যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘বুটেক্স অ্যালামনাই ইউএসএ’ নামে নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। গত ২২ নভেম্বর (শনিবার) নিউইয়র্কের কুইন্সের হালাল ডাইনার রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত প্রাণবন্ত মিলনমেলায়, সশরীরে উপস্থিত সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রবাসী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনের উদ্দেশ্য, নীতি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন ইঞ্জিনিয়ার ফারুক হোসেন। পরে সর্বসম্মতিতে ২০২৬–২০২৭ মেয়াদের জন্য ৩১ সদস্যের কার্যকরী কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন বুটেক্সের ৩য় ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তারিকুল ইসলাম (তারিক) এবং সাধারণ সম্পাদক হন ১৫তম ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ার ড. মোঃ মজিবুর রহমান খান।
এ ছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফারুক হোসেন, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ আকবর, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার লিটন খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রাজিউল হাসান, অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ড. ইমরানুল ইসলাম, সহ অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নাফিউল মজিদ, সামাজিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আহসানুল হক জালাল, সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ড. শহীদুল কাদের, শিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মীর সালাউদ্দিন রবিন, সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবুল শহীদ সজল, ক্রীড়া সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মোহাম্মদ হাসান মিথুন, সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ড. তানজীম হোসেন সানী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার অবনী কুণ্ড, সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সোলাইমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ড. ফারহানা মমতাজ দিপা এবং সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার উম্মে হানি বর্ষা নির্বাচিত হন।
কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে আরও ১০ জন এবং উপদেষ্টা কমিটিতে ১৬ জন বুটেক্সিয়ান স্থান পান।
সভায় সদস্যদের ভোটাভুটিতে সর্বাধিক সমর্থন পাওয়া একটি নান্দনিক লোগোকে সংগঠনের অফিসিয়াল লোগো হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রবাসী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, নতুন সংগঠনটি বুটেক্সের আন্তর্জাতিক অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক বিস্তারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
‘আমাদের শিকড় ভুলিনি’ — সভাপতি তারিকুল ইসলাম
সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তারিকুল ইসলাম বলেন,
“আমরা আমাদের শিকড়কে কখনো ভুলে যাইনি। বুটেক্স অ্যালামনাই ইউএসএ সম্পূর্ণ নন-পলিটিকাল ও নন-প্রফিট সংগঠন। আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রবাসী বুটেক্সিয়ানদের একত্র করা নয়—বুটেক্সকে বিশ্বের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে একটি টেকসই নেটওয়ার্কে যুক্ত করা।
যুক্তরাষ্ট্রের জীবনযাত্রা, কর্মসংস্থান বাস্তবতা এবং বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ তৈরি করাও এ সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য।”
তিনি আরও বলেন,
“সেমিনার আয়োজন, দক্ষতা উন্নয়ন, দরিদ্র-মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের জব রেফারেন্স ও বাসস্থানের সহযোগিতা—এসব কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আমাদের মূল ভাবনা হলো—বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা যেন প্রয়োজনের সময় এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বাস্তব উপকার পায়।”
‘দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন’ — সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান
সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান বলেন,
“যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আনুমানিক দুই শতাধিক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার আছেন। দীর্ঘদিন ধরেই সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে আনার চিন্তা ছিল। ২০১৭ সালে ১৭ জন ইঞ্জিনিয়ার মিলে প্রথমবার এমন একটি সংগঠন গঠনের আলোচনা হয় তারেক ভাইয়ের বাসায়। পরে ২০২৩ সালে নিউইয়র্কে বড় পিকনিকে কানাডার বুটেক্সিয়ানরাও যোগ দেন, কিন্তু ভিসাজনিত কারণে বৈশ্বিক রূপ দেওয়া সম্ভব হয়নি। অবশেষে ২০২৫ সালের ২২ নভেম্বর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বার্ষিক সাধারণ সভা করি এবং সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুমোদন করি।”
তিনি বলেন,
“বিশ্বব্যাপী সকল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশনের পেট্রন সদস্য হতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইঞ্জিনিয়াররা রানিং মেম্বার ও লাইফটাইম মেম্বার হতে পারবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য—যোগাযোগ বৃদ্ধি, চ্যারিটি কার্যক্রম, এবং বুটেক্সকে যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক টেক্সটাইল কমিউনিটির সাথে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত করা।”
প্রবাসী বুটেক্সিয়ানদের বিশ্বাস, ‘বুটেক্স অ্যালামনাই ইউএসএ’ ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে বুটেক্স গ্র্যাজুয়েটদের জন্য পেশাগত, সামাজিক, সাংগঠনিক এবং চ্যারিটি কার্যক্রম আরও বিস্তৃত ও সক্রিয় করবে। শুধু বুটেক্স নয়, বিশ্বের সকল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যও এটি একটি বৃহত্তর সহযোগী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশা করা হয়।


















































