নিউজ ডেস্ক:
হুবহু পৃথিবীর মতো বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন আরেকটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ওই গ্রহটির এতই মিল যে, বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন সেটি মানুষ বসবাসের উপযোগী। বিজ্ঞানীরা গ্রহটির নাম দিয়েছেন ‘প্রক্সিমা বি’। তারা এটিকে দ্বিতীয় পৃথিবী বলে মনে করছেন। ‘পালে রেড ডট’ নামের মহাকাশ সংস্থার একদল বিজ্ঞানী গ্রহটি আবিস্কার করেছেন। পৃথিবী থেকে গ্রহটি মাত্র ৪ আলোকবর্ষ দূরে (১ আলোক বর্ষ সমান প্রায় ৫৮,৭৮,৬২৫ মিলিয়ন মাইল)।
‘পালে রেড ডট’ নামের একটি মহাকাশ বিজ্ঞানীদল ‘প্রক্সিমা বি’ নামের বসবাস উপযোগী আরেক গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। গ্রহটি খুবই উজ্জ্বল ও প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকার খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে এটি।
বিজ্ঞানীরা ‘দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) অধীনে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন। গ্রহটি ‘প্রক্সিমা সেনচাউরি’ নামের এক তারকাকে কেন্দ্র করে সৌরগতের বাইরে প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহটির ভর পৃথিবীর ভরের চেয়ে ১.৩ গুণ বেশি। তাপমাত্রা প্রায় -৯০° এবং ৩০° সেলসিয়াস (-১৩০ এবং ৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) । তাই ধারণা করা হচ্ছে, গ্রহটিতে পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে। আর পানির অস্তিত্ব থাকলে মানুষের বসবাস উপযোগী হবে গ্রহটি। এই পর্যন্ত সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কার হওয়া গ্রহগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে কাছের।
২০১৪ সালে আবিষ্কার করা কেপলার-১৮৬ এফের ছবি এটি। নাসা ধারণা করেছিল গ্রহটি মানুষের বসবাসের উপযোগী হবে। তবে তারা এখন পর্যন্ত কোনো শক্তিশালী প্রমাণ দিতে পারেনি।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা খুব শক্তিশালী তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেছেন, আমাদের পৃথিবী যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তেমনি এই গ্রহটিও প্রক্সিমা সেনচাউরি নামের এক তারকাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। সূর্য থেকে আমাদের পৃথিবী যে দূরত্বে অবস্থান করছে, তার চেয়ে বেশি কাছে অবস্থান করছে প্রক্সিমা সেনচাউরি ও প্রক্সিমা বি নামের গ্রহ দুটি। কিন্তু প্রক্সিমা সেনচাউরি গ্রহটির তাপমাত্রা সূর্যের চেয়ে কম। তাই সেটি পৃথিবীর মত বসবাস উপযোগী হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
গত তিন বছর ধরে নাসা কেপলার টেলিস্কোপ দিয়ে প্রায় চার হাজার গ্রহ আবিষ্কার করেছে। ছবিতে কেপলারের আবিষ্কার হওয়া বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান দেখানো হয়েছে।
এর আগেও পৃথিবীর মত অনেক গ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছে। তবে এবারের আবিষ্কার নিয়ে বেশি হইচই পড়ে গেছে বিজ্ঞানী মহলে। কারণ, সবদিক দিয়ে প্রক্সিমা বি গ্রহটি মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী। গ্রহটি পৃথিবী থেকে মাত্র চার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। আর চার আলোকবর্ষ সমান ২৫ ট্রিলিয়ন মাইলের বেশি। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভবিষ্যত প্রজন্ম আরও শক্তিশালী মহাকাশ যান আবিষ্কার করবে এবং কয়েক দশকের মধ্যে গ্রহটিতে বসবাস করতে পারবে।
প্রক্সিমা সেনচাউরি নামের তারকা থেকে প্রক্সিমা বি গ্রহের দূরত্ব ৪.৬ মিলিয়ন মাইল এবং সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের প্রায় পাঁচ ভাগের সমান। সুতরাং বলা যায়, প্রক্সিমা সেনচাউরির খুব কাছে অবস্থান করছে প্রক্সিমা বি। আর প্রক্সিমা সেনচাউরিকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে গ্রহটির সময় লাগে ১১.২ দিন। কিন্তু তারপরও ধারণা করা হচ্ছে, সেটি মানুষের বসবাস উপযোগী হতে পারে। কারণ, প্রক্সিমার তাপমাত্রা সূর্যের থেকে কম।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, প্রক্সিমা বি গ্রহটি পৃথিবীর মতই শিলা দিয়ে গঠিত। সেজন্য গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবণা খুব বেশি বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে এটিও ধারণা করা হচ্ছে, যেহেতু প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকাটি খুবই উজ্জ্বল এবং এটি থেকে অতিমাত্রায় অতিবেগুনী রশ্মি নির্গত হয়, তাই মানুষের জন্য সেখানে বসবাস করা সম্ভব নাও হতে পারে। তারপরও আরো নিখুঁত তথ্য পাওয়ার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদলের প্রধান ড. গিওলেম অ্যাংগ্লেডা এসকিউড বলেন, ‘এর আগেও অনেক গ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছে এবং পরে আরও অনেক গ্রহ আবিষ্কার করা হবে। কিন্তু কোন গ্রহটি মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী হবে সেটিই বের করাই গবেষণার মূল বিষয়। এই প্রজেক্টটি নিয়ে অনেকে কাজ করেছেন। অনেকের অবদান আছে গ্রহটি আবিষ্কারের পেছনে। আর পরবর্তীতে আমরা সে জন্যই হয়তো প্রক্সিমা বি তে বসবাস করতে পারব।’
প্রক্সিমা বি গ্রহটি সৌরজগতের বাইরে প্রক্সিমা সেনচাউরি ও আলফা সেনচাউরি নামক দুটি তারকার মধ্যে অবস্থান করছে। সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কৃত অন্যন্য গ্রহগুলোর মধ্যে এর অবস্থান সবচেয়ে কাছে।
প্রক্সিমা বি ও তার আবহাওয়া নিয়ে মোট দুটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে প্রক্সিমা বিতে প্রাণের অস্তিত্বের কথা জোর দিয়ে বলা হয়েছে। তবে সেখানে এটিও বলা হয়েছে যে, প্রক্সিমা বি গ্রহটি অতি উজ্জ্বল গ্রহ। এটি প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং তারকাটি প্রক্সিমা বিকে সরাসরি বিকিরণ করছে। তাই হয়তো সেটিকে বসবাস উপযোগী করা খুব একটা সহজ হবে না।
তবে গ্রহটির তামপাত্রা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে। এটির তাপমাত্রা প্রায় -৯০° এবং ৩০° সেলসিয়াস (-১৩০ এবং ৮৬ ফারেনহাইট) যা পৃথিবীর তাপতাত্রার কাছাকাছি। তবে গ্রহটিতে কোনো ঋতু নেই।
পৃথিবী থেকে ছায়াপথের দূরত্ত্ব হলো প্রায় এক লক্ষ আলোকবর্ষ। আর প্রক্সিমা বি-এর দূরত্ত্ব মাত্র চার আলোকবর্ষ। তাই সৌরজগতের বাইরে একেই সবচেয়ে কাছের গ্রহ বলা হচ্ছে।
পালে রেড ডট টিমের অধীনে হার্টফোর্ডশায়ার ইউনিভার্সিটি, লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি, স্পেনের ইনিস্টিটউট ডি অ্যাস্ট্রফিসিকা ডি অ্যান্ডালুসিয়া, ও জার্মানীর গটিনজেন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এই প্রোজেক্টটিতে কাজ করেছেন। বিজ্ঞানীরা হাই অ্যাকিউরেসি রেডিয়াল ভ্যালোসেটি প্লানার সার্চার এবং দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) ৩.৫ মিটার লা সিলা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে চিলির আটাকামা মরুভূমির থেকে এই গবেষণা চালিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা টেলিস্কোপটি দিয়ে প্রক্সিমা সেনচাউরি থেকে আসা আলো ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেপে প্রক্সিমা বি গ্রহটির আবিষ্কার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং এটি থেকে আসা আলোর ফ্রিকোয়েন্সির পরিবর্তন মেপে তার সাথে প্রদক্ষিণ করা গ্রহগুলোর কক্ষপথ, অবস্থান ও মহাকর্ষীয় আকর্ষণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
প্রক্সিমা বি গ্রহটি খুব উজ্জ্বল এবং প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে সেটি। তারকাটি প্রক্সিমা বি’কে সরাসরি বিকিরণ করছে। তাই হয়তো সেটিকে বসবাস উপযোগী করা খুব একটা সহজও হবে না।
ড. গিওলেম অ্যাংগ্লেডা এসকিউড আরো বলেন, ‘এর আগেও পৃথিবীর মত মানুষের বসবাসের উপযোগী গ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু তথ্য প্রমাণগুলো তেমন শক্তিশালী ছিল না। সেজন্য আমরা আরো বিশদভাবে গবেষণা শুরু করি। হাই অ্যাকিউরেসি রেডিয়াল ভ্যালোসেটি প্লানার সার্চার এবং দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) এটি আবিষ্কার করার জন্য অনেকভাবে সাহায্য করেছে আমাদের। ‘পালে রেড ডট’ প্রায় দুই বছর ধরে আমাদের সাথে আছে এবং আমাদেরকে সাহায্য করছে।’
প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকা থেকে অতিমাত্রায় বেগুণী রশ্মি নির্গত হয়। তাই সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা কিছুটা কঠিন হবে।
হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল সেন্টার ফর রিসার্চের প্রধান ড. মিক্কু টিউওমি বলেন, ‘যদি প্রক্সিমা বি তে বায়ুমণ্ডল থাকে এবং এবং পানির অস্তিত্ব থাকে, তাহলে অবশ্যই প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে। মানুষের বসবাসের জন্য প্রয়োজন বায়োকেমিক্যাল চক্র, সেটিও তখন সম্ভব হবে। আমরা ধারণা, করছি গ্রহটিতে মানুষের বসবাসের সব উপকরণ সেখানে আছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন। পরবর্তী কয়েক দশকে আমরা আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর পাব। তবে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব আবিষ্কারের জন্য এটিই উপযুক্ত স্থান।’
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির মহাশূন্য প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞানের গবেষক মার্টিন আর্চার বলেন, ‘এটি ভাল সংবাদ যে, আমাদের সময়কালেই পৃথিবীর বাইরে মানুষের বসবাস উপযোগী এমন একটি গ্রহ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আরো কিছু তথ্য খুব তাড়াতাড়ি হাতে পাব। তারপর আরো ভালভাবে এই গ্রহ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।’
কেন প্রক্সিমা বি নিয়ে বিজ্ঞানীদের এত আগ্রহ?
গ্রহটির তাপমাত্রা প্রায় (মাইনাস) -৯০° এবং ৩০° সেলসিয়াস (-১৩০ এবং ৮৬ ফারেনহাইট)। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এটিতে পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে।
এর আগে পৃথিবীর মত আবিষ্কৃত গ্রহগুলো।
ছবিতে প্রক্সিমা সেনচাউরি-সহ বিভিন্ন তারকার অবস্থান দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রক্সিমা সেনচাউরি সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কার হওয়া তারকার মধ্যে সবচেয়ে কাছের। অন্ধকার রাতে প্রক্সিমা সেনচাউর সহ অন্যন্য তারকাগুলো খালি চোখে পরিস্কারভাবে দেখা যায়।
মানুষ কি ‘প্রক্সিমা বি’ তে যেতে পারবে ?
প্রক্সিমা বি গ্রহটি আবিষ্কার হলেও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ সেখানে মানুষ পাঠানো সম্ভব হবে। তবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, পরবর্তী কয়েক দশকের মধ্যে গ্রহটিতে মানুষ পাঠানো সম্ভব হবে। প্রথমে রোবট পাঠিয়ে পরীক্ষামূলক তথ্যগুলো আবিষ্কার করা হবে। যদি মানুষের বসবাসের উপযোগী মনে হয়, তাহলে পরবর্তীতে মানুষ পাঠানো হবে। পৃথিবী থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার কিলোমিটার গতির মহাকাশ যান দিয়ে ২০ বছর ধরে ভ্রমণ করে গ্রহটিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে এখন পর্যন্ত এত দ্রুতগতি সম্পন্ন মহাকাশ যান মানুষের হাতে নেই। যদি কোনোদিন আবিষ্কার করা সম্ভব হয়, তাহলেই সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
এই ছবিটিতে প্রক্সিমা বি ও সেনচাউরির কক্ষপথ ও প্রদক্ষিণ গতি দেখানো হয়েছে। মাঝে মাঝে প্রক্সিমা বি ঘণ্টায় তিন মাইল বেগে সেনচাউরিকে প্রদক্ষিণ করে।
প্রক্সিমা বি সম্পর্কে আমরা আরও তথ্য জানতে পারবো কবে?
প্রক্সিমা বি গ্রহটি আবিষ্কারের পর থেকেই বিজ্ঞানীদের আগ্রহের শেষ নেই। তারা গ্রহটি নিয়ে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন কোনো তথ্য তারা পেলেই আবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। তবে গ্রহটিতে পৌঁছতে কয়েক দশক লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা।
ছবিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে প্রক্সিমা বি প্রক্সিমা সেনচাউরি ও আলফা সেনচাউরিকে কেন্দ করে প্রদক্ষিণ করে। প্রতি ১১ দিন পরপর একবার করে প্রক্সিমা সেনচাউরিকে প্রদক্ষিণ করে প্রক্সিমা বি।
বিজ্ঞানীরা চিলির আটাকামা মরুভূমি থেকে হাই অ্যাকিউরেসি রেডিয়াল ভেলোসিটি প্লানার সার্চার এবং দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) ৩.৫ মিটার লা সিলা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এই গবেষণা করেন।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
চিত্রে প্রক্সিমা বি ও সূর্যের অবস্থান দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রক্সিমা বি’য়ের আকার সূর্যের আকারের চেয়ে ছোট। তবে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ত্বের চেয়ে কাছে অবস্থান করছে প্রক্সিমা সেনচাউরি ও প্রক্সিমা বি গ্রহ দুটি।
সম্প্রতি দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) হেডকোয়ার্টার জার্মানীতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে এই প্রজেক্টটির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এই গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন ‘পালে রেড ডট’ নামের একটি সংস্থার একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী। তারা ‘দি ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি’র (ইএসও) অধীনে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহটি আবিষ্কার করেন।
ঘণ্টায় তিন মাইল বেগে প্রক্সিমা সেনচাউরিকে প্রদক্ষিণ করছে প্রক্সিমা বি গ্রহটি এবং একই সাথে নিজ অবস্থান থেকে তিন মাইল দূরে সরে যাচ্ছে।
ইএসওর পরিচালক টিম ডি জিইও সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা দিচ্ছেন। পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেছেন পালে রেড ডট নামের একটি
ল্যান্ডস্কেপ ছবিতে দক্ষিণ গোলার্ধের ছায়াপথ দেখানো হয়েছে। ছবির ডানদিকে দেখা যাচ্ছে উজ্জ্বল কারিনা নীহারিকা।
ছবিতে কয়েকটি তারকার তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে প্রক্সিমাও আছে এবং দেখা যাচ্ছে এটি সূর্যের চেয়ে ছোট।
যেহেতু প্রক্সিমা সেনচাউরি তারকাটি খুবই উজ্জ্বল এবং এটি থেকে অতিমাত্রায় অতিবেগুনী রশ্মি নির্গত হয়। তাই মানুষের জন্য প্রক্সিমা বি-তে বসবাস করা সম্ভব নাও হতে পারে।
ইনফোগ্রাফে মানুষের বসবাস উপযোগী কক্ষপথ ও তার অঞ্চল দেখানো হয়েছে। ছবির সবুজ অংশ দিয়ে ভ্রমণ করা গ্রহগুলো মানুষের বসবাসের উপযোগী। তার ভেতরেই অবস্থান করছে প্রক্সিমা সেনচাউরি ও পৃথিবী। ছবিটি পালে রেড ডটের তৈরি করা।