ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও পাঠদান কার্যক্রমের জন্য পরিচিত, তেমনি অন্যদিকে ক্যাম্পাসের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের জন্যও সমাদৃত। গ্রীষ্মের এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সেজেছে নানা রঙের ফুলের সমারোহে, যা শুধু তার সৌন্দর্য্যেই নয়, মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। প্রকৃতির মাঝে সৃষ্টি হয়েছে এক অপূর্ব সৃজনশীল ও শান্তিময় পরিবেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছটি যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই সবাইকে প্রশান্তির বার্তা দেয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক, একাডেমিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হল ও বিভিন্ন চত্বর এবং অন্যান্য স্থানে গাছ গুলোতে ফুটেছে নানান জাতের ফুল। ক্যাম্পাসে ফুটে থাকা নানা ধরনের ফুল যেমন: কৃষ্ণচূড়া, জারুল, কাঁঠালচাঁপাদা, গোলাপ, সোনালী, শিমুল,পলাশ, জবা, টগর, সাদা ও হলুদ ফুল একে অপরের সাথে মিশে এমন এক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে যা দৃষ্টিনন্দন তো বটেই, মনকেও করে প্রফুল্ল।
গাছের ফুল শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেই থেমে নেই; বরং এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য শান্তিপূর্ণ একটি পরিবেশও তৈরি হয়েছে, যেখানে তারা ক্লাসের মাঝে বিরতি সময়ে বা অবসরে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে পারে। ফুল গাছের নিচে বসে থাকা কিংবা তার আশপাশে হাঁটাহাঁটি করা ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের জীবন অনেক সময়ই খুবই চাপের মধ্যে থাকে, যেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সময় কাটাতে হয়। কিন্তু ফুলের সুন্দর পরিবেশে তারা কিছুটা সময় কাটিয়ে নিজের মনকে শিথিল করতে পারে, যা তাদের মনোবলকে শক্তিশালী করে এবং একাডেমিক জীবনে আরও ভালো ফল অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করে।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়—শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ ক্যাম্পাসের সবাই এই ফুলেল পরিবেশে মুগ্ধ। পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ফুলপ্রেমীরাও এই সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। অনেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও সেলফিতে মেতে ওঠেন, স্মরণীয় করে রাখেন এই মনোরম মুহূর্তগুলো। আর এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য নিয়ে আমাদের প্রতিনিধির কাছে শিক্ষার্থীরা নিজের অনুভূতি শেয়ার করেন।
‘বর্তমান সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন এক রঙিন স্বপ্নের রাজ্য। গাছের ডালে ডালে ফুটে থাকা সোনালী, শিমুল,পলাশ, জবা আর কৃষ্ণচূড়ার লাল-কমলা ফুলগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যায়। হালকা বাতাসে দুলে দুলে তারা যেন প্রকৃতির গান গাইছে। এ সৌন্দর্য চোখে দেখলে মন শান্ত হয়ে যায়, মনে হয় প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়েছে আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস।’
মার্কেটিং বিভাগ,
মোঃ নাসিম আহমেদ।
‘বর্তমানে বিভিন্ন বাহারি ফুলের সমারহে আমাদের ক্যাম্পাস মুখরিত, যার স্নিগ্ধতা ও সৌন্দর্য প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনকে উচ্ছ্বসিত করে তোলে। কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল সহ বিভিন্ন নাম না জানা ফুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে এক অনন্য রূপ দান করেছে। ক্লাস-পরীক্ষা সহ বিভিন্ন ব্যস্ততা ও ক্লান্তির মাঝে এই কোমল ফুলগুলোর দিকে তাকালে মন প্রশান্তিতে ভরে যায় এবং কাজে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে। রঙিন ফুলগুলোর সাথে ক্যামেরাবন্দি ছোটছোট প্রতিটি মুহূর্ত যেন ভীষণ স্পেশাল হয়ে ওঠে।’
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ,
জয়শ্রী রায়।
‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুল শিক্ষার্থীদের মনে সৌন্দর্যবোধ, স্বপ্ন, ভালোবাসা ও শান্তির অনুভূতি জাগায়। রঙিন ফুলগুলো ক্লাসের ব্যস্ততা আর মানসিক চাপের মাঝে এনে দেয় প্রশান্তি, অনুপ্রেরণা ও সৃজনশীলতার এক নতুন মাত্রা। ক্যাম্পাসে ফুলের সমারোহ সত্যিই মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।’
আল ফিকহ এন্ড লিগাল স্টাডিজ বিভাগ,
মোঃ রাকিব হাসান।
‘ফুলের সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অপূর্ব উপহার। প্রতিটি ফুল তার নিজস্ব রঙ, গন্ধ ও গঠনের মাধ্যমে এক অনন্য সৌন্দর্য প্রকাশ করে। ফুল শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, এর মধ্যে লুকিয়ে থাকে কোমলতা, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছার বার্তা।’
সমাজ কল্যাণ বিভাগ,
শাশ্বতী কুন্ডু।
ক্যাম্পাসের ফুল গাছ মানেই প্রকৃতির সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে চারপাশে।এই গাছগুলো শুধু পরিবেশ নয়, আমাদের মনকেও করে তোলে প্রশান্ত। আমাদের ইবি ক্যাম্পাসে বসন্তকালে শিমুল, পলাশ কৃষ্ণচূড়ার লাল-কমলা রঙে রাঙিয়ে তোলে। আবার গ্রীষ্মে কাঞ্চন বা জারুলের বর্ণিল সৌন্দর্য ভরিয়ে রাখে। এখন যেমন সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ফুলে পুরো ক্যাম্পাস ছেয়ে গেছে।আমরা ছবি উঠছি,গাছের নিচে বসে সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি। খুবই ভালো লাগে। বৃষ্টির মধ্যে জারুল ফুল ফুটে আছে,দেখলেই মন ভরে যায়।এই সময় ক্যাম্পাসে ঘুরতেই ভালো লাগে।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ,
সাদিয়া জান্নাত শিপ্রা।
‘ফুলের সৌন্দর্য ভালোবাসা অভিব্যক্তি প্রকাশের প্রতীক। ক্যাম্পাসের প্রতিটি ফুল যেন এক একটি কবিতা ক্যাম্পাসের ঝলমলে সোনালু যেন গ্রীষ্মের রোদে একটি স্বর্ণ ঝর্ণা এর নরম সুবাস আর চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য। যেন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয় লাল আগুনের মত কৃষ্ণচূড়া, যেন ক্যাম্পাসে ভালোবাসা আর প্রাণের স্পন্দন জাগিয়ে তুলে। বসন্ত আর গ্রীষ্মের মিলিত কাব্য ছোট ছোট রঙ্গন ফুলগুলো যেন একটি শিক্ষার্থীর চিরন্তর হাসি প্রতীক হিসেবে কাজ করে।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগ,
প্রিয়া সাহা।