বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

ইবিতে পরীক্ষা দিতে আসায় আটক নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ পরীক্ষা দিতে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে আটককৃত হয়। জানা যায়, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। পূর্ববর্তী তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের তৃতীয় তলায় ৩১৫ নম্বর কক্ষ থেকে মামুনুরকে আটক করা হয়।

আজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-১৯ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয় বলে জানা যায়। আর এই পরীক্ষায় মামুনুর রশিদের অংশগ্রহণের কথা জানতে পেরে বিভাগে উপস্থিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি তাকে গাড়িতে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কর্মীরা ও শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে সেখানে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীতে শিক্ষকরা বিষয়টির তদন্তের মাধ্যমে উন্মোচিত করার আশ্বাস দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইয়াশিরুল কবীর, তানভীর মন্ডল, গোলাম রাব্বানী এবং অন্যান্য সদস্যরা প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগীয় শিক্ষকদের সহযোগিতায় মামুনুরকে ইবি থানায় সোপর্দ করা হয়।

এ সময় ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘দোসরদের ঠিকানা, ইবিতে হবে না’; ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’; ‘দিয়েছি ত রক্ত, আরো দেব রক্ত’; ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘ছাত্রলীগের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’; ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’; ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এই মামুনুর রশিদ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়েছে। তারও আগে শিক্ষার্থীদের মারধরও করেছে সে। আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের একজনকে মোল্লা বলে কটাক্ষ এবং অন্যান্যের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আজকেও সে ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা দিতে এসেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, ছাত্রলীগের দোসরদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না৷

সহকারী প্রক্টর ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে বিভিন্ন সময় যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, তার অংশ হিসেবে আজকের ঘটনাটা আমাকে শঙ্কিত করেছে। এই ছেলের নামে বিভিন্ন অভিযোগ আছে। সে একে ত নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য, তার ওপর আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ছিল। আজকে সে পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে। আমি শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তাদের সহায়তায় আমরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছি। এই ছেলেকে আমরা থানা হেফাজতে দিয়ে গেলাম এবং পরবর্তীতে আমরা অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি পদে আছে মামুনুর। একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনে আছে সে। আজকে সে পরীক্ষা দিতে এলে যেন মব সৃষ্টি না হয়, এ জন্য শিক্ষকদের মাধ্যমে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular