কুরস্কে ইউক্রেনীয়দের জন্য দুটি পথ খোলা, আত্মসমর্পণ অথবা মৃত্যু: পুতিন

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০২:৪০:০৯ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • ৭০৭ বার পড়া হয়েছে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির ধারণাকে সমর্থন করেছেন, তবে এর বাস্তবায়ন নিয়ে বেশ কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছেন। অপরদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের অবস্থানকে ‘প্রতারণামূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক মার্কিন আলোচনার পর ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু পুতিন বলেছেন, ‘পরিকল্পনাটি ঠিক আছে, আমরাও এটি সমর্থন করি, তবে কিছু প্রশ্ন আছে যা আলোচনা করা দরকার।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতির ফলে ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং সংকটের মূল কারণগুলো দূর করতে হবে।

পুতিন ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, ‘যদি যুদ্ধবিরতি হয়, তাহলে ইউক্রেন কী এই সময়ে পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ করবে? সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেবে? নাকি এগুলো কিছুই করবে না? প্রশ্ন হলো—এসব কে নিয়ন্ত্রণ করবে?’

এছাড়া, তিনি ইউক্রেনের সামরিক কার্যক্রমের ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘কে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে তা নির্ধারণ করবে কে? কীভাবে এটি বাস্তবায়িত হবে?’

পুতিন আরও দাবি করেন যে, ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্স্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল, তবে এখন রাশিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, ‘ওরা পালানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা নিয়ন্ত্রণে রয়েছি। তাদের দুটি পথ খোলা—হয় আত্মসমর্পণ করো নতুবা মৃত্যুবরণ করো।’

পুতিনের বক্তব্যের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘তিনি সরাসরি না বললেও আসলে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুতিন সরাসরি ট্রাম্পকে বলতে ভয় পাচ্ছেন যে তিনি এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান এবং ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে চান।’

জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতির জন্য এমন শর্ত দিয়েছে যা কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

পুতিনের মন্তব্যের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল, গ্যাস এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পৌঁছান এবং পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। তবে এই বৈঠক আসলেই হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উইটকফের বিমান মস্কো ছেড়েছে, কিন্তু মস্কো বা ওয়াশিংটন—কেউই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত ও শুক্রবার সকালে উভয় পক্ষ নতুন ড্রোন হামলার অভিযোগ করেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরে একটি হামলায় সাতজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় তুয়াপসে শহরের একটি তেল স্থাপনায় বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার ফলাফল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুরস্কে ইউক্রেনীয়দের জন্য দুটি পথ খোলা, আত্মসমর্পণ অথবা মৃত্যু: পুতিন

আপডেট সময় : ০২:৪০:০৯ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির ধারণাকে সমর্থন করেছেন, তবে এর বাস্তবায়ন নিয়ে বেশ কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছেন। অপরদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের অবস্থানকে ‘প্রতারণামূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক মার্কিন আলোচনার পর ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু পুতিন বলেছেন, ‘পরিকল্পনাটি ঠিক আছে, আমরাও এটি সমর্থন করি, তবে কিছু প্রশ্ন আছে যা আলোচনা করা দরকার।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতির ফলে ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং সংকটের মূল কারণগুলো দূর করতে হবে।

পুতিন ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, ‘যদি যুদ্ধবিরতি হয়, তাহলে ইউক্রেন কী এই সময়ে পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ করবে? সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেবে? নাকি এগুলো কিছুই করবে না? প্রশ্ন হলো—এসব কে নিয়ন্ত্রণ করবে?’

এছাড়া, তিনি ইউক্রেনের সামরিক কার্যক্রমের ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘কে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে তা নির্ধারণ করবে কে? কীভাবে এটি বাস্তবায়িত হবে?’

পুতিন আরও দাবি করেন যে, ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্স্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল, তবে এখন রাশিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, ‘ওরা পালানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা নিয়ন্ত্রণে রয়েছি। তাদের দুটি পথ খোলা—হয় আত্মসমর্পণ করো নতুবা মৃত্যুবরণ করো।’

পুতিনের বক্তব্যের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘তিনি সরাসরি না বললেও আসলে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুতিন সরাসরি ট্রাম্পকে বলতে ভয় পাচ্ছেন যে তিনি এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান এবং ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে চান।’

জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতির জন্য এমন শর্ত দিয়েছে যা কোনোভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

পুতিনের মন্তব্যের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল, গ্যাস এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পৌঁছান এবং পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। তবে এই বৈঠক আসলেই হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উইটকফের বিমান মস্কো ছেড়েছে, কিন্তু মস্কো বা ওয়াশিংটন—কেউই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত ও শুক্রবার সকালে উভয় পক্ষ নতুন ড্রোন হামলার অভিযোগ করেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরে একটি হামলায় সাতজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় তুয়াপসে শহরের একটি তেল স্থাপনায় বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার ফলাফল।