এসময় বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন শিমুল হোসেনকে মারধর করে পুলিশ সদস্যরা। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে তাকে পিক-আপ ভ্যানেও তোলা হয়। সেই সাথে চলে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ডিবিসির চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিমকেও হেনস্তা করে পুলিশ সদস্যরা। এসময় তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। গতকাল রবিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অভিযোগ পেয়ে সাতগাড়ি এলাকার একটি পারিবারিক বিবাদের মীমাংসায় যান চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাসরিন আক্তারসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এসময় নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ডিবিসি নিউজের ক্যামেরা পারসন শিমুল হোসেন। পুলিশ সদস্যরা তার বাড়ির সামনে গিয়ে ওই অভিযুক্ত এক ব্যক্তির ব্যাপারে শিমুলের কাছে জানতে চান। শিমুল তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হেনস্তা করে পুলিশ কনস্টেবল শাহীন। তার কাছে টেলিভিশনের আইডি কার্ড দেখতে চায় পুলিশ কনস্টেবল। এক পর্যায়ে বিষয়টি সদর থানার ওসি শেখ সেকেন্দার আলীকে জানানো হলে আরও ক্ষুব্ধ হয় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা।
সেই সাথে যোগ দেয় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুন। এসআই মামুন ও এএসআই নাসরিনের নির্দেশে চিত্র সাংবাদিক শিমুলকে পিকআপ ভ্যানে তোলা হয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিম। এসময় তিনি পিকআপ ভ্যানের ছবি তুলতে গেলে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এসআই মামুন। ভেঙে ফেলা হয় সাংবাদিকের ব্যবহৃত ফোনটি। পরে বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলে ওই চিত্র সাংবাদিককে পিক-আপ ভ্যান থেকে নামিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্যরা।
চিত্র সাংবাদিক শিমুলের অভিযোগ, শুরু থেকেই তুই-তাকারি করে মারমুখী আচরণ করেন পুলিশ সদস্যরা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। গালিগালাজের সাথে পিক-আপ ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে গিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তারা। স্থানীয় লোকজনও এর প্রতিবাদ করেন।
ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, প্রথমে পুলিশ সদস্যদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কথা থানার ওসিকে জানানো হলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পুলিশ সদস্যরা। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমাকেও হেনস্তা করা হয়। কেড়ে নেয় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানের সাথে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। পরে যোগাযোগ করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদের সাথে। তিনি জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য সাংবাদিকদের কাছে সময়ও চান তিনি।
এদিকে, এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. মানিক আকবর, দৈনিক পশ্চিমাঞ্চলের প্রকাশক আজাদ মালিতা, দৈনিক মাথাভাঙ্গার সম্পাদক সরদার আল আমিন, দৈনিক সময়ের সমীকরণের প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, দৈনিক আকাশ খবরের সম্পাদক জান্নাতুল আওলিয়া নিশিসহ অন্যান্য সাংবাদিকেরা। এর উপযুক্ত শাস্তি না হলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের ঘোষনাও দেয় তারা।