স্টাফ রিপোর্টার:
চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে প্রতিবাদ র্যালি ও গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভী রহমানসহ হতাহত দলীয় নেতাকর্মীদের স্মরণে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতা দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নেতৃত্বে আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) চুয়াডাঙ্গা পান্না সিনেমা হল চত্বরে বেলা সাড়ে ৩টায় প্রথমে আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেল ৪টার পরে প্রতিবাদে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি সিনেমা হল চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ হাসান চত্বরে যেয়ে শেষ হয়। আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, এই ২১শে আগস্ট তৈরীর পিছনে রয়েছে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের শাসন৷ এই শাসনে কি ঘটেছিল তা আমরা জানি। তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এই গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে নিঃশেষ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এ হামলা।
আজ ২১ আগস্ট সেই ভয়াবহ হামলার ১৯তম বার্ষিকী। সেই হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন অন্তত ৩০০ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা—তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন। ততকালীন সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা —ডান কানে আঘাত পেয়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানও। আজকের এই আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ও তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
দিলীপ কুমার বলেন, ২০০৪ সালের মতো আগামীতে বিএনপি-জামায়াত যাতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম না করতে পারে সেজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি চুয়াডাঙ্গা জেলার আওয়ামী লীগের ও এর অংগসংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের বিএনপি-জামায়াত যাতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে এখন থেকেই সর্তক থাকার আহবান জানাচ্ছি। একইসাথে আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
আলোচনা সভা পরবর্তীতে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের নিহত নেতাকর্মীর স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ ক্বারী শান্তি হুজুর।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার আহম্মেদ বাবলুর সভাপতিত্বে এবং জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারের পরিচালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জিল্লু, পদ্মাবিলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হালিম মন্ডল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন টাইগার, গাংনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুদ্দিন পারভেজ ও চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ায়েচ কুরুনি টিটু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা পৌর ও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং আলমডাংগা পৌর ও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও এর অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, আলমডাঙ্গায় ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ র্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।সোমবার বিকেলে আলমডাঙ্গা টকিজ হলে দলীয় কার্যালয়ে যুবলীগের স্থানীয় আয়োজনে জেলা যুবলীগের সদস্য তপন কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও হারদী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামজামি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, বেলগাছি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রেজাউল হক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রিপন শাহ, মোহাম্মদ আজম, শিপন মেম্বার,ভমোহাম্মদ আরিফ হোসেন, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য বিএনপি-জামায়াত ও তারেক রহমান চক্রান্ত করে গ্রেনেড হামলা করেছিল। তারা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে দিতে চেয়েছিল। ২০০৪ সালে ২১ শে আগষ্ট ঢাকা বঙ্গবন্ধু এভেনিউ তে আওয়ামী লীগের এক বিক্ষোভ সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বর্তমান বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৩০০ জন আহত হয়েছিলেন। নিহত হয়েছিলেন আইভি রহমানসহ মোট ২৪ জন। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা আগামী ২১ আলমডাংগা শহরজুড়ে প্রতিবাদ র্যালি করেছি।
দিলীপ কুমার বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখনও দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পনা করছে। আগামীতে যেকোন ধরনের ষড়যন্ত্র রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এর আগে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আলমডাংগা শহরজুড়ে প্রতিবাদ র্যালি করেন দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। এসময় শহরজুড়ে যানজট লেগে যায়। র্যালিতে তারেক রহমানসহ দোষীদের কঠিন শাস্তির দাবিসহ নানা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে রাখে নেতাকর্মীরা।
আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজু আহমেদ, হালিম বিশ্বাস, রুহুল আমিন, ছাত্রলীগের শিহাব উদ্দিন, মো: ইমন, পলাশ, শুভ, মাসুদ, অনিক, আসিফ, পারভেজ, হামজা, সাইম, মিরাজ, ছলেমান, শাকিল, তন্ময়, ওয়াশিম, মোমিন, রুহুল, রাব্বি, রামিম, সোহেল, অন্তর ও বিদ্যুৎ প্রমুখ।