শিরোনাম :
Logo কুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ; পরীক্ষা স্থগিত Logo কচুয়ায় ভূমি দস্যু আওয়ামীলীগ নেতার গ্রেফতারের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন Logo যবিপ্রবিতে অগ্নি প্রতিরোধ, নির্বাপণ, উদ্ধার ও জরুরী বর্হিগমন বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত Logo শেরপুরে গাছে পেরেক অপসারণ কর্মসূচি পালন Logo কাজ ছাড়াই বেরোবির ১১ কর্মকর্তা- কর্মচারী বেতনভাতা উত্তোলন করতেছেন: দুদক Logo পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ফার্মেসি ব্যাবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে এনআইডি সেবা Logo কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চিকিৎসকদের মহাসমাবেশ চলছে Logo ফারজানা সিঁথিকে ধর্ষণের হুমকি, কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নামে মামলা Logo এনসিপি গোলমাল করে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে: ফারুক

পাপ বর্জনের সহজ নিয়ম

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে
প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে পাপ-পুণ্যের অনুভূতি আছে। পুণ্য মানুষের ঈমান মজবুত করে। মুক্তির রাজপথে নিয়ে যায়। পাপ মানুষের আত্মাকে কলুষিত করে এবং আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। পাপের সংজ্ঞায়ন দুই ভাবে করা হয়েছে।

এক. নাওয়াস ইবনে সামআন আনসারি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে পুণ্য ও পাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তখন উত্তর দিলেন, পুণ্য হচ্ছে সচ্চরিত্র। আর পাপ হচ্ছে যা তোমার (অন্তরে) খটকা সৃষ্টি করে এবং লোকে তা জানুক তা তুমি অপছন্দ করো। (মুসলিম, হাদিস : ৬২৮৫)

দুই. আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) বলেন, ‘মুমিনরা যে কাজকে ভালো মনে করে, আল্লাহ তাআলার কাছেও সেটি ভালো। এবং মুমিনরা যাকে মন্দ মনে করে আল্লাহ তাআলার কাছেও তা মন্দ।’ (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ১৮১৬)

কোন কাজ প্রশংসনীয় এবং কোন কাজ নিন্দনীয় মন থেকেই তার সাক্ষ্য পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ সে সাক্ষ্যের পরোয়া করে না। এর ফলে নিজের খেয়াল-খুশির কাছে পরাভূত হয়। গুনাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হয়। সমস্ত পাপ বর্জনের তাগিদ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা প্রকাশ্য পাপ কাজ পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপ কাজও। যারা পাপ কাজ করে তাদেরকে অতি সত্ত্বর তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেওয়া হবে । (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০)

ছোট-বড় পাপ 
কোরআন সুন্নাহ ও পরিণতির ভিত্তিতে পাপকে কবিরা ও সগিরা এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে । সগিরা পাপকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই । কিয়ামতের দিন ছোট-বড় সকল পাপের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখতে পারবে এবং যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পারবে।’ (সুরা জিলজাল, আয়াত :৭-৮)

সগিরা পাপকে ছোট মনে করলে জমা হয়ে একসময় তা পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।

দুনিয়ায় পাপের শাস্তি
পাপের শাস্তি শুধু আখিরাতেই সীমাবদ্ধ নয়; কিছু কিছু পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে দিয়ে থাকেন। দুনিয়ার শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য একপ্রকার সতর্কতা, যাতে মানুষ অনুতপ্ত হয়ে তার পথে ফিরে আসে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর অবশ্যই আমি তাদের (পরকালের) মহাশাস্তির আগে কিছু লঘু শাস্তি (দুনিয়ায়) আস্বাদন করাবো, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা সিজদা, আয়াত : ২১)

এই শাস্তি কখনো জাতীয়ভাবে ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, ঝড় ইত্যাদির মাধ্যমে হতে পারে আবার কখনো ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন রোগ, নিজের প্রিয়তম লোকদের মৃত্যু, ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মারাত্মক ক্ষতি, ব্যর্থতা ইত্যাদির মাধ্যমে হতে পারে ।

পাপ বর্জনের সহজ নিয়ম
একদিনে বা এক রাতে হঠাত্ করে গুনাহের চিরাচরিত অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া কঠিন। পাপ প্রবণতা কামানোর জন্য কষ্ট স্বীকার করতে হয়। প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাতে হয়। দোয়া করতে হয় । একসময় আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে সাহায্য। কোরআনের এসেছে, ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদের আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্কর্মশীলদের সাথে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৯)

কাজকর্মে শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা পরিহার করে হিম্মত ঠিক রেখে চললেই পাপের মহাসড়ক থেকে বাঁচার উপায় বের হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শক্তিশালী মুমিন দুর্বলের তুলনায় আল্লাহর কাছে উত্তম ও অধিক প্রিয়। প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে, যাতে তোমার উপরকার হবে তার প্রতি তুমি লালায়িত হয়ো এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর এবং অক্ষম হয়ে থেকো না। যদি কোন কিছু (বিপদ) তোমার উপর আপতিত হয় তবে এরূপ বলবে না যে যদি আমি এরূপ করতাম তবে এরূপ এরূপ হত। বরং এই বল যে আল্লাহ যা নির্ধারণ করেছেন এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন। কেননা, তোমার (যদি) শব্দটি শয়তানের আমলের দুয়ার খুলে দেয়।’ (মুসলিম হাদিস : ৬৫৩২)

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ; পরীক্ষা স্থগিত

পাপ বর্জনের সহজ নিয়ম

আপডেট সময় : ১১:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে পাপ-পুণ্যের অনুভূতি আছে। পুণ্য মানুষের ঈমান মজবুত করে। মুক্তির রাজপথে নিয়ে যায়। পাপ মানুষের আত্মাকে কলুষিত করে এবং আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। পাপের সংজ্ঞায়ন দুই ভাবে করা হয়েছে।

এক. নাওয়াস ইবনে সামআন আনসারি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে পুণ্য ও পাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তখন উত্তর দিলেন, পুণ্য হচ্ছে সচ্চরিত্র। আর পাপ হচ্ছে যা তোমার (অন্তরে) খটকা সৃষ্টি করে এবং লোকে তা জানুক তা তুমি অপছন্দ করো। (মুসলিম, হাদিস : ৬২৮৫)

দুই. আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) বলেন, ‘মুমিনরা যে কাজকে ভালো মনে করে, আল্লাহ তাআলার কাছেও সেটি ভালো। এবং মুমিনরা যাকে মন্দ মনে করে আল্লাহ তাআলার কাছেও তা মন্দ।’ (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ১৮১৬)

কোন কাজ প্রশংসনীয় এবং কোন কাজ নিন্দনীয় মন থেকেই তার সাক্ষ্য পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ সে সাক্ষ্যের পরোয়া করে না। এর ফলে নিজের খেয়াল-খুশির কাছে পরাভূত হয়। গুনাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হয়। সমস্ত পাপ বর্জনের তাগিদ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা প্রকাশ্য পাপ কাজ পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপ কাজও। যারা পাপ কাজ করে তাদেরকে অতি সত্ত্বর তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেওয়া হবে । (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০)

ছোট-বড় পাপ 
কোরআন সুন্নাহ ও পরিণতির ভিত্তিতে পাপকে কবিরা ও সগিরা এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে । সগিরা পাপকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই । কিয়ামতের দিন ছোট-বড় সকল পাপের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখতে পারবে এবং যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখতে পারবে।’ (সুরা জিলজাল, আয়াত :৭-৮)

সগিরা পাপকে ছোট মনে করলে জমা হয়ে একসময় তা পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।

দুনিয়ায় পাপের শাস্তি
পাপের শাস্তি শুধু আখিরাতেই সীমাবদ্ধ নয়; কিছু কিছু পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে দিয়ে থাকেন। দুনিয়ার শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য একপ্রকার সতর্কতা, যাতে মানুষ অনুতপ্ত হয়ে তার পথে ফিরে আসে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর অবশ্যই আমি তাদের (পরকালের) মহাশাস্তির আগে কিছু লঘু শাস্তি (দুনিয়ায়) আস্বাদন করাবো, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা সিজদা, আয়াত : ২১)

এই শাস্তি কখনো জাতীয়ভাবে ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, ঝড় ইত্যাদির মাধ্যমে হতে পারে আবার কখনো ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন রোগ, নিজের প্রিয়তম লোকদের মৃত্যু, ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মারাত্মক ক্ষতি, ব্যর্থতা ইত্যাদির মাধ্যমে হতে পারে ।

পাপ বর্জনের সহজ নিয়ম
একদিনে বা এক রাতে হঠাত্ করে গুনাহের চিরাচরিত অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া কঠিন। পাপ প্রবণতা কামানোর জন্য কষ্ট স্বীকার করতে হয়। প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাতে হয়। দোয়া করতে হয় । একসময় আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে সাহায্য। কোরআনের এসেছে, ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদের আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্কর্মশীলদের সাথে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৯)

কাজকর্মে শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা পরিহার করে হিম্মত ঠিক রেখে চললেই পাপের মহাসড়ক থেকে বাঁচার উপায় বের হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শক্তিশালী মুমিন দুর্বলের তুলনায় আল্লাহর কাছে উত্তম ও অধিক প্রিয়। প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে, যাতে তোমার উপরকার হবে তার প্রতি তুমি লালায়িত হয়ো এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর এবং অক্ষম হয়ে থেকো না। যদি কোন কিছু (বিপদ) তোমার উপর আপতিত হয় তবে এরূপ বলবে না যে যদি আমি এরূপ করতাম তবে এরূপ এরূপ হত। বরং এই বল যে আল্লাহ যা নির্ধারণ করেছেন এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন। কেননা, তোমার (যদি) শব্দটি শয়তানের আমলের দুয়ার খুলে দেয়।’ (মুসলিম হাদিস : ৬৫৩২)