শিরোনাম :
Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ  Logo পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট Logo কুবিতে এক সাংবাদিক সংগঠনের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন

শরণার্থী শিবির থেকে উঠে আসা তরুণীর গল্প !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০২:০২:০২ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭
  • ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

জীবনটা সহজভাবে শুরু হয়নি। কাটেওনি সহজভাবে। কিভাবে কাটবে? সিরিয়া নামটাই যে তখন বিভীষিকা। অবশ্য এখনও। যাঁরা রোজ সেই নামটা যাপন করেন, তাঁরা জানেন সেখানে জীবনের মানে কি। তবে সে মানেও যে বদলানো যায়, অন্য অর্থে গড়া যায় রাস্তা, তার নজির মুজুন আলমেহান। এই বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবসে মুজুনকে নিজেদের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বেছে নিয়েছে ইউনিসেফ।

এই মুজুন কে বলুন তো? আপনার আমার মতোই খুব সাধারণ একজন। তবে জীবনটা ঠিক সাধারণ ছিল না কখনই। সিরিয়ার অস্থির পরিস্থিতিতে বেড়ে ওঠা। ২০১৩ সালে সেখান থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে কোনও রকমে এসে পৌঁছানো জর্ডানে। তার পরের গল্পটা ইতিহাস।

৩ বছরের উদ্বাস্তু জীবন। তার মধ্যে ১৮ মাস জাটারি উদ্বাস্তু শিবিরে। যেখানে ভবিষ্যত শুধুই বাল্যবিবাহ বা শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করে গতানুগতিক জীবন কাটিয়ে দেওয়া। তবে মুজুনের লক্ষ্য অন্য ছিল। তাই আর পাঁচটা শিশুর মতো শিকড় ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় তাঁর হাতে ছিল স্কুল থেকে দেওয়া কিছু বই।

তিনি বুঝেছিল, বই ছাড়া মুক্তি নেই। একমাত্র বই-ই বদলে দিতে পারে স্বপ্নের রং। সেভাবেই শুরু হয়েছিল তাঁর পথচলা। তবে পরিসরটা শুধু নিজের জীবনের গণ্ডিতেই আটকে থাকেনি। উদ্বাস্তু শিবিরের বাকি সমবয়সিদেরও স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিল মুজুন। সে স্বপ্নে শিক্ষা ছিল, স্বাস্থ্য ছিল, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি ছিল। সমবয়সীদের মধ্যে মুজুনের পাশে এসে দাঁড়ায় বেশিরভাগ মেয়েরা। সেখান থেকে শুরু হল এক অন্য লড়াই।

তবে এই লড়াইয়ে মুজুন পাশে পেয়েছিলেন ইউনিসেফকে। আর সামনে ছিল প্রয়াত অাদ্রে হেপবার্নের আদর্শ, যিনি নিজেও ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত ছিলেন। উনিশ বছর বয়সেই মুজুন ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত।

সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে আফ্রিকার দেশ চাদে গিয়েছিলেন মুজুন। দায়িত্ব ছিল সন্ত্রাস বিধ্বস্ত, যুদ্ধক্লান্ত শৈশবকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। তবে শুধু চাদই নয়, বিশ্ব জুড়ে এরকম প্রায় আড়াই কোটি শিশুকে পথ দেখাচ্ছেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে মানবউন্নয়ন খাতে বরাদ্দের দুই শতাংশ এই সব শিশুদের শিক্ষার খাতে ব্যয় করা হচ্ছে।

ইউনিসেফের একটি বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে ইউনিসেফের আওতায় থাকা শিশুদের শিক্ষার জন্য ২৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন।

তবে আমাদের চাওয়া আরেকটু বেশি। পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইয়ের মতো মুজুনও একটা নাম হয়ে উঠুন, আর তাকে সামনে রেখে পথ চলতে শুরু করুক আরও অনেক অনেক মুজুন। বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবসে এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে কি?

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন ও ইউনিসেফ ওয়েব

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ

শরণার্থী শিবির থেকে উঠে আসা তরুণীর গল্প !

আপডেট সময় : ০২:০২:০২ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

জীবনটা সহজভাবে শুরু হয়নি। কাটেওনি সহজভাবে। কিভাবে কাটবে? সিরিয়া নামটাই যে তখন বিভীষিকা। অবশ্য এখনও। যাঁরা রোজ সেই নামটা যাপন করেন, তাঁরা জানেন সেখানে জীবনের মানে কি। তবে সে মানেও যে বদলানো যায়, অন্য অর্থে গড়া যায় রাস্তা, তার নজির মুজুন আলমেহান। এই বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবসে মুজুনকে নিজেদের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বেছে নিয়েছে ইউনিসেফ।

এই মুজুন কে বলুন তো? আপনার আমার মতোই খুব সাধারণ একজন। তবে জীবনটা ঠিক সাধারণ ছিল না কখনই। সিরিয়ার অস্থির পরিস্থিতিতে বেড়ে ওঠা। ২০১৩ সালে সেখান থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে কোনও রকমে এসে পৌঁছানো জর্ডানে। তার পরের গল্পটা ইতিহাস।

৩ বছরের উদ্বাস্তু জীবন। তার মধ্যে ১৮ মাস জাটারি উদ্বাস্তু শিবিরে। যেখানে ভবিষ্যত শুধুই বাল্যবিবাহ বা শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করে গতানুগতিক জীবন কাটিয়ে দেওয়া। তবে মুজুনের লক্ষ্য অন্য ছিল। তাই আর পাঁচটা শিশুর মতো শিকড় ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় তাঁর হাতে ছিল স্কুল থেকে দেওয়া কিছু বই।

তিনি বুঝেছিল, বই ছাড়া মুক্তি নেই। একমাত্র বই-ই বদলে দিতে পারে স্বপ্নের রং। সেভাবেই শুরু হয়েছিল তাঁর পথচলা। তবে পরিসরটা শুধু নিজের জীবনের গণ্ডিতেই আটকে থাকেনি। উদ্বাস্তু শিবিরের বাকি সমবয়সিদেরও স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিল মুজুন। সে স্বপ্নে শিক্ষা ছিল, স্বাস্থ্য ছিল, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি ছিল। সমবয়সীদের মধ্যে মুজুনের পাশে এসে দাঁড়ায় বেশিরভাগ মেয়েরা। সেখান থেকে শুরু হল এক অন্য লড়াই।

তবে এই লড়াইয়ে মুজুন পাশে পেয়েছিলেন ইউনিসেফকে। আর সামনে ছিল প্রয়াত অাদ্রে হেপবার্নের আদর্শ, যিনি নিজেও ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত ছিলেন। উনিশ বছর বয়সেই মুজুন ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত।

সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে আফ্রিকার দেশ চাদে গিয়েছিলেন মুজুন। দায়িত্ব ছিল সন্ত্রাস বিধ্বস্ত, যুদ্ধক্লান্ত শৈশবকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। তবে শুধু চাদই নয়, বিশ্ব জুড়ে এরকম প্রায় আড়াই কোটি শিশুকে পথ দেখাচ্ছেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে মানবউন্নয়ন খাতে বরাদ্দের দুই শতাংশ এই সব শিশুদের শিক্ষার খাতে ব্যয় করা হচ্ছে।

ইউনিসেফের একটি বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে ইউনিসেফের আওতায় থাকা শিশুদের শিক্ষার জন্য ২৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন।

তবে আমাদের চাওয়া আরেকটু বেশি। পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইয়ের মতো মুজুনও একটা নাম হয়ে উঠুন, আর তাকে সামনে রেখে পথ চলতে শুরু করুক আরও অনেক অনেক মুজুন। বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবসে এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে কি?

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন ও ইউনিসেফ ওয়েব