মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায় বাসার পেছনের ঝোপ থেকে ওই নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ওই নারী তার নবজাতক সন্তানকে নয়তলা থেকে ফেলে দেন।
শিশুটির বাবা উসমান গণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তার বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়।
পুলিশ জানায়, বাচ্চাকে খাইয়ে রাত ২টার দিকে ঘুমিয়ে ছিলেন মা তৃষা আক্তার। তার স্বামী ডা উসমান গণি ঘুমিয়ে ছিলেন আরেক রুমে। ঘরে শিলা ও মিম নামের গৃহপরিচারিকা এবং তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া ছিলেন। রাত পৌনে ৪টার দিকে তৃষার চিৎকারে প্রতিবেশীরাসহ বাসার সবাই জেগে ওঠেন।
তিনি জানান, তার বাচ্চাটি পাওয়া যাচ্ছে না। পরে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গৃহপরিচারিকার মাধ্যমে জানতে পারেন শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোপে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই গৃহপরিচারিকা, নবজাতকের মা ও তার বন্ধবীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মা তৃষা আক্তারকে আটক করে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তৃষা নবজাতক শিশুটিকে ভবন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
স্বজনরা জানান, ডা. উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী তৃষা আক্তার। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলা নোয়াগাঁও এলাকার এনায়েত উল্লাহর মেয়ে।
তাদের পরিবারে বোরাক নামের দেড় বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। সাতদিন আগে ডা. উসমান গণির মাধ্যমে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতকটির জন্ম হয়।
বাসায় থাকা তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া বলেন, ‘তৃষার বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। তাই বেশিরভাগ সময় ডিপ্রেশনে থাকতেন তৃষা আক্তার। ’
ভৈরব থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নবজাতকের মা তৃষা আক্তার নয়তলার বেলকনির জানালা দিয়ে শিশুটিকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেন। এ ঘটনায় তার স্বামী চিকিৎসক উসমান গণি মামলা করেছেন। ’
‘শিশুটির মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনায় মা তৃষা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে’, বলে জানান ওসি।