নিউজ ডেস্ক:
অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ অত্যন্ত ভালো অবস্থায় থাকলেও অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে -১৬.০৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাংকিং বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন কোর্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ফজলে কবির বলেন, ‘গত ১২ মাসে মুদ্রাস্ফীতি ৫.৪৪ শতাংশ। আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মুদ্রাস্ফীতি ৫.৮ শতাংশ পর্য্ন্ত যাওয়ার সুযোগ আছে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে আমরা অত্যন্ত ভালো পজিশনে আছি। তবে একটি মাত্র সূচকে আমাদের উদ্বেগ কাজ করে, সেটা হচ্ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের সাত মাসে এই খাতে প্রবৃদ্ধি মাইনাস ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ (-১৬.৯%) হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। আমাদের গবেষণা দল এরই মধ্যে যাচাই-বাছাই করছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বেশকিছু দেশে আমাদের গবেষণা দল জরিপ করে প্রকৃত কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। আমরা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসেছি। যেহেতু বিভিন্ন ফোরামে এই সেক্টরের নাম এসেছে, আমরা চা্চ্ছি, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে যাতে প্রবাসীরা টাকা পাঠাতে সম্পূর্ণ নিরুৎসাহিত হন। এজন্য যা করার দরকার করে যাচ্ছি।’
ব্যাংকিং সেক্টরে শ্রেণিকৃত ঋণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টরে প্রধান সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ হলো শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ও হার। যদিও জাতীয় পর্যায়ে ১০.৩৪ শতাংশ শ্রেণিকৃত ঋণ। তবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে এ হার আড়াই থেকে তিন গুণের ওপরে আছে, যা উদ্বেগজনক।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘চলতি বছরে ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং আগামী অর্থবছরে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কাজ করছি। যার আর্থিক যোগান দিতে হবে ব্যাংকিং খাতকে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেলে লক্ষ্যে পৌঁছা কঠিন হবে। কারণ, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো অন্যান্য ব্যাংকের মতো নয়। এদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে কোনো ধরনের কমিশন বা লাভ না নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তাসহ সরকারের এজেন্ডাগুলো বাস্তাবয়ন করা।’
বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির প্রিন্সিপাল কে এম জামশেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সে আরো বক্তব্য রাখেন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান।
প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রশিক্ষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ও এস এম মনিরুজ্জামান, গভর্নরের জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ফয়সাল আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক ড. হাবিবুর রহমান, এস এম রবিউল হোসেন ও আবু ফারাহ মো. নাসের।