থসংশ্লিষ্টদের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে পাচার করা অর্থের সন্ধান পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। শেষ পর্যন্ত অর্থ ফেরত আনায় কতটুকু সফল হওয়া যাবে, তা সংশয়ের বিষয় হলেও সরকার আশাবাদী। এ মহলের বিশ্বাস, ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক ইমেজ কাজে লাগিয়ে কিছু সাফল্য আসতে পারে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে টাস্কফোর্সের বিশেষ বৈঠকও হয়েছে। এর আগে শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হওয়ার তথ্য দিয়েছে ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচার হওয়া সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে। এ চক্রের কেবল সন্তানদের টিউশনির নামেই ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানোর তথ্য-সাবুদও এখন সরকারের হাতে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বিশেষ আইনের পাশাপাশি নিয়োগ দেওয়া হবে ল’ ফার্ম। পাচারের অর্থ ফেরাতে চলতি মাসে যুক্তরাজ্য সফর করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এরই মধ্যে পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ছয় মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক। এর মাধ্যমে পটপরিবর্তনের পর প্রথম কোনো দুর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে শেখ পরিবারের সদস্যদের। চার্জশিটে আসামির তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ ও শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ২০২২ সালে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় গেল জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে দুদক। এর মাঝেই ধানমন্ডিতে শেখ হাসিনার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আলিশান ফ্ল্যাটের গোপন তথ্য জেনেছে দুদক। ব্রিটেনে নিন্দনীয় কাজের অভিযোগে আক্রান্ত, মন্ত্রিত্ব খোয়ানো শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের আলিশান ফ্ল্যাট মিলেছে গুলশানে। রেহানার সেগুনবাগিচায় এবং তার ছেলে রেদোয়ান ববির নিকেতনে ফ্ল্যাটও ধরা পড়েছে। তারা গোপনে এসব সম্পদ বিক্রির আয়োজন করছিলেন।

দুদক সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ইউনূসের (হাসিনার সরকার ছিল দস্যু পরিবার) মন্তব্যকে আরও যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পরও ভারতের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে ইউনূসের উদারপন্থায় ছেদ পড়তে যাচ্ছে। ভারত নিষ্ক্রিয় না হয়ে উপরন্তু একের পর এক নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখায় তাকে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে হচ্ছে। গাঁথুনি গাড়ছেন চীনের সঙ্গে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাঠানো বিশেষ বিমানে তিনি চীন সফরে যাবেন।

তিস্তা প্রকল্পের কাজও চলে যাচ্ছে চীনের হাতে। চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য দোভাষীসহ আলাদা কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। ড. মঈন খানের নেতৃত্বে যাওয়া একঝাঁক বাংলাদেশি রাজনীতিককে কুনমিংয়ের সেই হাসপাতালগুলো দেখিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক এই ব্যাক টু ব্যাক ঘটনাগুলো ভারতকে রীতিমতো নতুন উদ্বেগ ও দুর্ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী এ উদ্বেগ ধরে রাখতে পারেননি। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের যোগসাজশে ভারতে অঘটনের শঙ্কার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক ভালো নেই। ভারতের ১১টি রাজ্যে মাওবাদীদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে মাঝেমধ্যেই দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধছে। দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের মন্তব্য আরেক বোমা ফাটানোর মতো। বাংলাদেশে সব ধরনের সমস্যা সমাধানে অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছেন তিনি। স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষার কথা জানিয়েছেন।

২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের মুখে এ ধরনের কথা শোনা যায়নি। এ পরিস্থিতির মাঝেই ২৬ মার্চ হাই-প্রোফাইল সফরে চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে দেশটিতে যাবেন। সফরের সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় হাইনানে বাও ফোরামে যোগ দিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে একই দিন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইউনূস। এর আগে ভারতকে ঝাঁকুনি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাক্ষাৎ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয় অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে। ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করে রেখেছে কানাডা। ভারতবিরোধী একটি শক্তিশালী বলয় তৈরি করতে চীনের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে সামরিক ও এয়ারফোর্সের জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট জোরদার করেছে। ভারতের ঘুম হারাম করার আরেক কারণ তুরস্কের ড্রোন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আছিয়ার মরদেহ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় নেওয়া হবে

ইউনূসের চীন মিশনে মোদি থ!

আপডেট সময় : ০২:০৪:২১ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ। সীমান্তের অধিকাংশ জুড়ে রয়েছে তাদের অবস্থান। বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর। হাসিনা সরকারের অবসানের পরে নতুন অন্তবর্তী সরকারের ভারত প্রশ্নে আর পেছনে ফেরার অবস্থা নেই । একই অবস্থান শেখ হাসিনা প্রশ্নেও। রয়ে-সয়ে নয়, একেবারে সোজাসাপ্টা কথা বলে দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বরাবরের মতো মতামত জানাতে বিদেশি গণমাধ্যমে বেশি স্বস্তি বোধ করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত দ্য গার্ডিয়ানের কাছে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন।

ভারত ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে চলে এসেছে আরও অনেক কথা। তার ভাষায়, দেশের বিশাল ক্ষতি করে গেছেন শেখ হাসিনা। গাজার মতো বিধ্বস্ত এক দেশে পরিণত করে গেছেন বাংলাদেশকে। পার্থক্য যা হলো এখানে ভবন নয়, তিনি ধ্বংস করেছেন প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরশাসন, সহিংসতা ও দুর্নীতিতে ভরা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেছেন, হাসিনার আমলে কোনো সরকার ছিল না, এটি ছিল ডাকাতদের একটি পরিবার। নেতার কাছ থেকে যেকোনো নির্দেশ এলে তা পালন করা হতো। বলতে বলতে এসেছে ভারত প্রসঙ্গও।

ড. ইউনূস জানান, সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ভারতের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ‘কোনো সাড়া’ পাওয়া যায়নি। তার আশা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশকে একটি বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ‘বিনিয়োগের ভালো সুযোগ’ হিসেবে দেখতে পারেন। এদিকে এত দিন আলোচনায় থাকলেও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে আগামী সপ্তাহেই হতে যাচ্ছে বিশেষ আইন।

বিএফআইইউ এবং যৌথ দলের তদন্তে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার এবং স্বার্থসংশ্লিষ্টদের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে পাচার করা অর্থের সন্ধান পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। শেষ পর্যন্ত অর্থ ফেরত আনায় কতটুকু সফল হওয়া যাবে, তা সংশয়ের বিষয় হলেও সরকার আশাবাদী। এ মহলের বিশ্বাস, ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক ইমেজ কাজে লাগিয়ে কিছু সাফল্য আসতে পারে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে টাস্কফোর্সের বিশেষ বৈঠকও হয়েছে। এর আগে শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হওয়ার তথ্য দিয়েছে ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচার হওয়া সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে। এ চক্রের কেবল সন্তানদের টিউশনির নামেই ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানোর তথ্য-সাবুদও এখন সরকারের হাতে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বিশেষ আইনের পাশাপাশি নিয়োগ দেওয়া হবে ল’ ফার্ম। পাচারের অর্থ ফেরাতে চলতি মাসে যুক্তরাজ্য সফর করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এরই মধ্যে পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ছয় মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক। এর মাধ্যমে পটপরিবর্তনের পর প্রথম কোনো দুর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে শেখ পরিবারের সদস্যদের। চার্জশিটে আসামির তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ ও শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ২০২২ সালে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় গেল জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে দুদক। এর মাঝেই ধানমন্ডিতে শেখ হাসিনার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আলিশান ফ্ল্যাটের গোপন তথ্য জেনেছে দুদক। ব্রিটেনে নিন্দনীয় কাজের অভিযোগে আক্রান্ত, মন্ত্রিত্ব খোয়ানো শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের আলিশান ফ্ল্যাট মিলেছে গুলশানে। রেহানার সেগুনবাগিচায় এবং তার ছেলে রেদোয়ান ববির নিকেতনে ফ্ল্যাটও ধরা পড়েছে। তারা গোপনে এসব সম্পদ বিক্রির আয়োজন করছিলেন।

দুদক সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ইউনূসের (হাসিনার সরকার ছিল দস্যু পরিবার) মন্তব্যকে আরও যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পরও ভারতের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে ইউনূসের উদারপন্থায় ছেদ পড়তে যাচ্ছে। ভারত নিষ্ক্রিয় না হয়ে উপরন্তু একের পর এক নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখায় তাকে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে হচ্ছে। গাঁথুনি গাড়ছেন চীনের সঙ্গে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাঠানো বিশেষ বিমানে তিনি চীন সফরে যাবেন।

তিস্তা প্রকল্পের কাজও চলে যাচ্ছে চীনের হাতে। চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য দোভাষীসহ আলাদা কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। ড. মঈন খানের নেতৃত্বে যাওয়া একঝাঁক বাংলাদেশি রাজনীতিককে কুনমিংয়ের সেই হাসপাতালগুলো দেখিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক এই ব্যাক টু ব্যাক ঘটনাগুলো ভারতকে রীতিমতো নতুন উদ্বেগ ও দুর্ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী এ উদ্বেগ ধরে রাখতে পারেননি। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের যোগসাজশে ভারতে অঘটনের শঙ্কার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক ভালো নেই। ভারতের ১১টি রাজ্যে মাওবাদীদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে মাঝেমধ্যেই দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধছে। দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের মন্তব্য আরেক বোমা ফাটানোর মতো। বাংলাদেশে সব ধরনের সমস্যা সমাধানে অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছেন তিনি। স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষার কথা জানিয়েছেন।

২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের মুখে এ ধরনের কথা শোনা যায়নি। এ পরিস্থিতির মাঝেই ২৬ মার্চ হাই-প্রোফাইল সফরে চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে দেশটিতে যাবেন। সফরের সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় হাইনানে বাও ফোরামে যোগ দিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে একই দিন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইউনূস। এর আগে ভারতকে ঝাঁকুনি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাক্ষাৎ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয় অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে। ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করে রেখেছে কানাডা। ভারতবিরোধী একটি শক্তিশালী বলয় তৈরি করতে চীনের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে সামরিক ও এয়ারফোর্সের জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট জোরদার করেছে। ভারতের ঘুম হারাম করার আরেক কারণ তুরস্কের ড্রোন।