পাবিপ্রবি প্রতিনিধি :
পবিপ্রবি (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রমজান মাসে ক্লাস ও পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ একে বাস্তবতার স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকেই শারীরিক ও মানসিক চাপের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই ক্লাস ও পরীক্ষার সময়সূচি সামান্য পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে। তাদের মতে, রোজা রেখে দীর্ঘসময় ধরে ক্লাস করা বা পরীক্ষা দেওয়া কষ্টকর হতে পারে, বিশেষত গরমের সময়।
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে মোল্লা মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, “রমজান মাসে ক্লাস পরীক্ষা নেওয়ার কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। প্রথমত, এই সময়ে মুসলিম শিক্ষার্থীরা রোজা রাখে, যার ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি বোধ করতে পারে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কিছুটা কমে যেতে পারে, যা পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে। দ্বিতীয়ত, রমজানে ধর্মীয় ইবাদত ও তারাবিহ নামাজের কারণে পড়াশোনার সময় কমে যায়, যা প্রস্তুতিকে কঠিন করে তোলে। তৃতীয়ত, অন্যান্য ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্যও এই সময়ে স্কুলের পরিবেশ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, যা তাদের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তাই রমজান মাসে পরীক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।”
অন্যদিকে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে মো. সোহাগ মিয়া বলেন, “রমজান মাসে পরিক্ষা বা ক্লাস নেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন হবে না। কারণ, রমজান মাসে ক্লাসের জন্য মেসে থাকতে হবে যার কারণে ভালোভাবে খাবার খাওয়া যায় না। এছাড়াও রমজান মাসে ক্লাসের কারণে ক্যাম্পাসে যেতে হয় যার ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাবে এছাড়াও রমজান মাসে ক্লাসের কারণে সবাই ঠিকঠাকমতো ক্লাস করতে পারে না। পরিশেষে বলা যায় সবারই একটা প্রত্যাশা থাকে রমজান মাসে পরিবারসহ একসাথে রোজা রাখবে। সেহেরি খাবে এবং একসঙ্গে উচ্ছ্বাস নিয়ে ইফতার করবে। তাই বলা যায় রমজান মাসে ক্লাস বা পরিক্ষা নেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।”
সর্বোপরি, রমজানে ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখার প্রয়োজনীয়তা সকলেই স্বীকার করছেন। এখন দেখার বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে কোনো পরিবর্তন আনে কি না।