শিরোনাম :
Logo কয়রায় বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ Logo প্রধান উপদেষ্টা ও কোসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাত Logo ইসরায়েল মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে: ট্রাম্প Logo শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসিবাদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল: শফিকুর রহমান Logo চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সাইদ হোসেন অপু চৌধুরীর মনোনয়নপত্র জমা Logo চাঁদপুর জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত Logo ইবিতে জুলাই-৩৬ পরেও আবার কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ২৫ জুন শুরু হচ্ছে রাবির কলা অনুষদের ৩য় আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের ডিবি টিমকে চাঁদপুর জেলা পুলিশের পুরস্কার প্রদান Logo কচুয়ায় মিলন হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

কচুয়ায় মিলন হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

মাদ্রাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) শ্বাসরোধ এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে আসামী শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেনকে (২৮) মৃত্যুদন্ড এবং অপর আসামী মো. রাব্বি হোসেনকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। মিলন স্থানীয় চাপাতলী মাদ্রাসা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী শামিম হোসেন কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন পাশবর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাব্বি হোসেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, হত্যার শিকার মিলনের পিতা তাজুল ইসলামের সাথে আসামীদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিলো। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর আনুমান ১টার দিকে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)।

এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আসামী শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড় জনৈকি ইব্রাহিম খলিলের ধনচের জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামীদের নাম পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামী সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামীদের থানা হেফাজতে নেন।

এই ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। আসামীদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

রায়ে আসামী শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদন্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অপর আসামী রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কয়রায় বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ

কচুয়ায় মিলন হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

আপডেট সময় : ০৫:৫২:৪৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

মাদ্রাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) শ্বাসরোধ এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে আসামী শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেনকে (২৮) মৃত্যুদন্ড এবং অপর আসামী মো. রাব্বি হোসেনকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। মিলন স্থানীয় চাপাতলী মাদ্রাসা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী শামিম হোসেন কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন পাশবর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাব্বি হোসেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, হত্যার শিকার মিলনের পিতা তাজুল ইসলামের সাথে আসামীদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিলো। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর আনুমান ১টার দিকে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)।

এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আসামী শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড় জনৈকি ইব্রাহিম খলিলের ধনচের জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামীদের নাম পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামী সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামীদের থানা হেফাজতে নেন।

এই ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। আসামীদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

রায়ে আসামী শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদন্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অপর আসামী রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।