চুয়াডাঙ্গায় কৃষকদের সাথে চলছে এক প্রকার প্রতারণা। আসল কোম্পানির মোড়কের মধ্যে নকল ভুট্টা বীজ ঢুকিয়ে বিক্রি করছে এক ধরনের প্রতারক চক্র। প্রতারক চক্রের দুই সদস্য কে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গাসহ বেশ কিছু জেলায় প্রায় ৬ টনের বেশি নকল ভুট্টাবীজ ছড়িয়ে দিয়েছে এই প্রতারকচক্রটি।
গতকাল সোমবার ২৫ নভেম্বর দুপুরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন কুলচারা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। এ সময় একটি গোডাউন থেকে তিন বস্তা প্যাকেটজাত ভেজাল ভুট্টাবীজসহ চক্রের মূল হোতা ইমরান হোসেন (৩৫) ও সহযোগী মুজিবুর রহমানকে (৪০) পুলিশ আটক করে।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ভুট্টাবীজের আসল মোড়কে ফিড ভুট্টা রং করে ভরে আঠা দিয়ে সিল করে নতুনের মত করে কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে আসছে। এরপর কৃষকদের কাছে কম দামে বিক্রি করা হতো, যেখানে আসল বীজের কেজি মূল্য প্রতি ৬০০ টাকা হলেও এই নকল বীজ দিত ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারের আসাদুল ট্রেডিং ও নিশাদ এগ্রো সিডস–এর মালিক আসাদুল হকের অভিযোগের ভিত্তিতে।
বীজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক আসাদুল হক বলেন, একজন চাষী ফসল না ওঠার অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে আমি অনুসন্ধান শুরু করি। পরে জানতে পারি, আমাদের আসল মোড়ক কেটে বীজ বের করে ফেলে বাজার থেকে কেনা ভুট্টা রঙ করে ঢোকানো হচ্ছে। যেখানে আসল ভুট্টার কেজি বীজের দাম ৬০০ টাকা, সেখানে তারা সেই নকল বীজ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেছে। এটি কৃষকদের সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করার শামিল।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতারকচক্রদের তথ্যমতে, তারা এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ টনের বেশি নকল বিজ চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কুরিয়ারের মাধ্যমে বিক্রি করেছে। আর এই ৬ টন বীজ পরিমান হিসেবে করলে প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে রোপন করা সম্ভব।
অভিযানের নেতৃত্বদানকারী চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক ওসি খালেদুর রহমান বলেন, অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা গোডাউনে অভিযান চালান। আমরা দেখতে পাই—অরিজিনাল প্যাকেটগুলো ব্লেড দিয়ে খুব সূক্ষ্মভাবে কেটে ভেতরের বীজ বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর আঠা দিয়ে মোড়ক আবার আগের মতো করে দেওয়া হয়েছে। যাকে সাধারণ কৃষক সহজে বুঝতে পারবেন না। শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয়—এই নকল বীজ কুরিয়ারের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। এই প্রতারনার শিকার হয়েছে অনেক কৃষক।



















































