শিরোনাম :
Logo বাধাগ্রস্ত করার যে চেষ্টাই হোক ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা Logo সিন্ডিকেটের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কুবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo ফিটনেসবিহীন কুবির বিআরটিসি বাসে আগুন Logo চাঁদপুরে টাইফয়েড টিকাদান কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo খুুবি উপাচার্যের সাথে হিট প্রজেক্টপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মতবিনিময় Logo চাঁদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিটি স্তরে সেবা গ্রহীতাদের স্বস্তি Logo নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন  Logo নারী হেনস্থা ও সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ Logo চাঁদপুর মডেল থানায় ব্র্যাকের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন Logo ইবি’র দুই নিখোঁজ শিক্ষার্থীর সন্ধানে কমিটি পুনর্গঠন

সেনসেশনাল মামলায় বাধ্য হয়ে খালাস দিয়েছি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:২৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • ৭৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তাদের দুর্বলতা ও পিপি-এপিদের মারাত্মক ত্রুটির কারণে বেশ কিছু সেনসেশনাল মামলায় আসামিদের আমরা বাধ্য হয়ে খালাস দিয়েছি।
গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত (মঙ্গলবার) আমরা একটা মামলা খালাস দিলাম। অপরাধীরা দুটো ছেলেকে মেরেছে, সাক্ষীদের মেরে ফেলেছে, বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে, কিন্তু সাক্ষ্য নাই। আইনের বাহিরে আমরা কিছু করতে পারি না।

চার্জশিট ও মামলা পরিচালনায় তদন্ত কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিদের দুর্বলতার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেনসেশনাল মামলায় আসামিদের খালাস পাওয়ার একমাত্র কারণ হলো, ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি যারা আছে তারা একেবারে ত্রুটিপূর্ণ ইনভেস্টিগেশন করে। প্লাস প্রসিকিউশনে যারা থাকে এরা মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণভাবে মামলা পরিচালনা করে থাকে।

এটি আইনের শাসনের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ, মন্তব্য করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘একটি উপন্যাস বা গল্প কেউ লিখতে পারে। কিন্তু বাদীপক্ষের ১০/১৫ জন সাক্ষীর নম্বর উল্লেখ করে কেস প্রমাণ করেছে বললেই একটা রায় হয় না। আইনের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা লাগে, এ সাক্ষ্যের সঙ্গে আইনের সম্পৃক্ততা ব্যাখ্যা দেওয়া লাগে, অপরাধ করেছে কি না এটা লাগে। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগুলো হুবুহু উদ্বৃতি দিয়ে তারপর বললেন, অপরাধ করেছে, তাকে ফাঁসি দিলাম, এটা রায় না,’ বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘যেহেতু আমরা হাইয়েস্ট কোর্টে আছি, আমাদের অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি, আপনাদের অনেক ত্রুটি আছে। আমাদের লেটেস্ট ডিসিশনগুলো আপনাদের বিবেচনা করা উচিত,  আইনের ব্যাখ্যা যেগুলো আমরা দিচ্ছি এগুলো পর্যালোচনা করা উচিত।

মুফতি হান্নানের রায়ের প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সম্প্রতি মুফতি হান্নানের কেসের রায় পুলিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পাঠিয়ে দিয়েছি। এই মামলাতে ট্রায়াল কোর্টের রায়ে ত্রুটি ছিল, হাইকোর্টে মামলা ত্রুটি ছিল। সংশোধিত করে আমরা রায় দিয়েছি। এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ট্রায়াল কোর্টের রায়ে ত্রুটি ছিল, হাইকোর্টে ত্রুটি ছিল, আমরা এটা সংশোধন করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এটি অনুভব করি যে, বিচারকদের এখনই রাইট টাইম ট্রেনিং দেওয়া দরকার। আমি বলি, প্রসিকিউশনে যারা কন্ডাক্ট করে তাদের ট্রেনিং দেওয়া দরকার, ইনভেস্টিগেশন যারা করে তাদেরকে ট্রেনিং করা দরকার। এটা না হলে ত্রুটিগুলো থেকে যাবে। আমরা আপিল বিভাগে যেহেতু ফাইনাল জাজমেন্ট দেই, ল সেটেল করে দেই, আমরা যদি সামান্যতম একটা শব্দ ব্যবহার করি সে শব্দে কনসিকুয়েন্স মারাত্মক হতে পারে। নিম্ন আদালতের বিচারকরা ভুল ব্যাখ্যায় অন্যায়ভাবে শাস্তি দিতে পারে। তাই আমরা খুব চিন্তা-ভাবনা করেই এটা করি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের খুলনার আলোচিত শেখ হাতেম আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা মামলায় আপিল বিভাগ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন। এর আগে রাজধানীর আলোচিত বুশরা হত্যা মামলায় আপিল বিভাগ থেকে সব আসামি খালাস পেয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাধাগ্রস্ত করার যে চেষ্টাই হোক ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা

সেনসেশনাল মামলায় বাধ্য হয়ে খালাস দিয়েছি !

আপডেট সময় : ১২:৪৫:২৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তাদের দুর্বলতা ও পিপি-এপিদের মারাত্মক ত্রুটির কারণে বেশ কিছু সেনসেশনাল মামলায় আসামিদের আমরা বাধ্য হয়ে খালাস দিয়েছি।
গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত (মঙ্গলবার) আমরা একটা মামলা খালাস দিলাম। অপরাধীরা দুটো ছেলেকে মেরেছে, সাক্ষীদের মেরে ফেলেছে, বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে, কিন্তু সাক্ষ্য নাই। আইনের বাহিরে আমরা কিছু করতে পারি না।

চার্জশিট ও মামলা পরিচালনায় তদন্ত কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিদের দুর্বলতার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেনসেশনাল মামলায় আসামিদের খালাস পাওয়ার একমাত্র কারণ হলো, ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি যারা আছে তারা একেবারে ত্রুটিপূর্ণ ইনভেস্টিগেশন করে। প্লাস প্রসিকিউশনে যারা থাকে এরা মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণভাবে মামলা পরিচালনা করে থাকে।

এটি আইনের শাসনের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ, মন্তব্য করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘একটি উপন্যাস বা গল্প কেউ লিখতে পারে। কিন্তু বাদীপক্ষের ১০/১৫ জন সাক্ষীর নম্বর উল্লেখ করে কেস প্রমাণ করেছে বললেই একটা রায় হয় না। আইনের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা লাগে, এ সাক্ষ্যের সঙ্গে আইনের সম্পৃক্ততা ব্যাখ্যা দেওয়া লাগে, অপরাধ করেছে কি না এটা লাগে। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগুলো হুবুহু উদ্বৃতি দিয়ে তারপর বললেন, অপরাধ করেছে, তাকে ফাঁসি দিলাম, এটা রায় না,’ বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘যেহেতু আমরা হাইয়েস্ট কোর্টে আছি, আমাদের অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি, আপনাদের অনেক ত্রুটি আছে। আমাদের লেটেস্ট ডিসিশনগুলো আপনাদের বিবেচনা করা উচিত,  আইনের ব্যাখ্যা যেগুলো আমরা দিচ্ছি এগুলো পর্যালোচনা করা উচিত।

মুফতি হান্নানের রায়ের প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সম্প্রতি মুফতি হান্নানের কেসের রায় পুলিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পাঠিয়ে দিয়েছি। এই মামলাতে ট্রায়াল কোর্টের রায়ে ত্রুটি ছিল, হাইকোর্টে মামলা ত্রুটি ছিল। সংশোধিত করে আমরা রায় দিয়েছি। এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ট্রায়াল কোর্টের রায়ে ত্রুটি ছিল, হাইকোর্টে ত্রুটি ছিল, আমরা এটা সংশোধন করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এটি অনুভব করি যে, বিচারকদের এখনই রাইট টাইম ট্রেনিং দেওয়া দরকার। আমি বলি, প্রসিকিউশনে যারা কন্ডাক্ট করে তাদের ট্রেনিং দেওয়া দরকার, ইনভেস্টিগেশন যারা করে তাদেরকে ট্রেনিং করা দরকার। এটা না হলে ত্রুটিগুলো থেকে যাবে। আমরা আপিল বিভাগে যেহেতু ফাইনাল জাজমেন্ট দেই, ল সেটেল করে দেই, আমরা যদি সামান্যতম একটা শব্দ ব্যবহার করি সে শব্দে কনসিকুয়েন্স মারাত্মক হতে পারে। নিম্ন আদালতের বিচারকরা ভুল ব্যাখ্যায় অন্যায়ভাবে শাস্তি দিতে পারে। তাই আমরা খুব চিন্তা-ভাবনা করেই এটা করি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের খুলনার আলোচিত শেখ হাতেম আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা মামলায় আপিল বিভাগ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন। এর আগে রাজধানীর আলোচিত বুশরা হত্যা মামলায় আপিল বিভাগ থেকে সব আসামি খালাস পেয়েছেন।