ফ্রিল্যান্সারের বাংলা ‘মুক্ত পেশাজীবী’। নয়টা-পাঁচটা চাকরিতে আবদ্ধ নন তাঁরা। বাসা কিংবা যেকোনো স্থানে বসেই কাজ করতে পারেন। প্রয়োজন নিজের দক্ষতা, বিদ্যুৎ আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ। এই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আত্মনিয়োগ করে সফলতার মুখ দেখছেন তরুণ ফ্রিল্যান্সার মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল।
তরুণ ফ্রিল্যান্সার মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল এর বাড়ি রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুঞ্চী ২৮ কলোনী এলাকায়। তিন ভাই বোনের মধ্যে মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল সবার ছোট। পড়ালেখায় তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস। প্রযুক্তির প্রতি দারণ ঝুক থাকায় পড়ালেখা আর বেশি এগুয়নি। আগ্রহ জাগে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইন প্লাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রতি। আর এর জন্য শিখে নেন প্রয়োজনীয় কাজগুলো। লেগে পড়েন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে।
মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল অনলাইন প্লাটফর্মে মূলত জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মেটাভেরিফাই প্রসেস ফেসবুক এর লক আইডি আনলক ও স্টার বিক্রি করে একমাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ইনকামও করেছেন। তার সেই কাজ এখনও অব্যাহত আছে। স্বপ্ন দেখেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার। একদিকে এটাকে পেশা হিসাবে নিয়েছেন, অন্যদিকে এই কাজের যোগসূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশী-বিদেশী বহু মানুষের সাথে আন্ত:ব্যক্তিক যোগাযোগও বেড়েছে। বলা যায় তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুবই পরিচিত মুখ।
এ নিয়ে মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল এর সাথে কথা হলে তিনি জানান ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্ত পেশা। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করে মুক্তভাবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়। ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের বা প্রতিষ্ঠানের কাজ করে অর্থ উপার্জন করাই মূলত ফ্রিল্যান্সিং। কোনো কাজ শুরু করার জন্য সর্বপ্রথম দৃঢ় ইচ্ছা বা মনোবল এবং কঠিন পরিশ্রম করার মনমানসিকতা প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।
আধুনিকযোগে সবাই যখন এগিয়ে যাচ্ছে। তখন আমার চিন্তা-ভাবনা থেকে ফ্রিলান্সিংয়ের মত ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক মেটাভেরিফাই, লক আইডি আনলক ও স্টার বিক্রির কথা মাথায় আসে। একটা মেটাভেরিফাই করে প্রায় ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। পরবর্তীতে এই বিষয়টা আমি পেশা হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এর আগে জি-মেইল মার্কেটিং ভেরিফাই করেও বেশ সাড়া পেয়েছি। মেটাভেরিফাই ও স্টার বিক্রি করেও ভালো সারা পাচ্ছি।
অনলাইন প্লাটফর্মে নানা দিক ও বিষয় থাকার পরও কেন ফেসবুক মেটাভেরিফাইকে পেশাকে হিসেবে বেছে নিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল বলেন, ২০২৩ সালের শেষ এর দিকে খেয়াল করি ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তখন ভাবলাম মেটাভেরিফাই ও স্টার বিক্রি করে ভালো কিছু ইনকাম করা যাবে। যদিও প্রথমে আমার বিষয়টা বুঝতে অনেক টাকা লস হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এই কাজে আরো ভালো করে মনোযোগী হয়ে টাকা আয় করে সেই লস পুষিয়ে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমি ইউরোপ কান্ট্রিগুলোতে শুরু করেছিলাম। পরে বাংলাদেশে কাজ শুরু করি। এখন আমি সবার থেকেই ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
মোঃ কাউসার হোসেন টুটুল বলেন, আমি মেটাভেরিফাই ও স্টার বিক্রি করে প্রতিমাসে
৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ইনকাম করেছি। এখন রাজবাড়ী জেলার অধিকাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারী আমাকে চিনতে পেরেছে। এখানে আমি রাজবাড়ীর ছেলে হওয়ায় নিজ জেলায় বসেই কাজ করতে পারছি। এটা যেমন বেশ সুবিধা হয়েছে।
অন্যদিকে এটিকে পেশা হিসাবে নিলেও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা কিন্তু বেশ উপকৃত হচ্ছে। আমি চাই রাজবাড়ী জেলার ফেসবুক ব্যবহারকারী কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা আরো বেশি অ্যাকটিভ হোক। আমার দিক থেকে সবারই প্রতি আন্তরিকতার কমতি হবে না। আমিও সবার সহযোগিতা চাই। রাজবাড়ীর আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই। আমি চাই ফেসবুক থেকে রাজবাড়ীর মানুষও টাকা আয় করুক।