সোমবার | ১০ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :

পিরিয়ডে সচেতন থাকতে মানুন নিয়মগুলো

  • Anis Khan
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে

পিরিয়ড বা মাসিক—এটি শুধু একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া নয়, বরং প্রতিটি নারীর জীবনের এক নীরব যাত্রা। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে শরীরের ভেতরে ঘটে যায় এক সূক্ষ্ম পরিবর্তনের অধ্যায়। এই কয়েকটি দিন যেন জীবনের গতিপথে এক বিশেষ সময়, যখন শরীর ও মনের মধ্যে সূক্ষ্ম এক টানাপোড়েন তৈরি হয়। কারও জন্য এটি সামান্য অস্বস্তি, আবার কারও জন্য তা পরিণত হয় অসহনীয় ব্যথা ও মানসিক অস্থিরতায়।

এই সময়ে শরীরের হরমোনের ভারসাম্যে আসে সামান্য পরিবর্তন, যার ফলে পেটব্যথা, পিঠব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা মেজাজের ওঠানামা—সবকিছুই যেন একসাথে এসে দরজায় কড়া নাড়ে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই কষ্টগুলোর অনেকটাই আমরা নিজের অজান্তে বাড়িয়ে ফেলি। কারণ, পিরিয়ডের সময় শরীর চায় যত্ন, বিশ্রাম ও সংবেদনশীল ব্যবহার; অথচ আমরা অনেকেই তা বুঝতে না পেরে এমন কিছু ভুল করি, যা শরীরের জন্য হয়ে ওঠে আরও কষ্টকর।
নারী শরীরের এই পরিবর্তন কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি এক শক্তির চিহ্ন—যে শক্তি নতুন জীবনের সম্ভাবনা বহন করে। তাই এই দিনগুলোতে নিজেকে লুকিয়ে রাখার নয়, বরং আরও সচেতন হয়ে নিজের যত্ন নেওয়ার সময়।

চলুন, আমরা জানি—এই সংবেদনশীল সময়ে কোন কোন অভ্যাসগুলো থেকে দূরে থাকলে পিরিয়ডের কষ্ট অনেকটাই কমানো সম্ভব-

পিরিয়ডের সময় ঘন ঘন যৌনাঙ্গ ধোবেন না:

অনেক মহিলারই পিরিয়ডের সময় টয়লেটে যাওয়ার সময় বারবার যৌনাঙ্গ পানি দিয়ে পরিষ্কার করার অভ্যাস থাকে। তবে এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। পিরিয়ডের সময় বারবার যোনাঙ্গ পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর পেছনের কারণ হল, পানি দিয়ে যোনি পরিষ্কার করার পর, নারীরা প্রায়শই এটি শুকানোর প্রক্রিয়াটি এড়িয়ে যান এবং এটি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণ:

অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন উভয়ই শরীরকে পানিশূন্য করে। যদিও কারোরই অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলো খাওয়া ঠিক নয়, তবে বিশেষ করে মহিলাদের অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল বা ক্যাফেইন খাওয়া উচিত নয়। পিরিয়ডের সময় ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলা উচিত। অন্যথায়, এগুলো পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যথার কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত মানসিক চাপও ক্ষতিকর:

মহিলাদের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ তাদের
পিরিয়ড ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আসলে, অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার ঝুঁকি বাড়ায়, যা পিরিয়ডের সময়ানুবর্তিতাকেও প্রভাবিত করে। পিরিয়ডের ভারসাম্যহীনতার কারণে, ব্যথা, খিঁচুনি এবং মেজাজের পরিবর্তনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সমস্ত সমস্যা এড়াতে, মানসিক চাপের মাত্রা কমানো গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য, যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

পিরিয়ডের সময় ডায়েট করবেন না:

স্বাভাবিক দিনগুলিতে শরীর ফিট রাখার জন্য ডায়েট করা ঠিক। কিন্তু পিরিয়ডের সময় ডায়েট করা এড়িয়ে চলা উচিত। আসলে, পিরিয়ডের সময় হরমোনগুলি ভারসাম্যহীন হতে শুরু করে, তাদের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সারা দিনে কমপক্ষে ৫ বার ছোট ছোট খাবার খাওয়া প্রয়োজন। পিরিয়ডের সময় সুস্থ থাকার জন্য, আপনার খাদ্যতালিকায় শুধুমাত্র পুষ্টিকর উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন। এই দিনগুলিতে অতিরিক্ত লবণ, তেল এবং মশলা খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পিরিয়ডে সচেতন থাকতে মানুন নিয়মগুলো

পিরিয়ডে সচেতন থাকতে মানুন নিয়মগুলো

আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

পিরিয়ড বা মাসিক—এটি শুধু একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া নয়, বরং প্রতিটি নারীর জীবনের এক নীরব যাত্রা। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে শরীরের ভেতরে ঘটে যায় এক সূক্ষ্ম পরিবর্তনের অধ্যায়। এই কয়েকটি দিন যেন জীবনের গতিপথে এক বিশেষ সময়, যখন শরীর ও মনের মধ্যে সূক্ষ্ম এক টানাপোড়েন তৈরি হয়। কারও জন্য এটি সামান্য অস্বস্তি, আবার কারও জন্য তা পরিণত হয় অসহনীয় ব্যথা ও মানসিক অস্থিরতায়।

এই সময়ে শরীরের হরমোনের ভারসাম্যে আসে সামান্য পরিবর্তন, যার ফলে পেটব্যথা, পিঠব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা মেজাজের ওঠানামা—সবকিছুই যেন একসাথে এসে দরজায় কড়া নাড়ে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই কষ্টগুলোর অনেকটাই আমরা নিজের অজান্তে বাড়িয়ে ফেলি। কারণ, পিরিয়ডের সময় শরীর চায় যত্ন, বিশ্রাম ও সংবেদনশীল ব্যবহার; অথচ আমরা অনেকেই তা বুঝতে না পেরে এমন কিছু ভুল করি, যা শরীরের জন্য হয়ে ওঠে আরও কষ্টকর।
নারী শরীরের এই পরিবর্তন কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি এক শক্তির চিহ্ন—যে শক্তি নতুন জীবনের সম্ভাবনা বহন করে। তাই এই দিনগুলোতে নিজেকে লুকিয়ে রাখার নয়, বরং আরও সচেতন হয়ে নিজের যত্ন নেওয়ার সময়।

চলুন, আমরা জানি—এই সংবেদনশীল সময়ে কোন কোন অভ্যাসগুলো থেকে দূরে থাকলে পিরিয়ডের কষ্ট অনেকটাই কমানো সম্ভব-

পিরিয়ডের সময় ঘন ঘন যৌনাঙ্গ ধোবেন না:

অনেক মহিলারই পিরিয়ডের সময় টয়লেটে যাওয়ার সময় বারবার যৌনাঙ্গ পানি দিয়ে পরিষ্কার করার অভ্যাস থাকে। তবে এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। পিরিয়ডের সময় বারবার যোনাঙ্গ পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর পেছনের কারণ হল, পানি দিয়ে যোনি পরিষ্কার করার পর, নারীরা প্রায়শই এটি শুকানোর প্রক্রিয়াটি এড়িয়ে যান এবং এটি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণ:

অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন উভয়ই শরীরকে পানিশূন্য করে। যদিও কারোরই অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলো খাওয়া ঠিক নয়, তবে বিশেষ করে মহিলাদের অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল বা ক্যাফেইন খাওয়া উচিত নয়। পিরিয়ডের সময় ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলা উচিত। অন্যথায়, এগুলো পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যথার কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত মানসিক চাপও ক্ষতিকর:

মহিলাদের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ তাদের
পিরিয়ড ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আসলে, অতিরিক্ত চাপ গ্রহণ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার ঝুঁকি বাড়ায়, যা পিরিয়ডের সময়ানুবর্তিতাকেও প্রভাবিত করে। পিরিয়ডের ভারসাম্যহীনতার কারণে, ব্যথা, খিঁচুনি এবং মেজাজের পরিবর্তনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সমস্ত সমস্যা এড়াতে, মানসিক চাপের মাত্রা কমানো গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য, যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

পিরিয়ডের সময় ডায়েট করবেন না:

স্বাভাবিক দিনগুলিতে শরীর ফিট রাখার জন্য ডায়েট করা ঠিক। কিন্তু পিরিয়ডের সময় ডায়েট করা এড়িয়ে চলা উচিত। আসলে, পিরিয়ডের সময় হরমোনগুলি ভারসাম্যহীন হতে শুরু করে, তাদের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সারা দিনে কমপক্ষে ৫ বার ছোট ছোট খাবার খাওয়া প্রয়োজন। পিরিয়ডের সময় সুস্থ থাকার জন্য, আপনার খাদ্যতালিকায় শুধুমাত্র পুষ্টিকর উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন। এই দিনগুলিতে অতিরিক্ত লবণ, তেল এবং মশলা খাওয়া এড়িয়ে চলুন।