যুক্তরাজ্য সরকার সম্প্রতি ভিসা নিয়মে পরিবর্তন এনে নতুন নীতি ঘোষণা করেছে। এই নতুন নিয়ম প্রধানত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। দেশজুড়ে তীব্র অভিবাসনবিরোধী মনোভাব, ডানপন্থী প্রবণতা এবং অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষাপটে বুধবার (১২ মার্চ) নতুন নিয়ম ঘোষণা করা হয়, যা দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নিয়োগকর্তাদের বিদেশি কর্মী নিয়োগের আগে দেশে বসবাসরত বিদেশি স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে, বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য নিয়োগকর্তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, তারা ইতিমধ্যে ওই দেশে বসবাসরত বিদেশি কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করেছেন। এই পদক্ষেপটি অভিবাসনের মাত্রা কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নেয়া হয়েছে এবং বিদেশি কর্মী নিয়োগের ওপর নির্ভরতা কমাবে বলে সরকার আশা করছে।
এছাড়া, নতুন নিয়মে দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য ন্যূনতম বেতন বাড়ানো হয়েছে। এপ্রিল থেকে প্রতিবছর ২৩ হাজার ২০০ ইউরো থেকে বেড়ে ২৫ হাজার ইউরো অথবা প্রতি ঘণ্টায় ১২.৮২ ইউরো করা হবে।
স্বাস্থ্য খাতে আন্তর্জাতিক কর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী স্টিফেন কিনক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যকর্মীরা আমাদের সামাজিক স্বাস্থ্য খাতে অপরিসীম অবদান রাখেন, এবং তাদের কাজের মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।’
এছাড়া, শিক্ষার্থী ভিসার জন্য নতুন নিয়ম কঠোর করা হয়েছে, বিশেষত স্বল্পমেয়াদি ইংরেজি ভাষা কোর্সের ক্ষেত্রে। সরকার এ পদক্ষেপটি সিস্টেমের অপব্যবহার রোধে নিতে চায়।
বিশেষ করে, যারা ৬ থেকে ১১ মাসের জন্য ইংরেজি শিখতে যুক্তরাজ্যে আসছেন, তাদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তবে, যারা আসলে পড়াশোনা করতে চান না বা কোর্স শেষে দেশ ত্যাগ করতে চান না, তাদের মাধ্যমে এই রুটের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া, যারা বারবার অভিবাসন ও কর্মসংস্থান আইন ভঙ্গ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিদেশি কর্মী নিয়োগ থেকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। গত দুই বছরে ৪৭০টিরও বেশি স্পন্সর লাইসেন্স বাতিল করেছে সরকার।
অভিবাসন ও নাগরিকত্বমন্ত্রী সীমা মালহোত্রা বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, যারা যুক্তরাজ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের যত্নে সহায়তা করতে এসেছেন, তারা শোষণের শিকার না হন।’
এছাড়া, পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ভিসা আবেদন জমা পড়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ থেকে কম।