নিউজ ডেস্ক:
বছরটা শুরুই হয়েছিল বলিউড ব্রেকআপ দিয়ে। রণবীর কাপুর এবং ক্যাটরিনা কাইফের ব্রেকআপ দিয়ে শুরু হওয়া বৃত্তটা যেন সম্পূর্ণ হল আরবাজ-মালাইকার বিচ্ছেদে এসে।
হলিউডেও ব্র্যাঞ্জেলিনার ডিভোর্স এবং পরবর্তী কাস্টডি ব্যাট্ল নিয়ে সরগরম বাজার। এর মধ্যে দেখে নেয়া যাক কিছু বলিউড কাপ্লকে, যাঁরা এই বিয়ে ভাঙার মৌসুমেও উদ্যাপন করে চলেছেন নিজেদের দাম্পত্য।
রীতেশ দেশমুখ-জেনেলিয়া দেশমুখ
কপিবুক ‘হ্যাপি ফ্যামিলি’ বলতে যা বোঝায়, রীতেশ-জেনেলিয়া তাই-ই। অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি পর্দার বাইরেও সফলভাবেই ধরে রেখেছেন এই জুটি। যদিও বিয়ের পর জেনেলিয়া কেরিয়ারের দিকে আর মন দেননি। বরং দুই সন্তানকে নিয়ে সংসারটাই করছেন মন দিয়ে। দু’জনের মধ্যেকার চার্ম অটুট আছে প্রথমদিনের মতোই। এখনও মাঝরাতে কফি কাপের আড্ডায় খুঁজে পান একে অন্যকে। প্রথমটায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলেকে নিয়ে বেশ খারাপ ধারণাই ছিল জেনেলিয়ার। ভেবেছিলেন, মন্ত্রীর ছেলেরা যেমন হয়, তার চেয়ে আর কতই বা আলাদা হবেন রীতেশ! আলাপের পর ভুলটা ভাঙে। রীতেশের কথায়, ‘আমাদের প্রেমে পড়াটা একটা লম্বা প্রসেস ছিল। প্রেমের আগেও বন্ধুত্বটা জমজমাট হয়েছিল। ’ নায়কের মতে, নিজের পরিবার নিয়ে যদি কেউ খুশি থাকে, কিছুতেই অন্য কোথাও সুখ খুঁজতে যাবে না সে। তবে দেদার খুনসুটিও হয় দু’জনের। জেনেলিয়ার স্মৃতিশক্তিকে নাকি অসম্ভব ভয় পান রীতেশ! তাঁর ছোটখাটো সব ভুল নাকি রেকর্ড হয়ে থাকে জেনেলিয়ার মাথায়!
আমির খান-কিরণ রাও
‘লগান’এর সেট থেকে প্রেম। মিস্টার পারফেকশনিস্টের ‘পারফেক্ট’ পার্টনার একমাত্র কিরণই হতে পারতেন বোধহয়। বাড়ি আর কাজের জায়গায় একে অন্যের পরিপূরক আমির-কিরণ। স্ক্রিপ্ট থেকে প্রোডাকশন— সবকিছুতেই মাথা ঘামাতে হয় কিরণকে। আমিরের প্রযোজনা সংস্থা বকলমে কিরণই দেখেন। আমির এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, ‘কিরণের সামনে আমার নিজেকে দেহাতি মনে হয়! সারাক্ষণই ওর থেকে কিছু না কিছু শিখে চলেছি!’ আমিরের মন্তব্যটি অসাংবিধানিক। কিন্তু নিজেকেই ‘অশিক্ষিত’ বলতে চেয়েছেন তিনি। অভিনয়সহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমিরের পরামর্শদাতা কিরণ। তাঁকে দেখেই আমির ভেগান হয়েছেন। আগে ডেয়ারি প্রডাক্ট খেলেও এখন পুরোপুরি ভেগান দু’জনে। একসঙ্গে যোগাভ্যাসও করেন। সন্তানের জন্ম দেয়া নিয়ে একবার সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পাঁচ বছর আগে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম হয়েছে তাঁদের ছেলে আজাদের। তাকে নিয়ে এখন আনন্দেই আছেন দু’জন। বিয়ের দিনটা প্রতিবারই উদ্যাপন করেন দু’জনে মিলে। এবার যেমন ১১তম বিবাহবার্ষিকীটা অরুণাচলে কাটিয়েছেন আমির-কিরণ।
সাইফ আলি খান-কারিনা কাপুর খান
‘অভিজাত’ শব্দটা মাথায় আসতে বাধ্য এঁদের দেখলে। কারিনা মা হবেন আর ক’দিনের মধ্যে। অন্তঃসত্ত্বা বেগমজানকে যথাসম্ভব আগলে রাখছেন ছোট নবাব। বেবি বাম্প নিয়েই একটানা কাজ করে চলেছেন কারিনা। পার্টি থেকে ফটোশ্যুট— এমনকী, ছবির কাজও করেছেন এই অবস্থায়। সেফ মজা করে বলেছেন, তাঁদের সন্তানও নাকি মেহবুব স্টুডিওতেই জন্ম নেবে! শাশুড়ি শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গেও ভালই বনে কারিনার। শর্মিলা বলে থাকেন, পুত্রবধূকে নিয়ে তিনি গর্বিত। সাইফের সঙ্গে বয়সের পার্থক্য কিংবা সাইফের পুরনো দাম্পত্যের ব্যাগেজ— কোনোকিছুই ছায়া ফেলেনি সাইফিনার দাম্পত্যে। কাজের ক্ষেত্রেও সাধারণত নাক গলান না একে অন্যের সিদ্ধান্তে। কারিনার ‘সাইজ জিরো’ যে মোটেই পছন্দ ছিল না, সেটা মুখের উপর বলতে বাধেনি সাইফের। আপাতত সন্তান-সম্ভবা কারিনার অবিরাম কাজ করে যাওয়া চিন্তায় ফেলেছে সাইফকে। কারিনাকে বেশি কাজ করতে বারণ করেছেন তিনি। এই ব্যাপারটায় ‘সাইফ’ থাকাই বাঞ্ছনীয় যে!
শাহিদ কাপুর-মীরা রাজপুত
দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের সাহিত্যের ছাত্রীর সঙ্গে বলিউডের প্রথমসারির নায়কের বিয়ে! শাহিদ-মীরার বিয়ের খবরটা জানাজানি হওয়ার পর রূপকথার মতোই লেগেছিল সকলের। বয়সের ফারাক আছে দু’জনের। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ হওয়া সত্ত্বেও প্রেমটা চুটিয়ে করেছিলেন দু’জন। সেই সময় থেকে সন্তান হয়ে যাওয়ার পরেও শাহিদ-মীরার ‘পিডিএ’ কিন্তু একই রকমভাবে সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপিয়ে চলেছে। স্ত্রী’র খেয়াল রাখার ব্যাপারে শাহিদ পুরো নম্বর পাবেন। বিমানবন্দর থেকে স্নানঘর— মীরার ছবি তোলা আর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা নিয়ে রীতিমতো ‘অবসেস্ড’ শাহিদ। মিশার জন্মের সময়ও হাসপাতালের বিছানা থেকে মীরার ছবি পোস্ট করেছিলেন শাহিদ। যদিও মীরার স্নানের সময়ের ছবি পোস্ট করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শাহিদ। সুযোগ পেলেই দু’জন বেরিয়ে পড়েন ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে নিয়ে। পার্টি কিংবা র্যাম্পেও হাত ধরাধরি করে চলে যান মাঝে মাঝেই। শাহিদের নিজস্ব ক্লোদিং লাইন ‘স্কাল্ট’এর হয়েও ক্যাম্পেনিং করেছেন মীরা। বলিউডে এই মুহূর্তের ‘হটেস্ট কাপ্ল’এর শিরোপা সম্ভবত এঁদেরই প্রাপ্য!
অক্ষয় কুমার-টুইঙ্কাল খান্না
মিসেস ফানিবোন্স যে তাঁর মিস্টার খিলাড়িকে ভালমতোই ‘চালনা’ করেন, সেটা বলিউড কেন, সাধারণ দর্শকেরও জানতে বাকি নেই! বিয়ের পর পরই অক্ষয়ের সঙ্গে বিভিন্ন নায়িকার নাম জড়াতেই শক্ত হাতে রাশ ধরেছিলেন টুইঙ্কাল। শোনা যায়, তাঁদের দাম্পত্যে শাশুড়ি ডিম্পল কাপাডিয়াও বেশ নাক গলাতেন। কিন্তু সবটা সামলে বিয়ের ১৫ বছর পরেও দিব্যি আছেন অক্ষয়-টুইঙ্কাল। ছেলে আরভ আর মেয়ে নিতারাকে নিয়ে দু’জনে কেপ টাউনে ঘুরে এলেন সদ্য। প্রচুর সেল্ফি আর ছবি শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অক্ষয়-টুইঙ্কালের প্রেমের শুরু শ্যুটিংয়ের ১৫ দিনের আউটডোরে। ক্যাজুয়ালিই শুরুটা করেছিলেন। যখন জড়িয়ে পড়লেন, তখনও বিয়ের আগে অক্ষয়কে নানা রকম শর্ত দিয়েছিলেন টুইঙ্কাল। বলেছিলেন, তাঁর আগামী ছবি ‘মেলা’ ফ্লপ করলে তবেই নাকি বিয়ে করবেন অক্ষয়কে! তাঁর পরিবারে কার কী অসুখ-বিসুখ আছে, সবটা জেনে চার্ট বানিয়েছিলেন টুইঙ্কাল! এখনও রাত ৯টার মধ্যে অক্ষয়ের বেডসুইচ অফ করে দেন তাঁর আদরের টিনা (টুইঙ্কালের ডাক নাম)। আর নিজের কলাম আর বই প্রকাশের আগে খসড়াটা সকলের আগে অক্ষয়কে দিয়েই পড়ান ফানিবোন্স। দশের মধ্যে নম্বরও দিতে হয় দস্তুরমতো! সব মিলিয়ে নরমে-গরমে দু’জনের ইনিংস চলছে ভালই।