শিরোনাম :
Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন Logo বিনামূল্যে বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুর সদরের ৫২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা Logo ৭৮ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে চাঁদপুর এলজিইডির অবহিতকরন সভা Logo পিয়াস আফ্রিদির উদ্যোগে চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের পথচলা

সম্পর্কের রস রসায়ন

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৪:০৬:৪৩ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

একটা জীবনে একাধিক সম্পর্ক নিয়েই আমাদের পথচলা। অনুভূতির নানা রঙে সাজানো থাকে সম্পর্ক। কখনো সম্পর্ক মধুর, কখনো তিক্ত। সম্পর্কের টানাপোড়েন জীবনে চলেই। পরস্পর সম্পর্কে চিড় ধরলে কী করে তা সামাল দেওয়া যায়, তা জানা চাই।

আমরা নিজেরা যদি একটু ছাড় দিই, বোঝাপড়া করি নিজেদের মধ্যে, তাহলে আবার শীতল সম্পর্কও উষ্ণ হয়ে ওঠে। কৌশলটা কেবল জানা চাই। কোনো কোনো মানুষের স্বভাবই থাকে অন্যের ওপর কর্তৃত্ব দেখানোর। পরিবারেই হোক, বন্ধুদের বেলাতেই হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রে। কেউ কেউ হয়তো নেহাত সম্পর্ক রক্ষার খাতিরে এই কর্তৃত্ব মেনে নেয়। কখনো মুখ ফুটে কিছু বললেই হলো। ব্যস, ঝামেলা বেধে গেল।

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের ওঠানামা, সম্পর্কে জট বাঁধে কখনো কখনো। ভালোবেসে কিংবা দেখে-শুনে হোক, বিয়ে মানে অনেক সময় একটি জটিল অঙ্কও বটে। তবে বুঝতে পারলে উত্তরটা বেশ সোজা। শ্বশুরবাড়ির রসায়নটিও কম জটিল নয়। নতুন বউ, নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেবে, কেবল এই মানিয়ে নেওয়া যেন সেই বউটির দায়িত্ব, অন্যের কোনো দায়ই নেই। পরিবারের সবাই যদি ঘরে আসা নতুন বউকে আদর করে মানিয়ে নেয়, তাহলে সবার লাভ।

পরিবারে সবার মতামতও এক হয় না। মনোমালিন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। এমন কিছু ঘটলে দুপক্ষই সামাল দিন।

সামনাসামনি মিটিয়ে ফেলুন। অযথা তিলকে তাল না করাই ভালো।

মতান্তর হলোই বা! বউকেও বলি। নতুন বিয়ে। স্বামীকে চোখে হারাবেন ঠিকই। কিন্তু সংসারে সবার সঙ্গে আলাপ বাড়াতে হবে, তাদেরও সময় দিতে হবে।

অনেক স্বামী বড় খুঁতখুঁতে। পান থেকে চুন খসলে মেজাজ গরম। সবকিছু নিখুঁত হতে পারে না—এই সরল সত্যটিই মানতে চান না স্বামী। এ বড় অন্যায়। আধুনিক নাগরিক জীবনের মর্মে ঢুকে গেছে দৌড় দৌড় ইঁদুরদৌড় আর টেনশন। তাই সবাই ব্যস্ত। স্বামী-স্ত্রী দুজনে কর্মজীবী হলেও সংসারের বড় দায়িত্ব যেন স্ত্রীতেই বর্তায়। এই কালচার এখনো তেমন পাল্টায়নি।

অফিস থেকে ফিরে স্বামী অফিসফেরত স্ত্রীর কাছে দাবি করেন ধূমায়িত এক কাপ চা ও নাশতা। শেয়ারিং ও কেয়ারিং যেন একপেশে, তবে ব্যতিক্রমও আছে। স্বামী-স্ত্রীর সংসারে অবশ্য মনান্তর হবে, ঝগড়াঝাঁটি, মান-অভিমান, ভুল-বোঝাবুঝির ক্ষণগুলো আসবে, একান্ত কাছের এই সম্পর্কের এই রংও বদলায়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল-অমিলও হবে। কেউ হয়তো ‘বেড টি’ ভালোবাসেন, কেউ দাঁত না মেজে খান না। কেউ গল্পের বই পড়তে পড়তে ঘুমান, কেউ চান ঘর অন্ধকার ঘুম। আলো জ্বাললে ঘুমাতে পারেন না।

কিন্তু অমিলগুলো বড় করে দেখা কেন? কম-বেশি ছাড় দিয়ে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিলেই হয়। পরিবারের পাঁচজনের সঙ্গে তো পথ চলতে হবে। সমস্যাকে যদি মনে করা হয় চলার পথে নিজের শক্তিপরীক্ষা—জীবন হলো কৌতুক রস বজায় রেখে চলা, ভালোবাসার মানুষকে বুঝতে শেখা—ভালো হলো না?

একজনের অপরের ওপর প্রভুত্ব বিস্তারের প্রয়াস কেন? নিজের মূল্যবোধ অন্যের ওপর চাপানো কেন? বাড়ির বাজার কী হবে, বউ কার সঙ্গে মিশবে, কোন পোশাক পরবে, সন্তানের সব ধরনের সিদ্ধান্তই চাপান স্বামী। এটি না করে দৃষ্টিভঙ্গিতে উদারতা আনতে হবে। অন্যকে ছোট করে দেখার প্রবণতা এড়িয়ে চলতে হবে। তা না হলে তিক্ততা বাড়বে, সম্পর্ক নষ্ট হবে।

বরং ভালোবাসার মানুষকে স্পেস দিন, বুঝতে শিখুন, পরস্পর বোঝাপড়া দৃঢ় করুন। পরস্পর বন্ধু হয়ে উঠুন। দুজনে একসঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটান। বিশেষ কোনো দরকার না থাকলেও ফোন করে, এসএমএস করে খোঁজখবর নিন।

কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব থাকে, এমন কিছু বন্ধুও হয় কখনো কখনো। ধরা যাক, বন্ধুরা মিলে কোথাও যাবে, সবটার মধ্যে একধরনের ছড়ি ঘোরানোর প্রবণতা থাকবে তাঁর। এটি থেকে বন্ধুত্বেও ফাটল ধরে।

আমরা যেন বুঝি মনান্তর মিটে যেতে যেতেও মিটে না যখন দুয়ার আগলে দাঁড়ায় অহং। পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে একই টিমের খেলোয়াড় ভাবা সুখের চাবিকাঠি।

অফিসেও সে রকম সহকর্মীদের সঙ্গে অশান্তি হয়। অফিসের ছোট অশান্তি যেন বড় না হয়, তা-ও দেখতে হবে দুপক্ষকেই। প্রয়োজন নিজের মধ্যে আন্তরিক যোগাযোগ বাড়ানো। ছোটখাটো মনোমালিন্য মনে পুষে না রাখা।

সব শেষে ধার করা একটি ছোট্ট গল্প দিয়ে শেষ করি।

একটি বালক ও একটি বালিকা একত্রে খেলছিল। বালকটির কাছে কতগুলো মার্বেল ছিল আর বালিকাটির কাছে ছিল কিছু রসগোল্লা। বালকটি বালিকাকে বলল, যদি সে তার মিষ্টিগুলো তাকে দেয়, তাহলে সে তার সব মার্বেল তাকে দিয়ে দেবে। বালিকাটি রাজি হয়ে গেল।

বালকটি সবচেয়ে বড় ও সুন্দর মার্বেলটি লুকিয়ে রেখে বাকি মার্বেলগুলো বালিকাকে দিয়ে দিল। বিনিময়ে বালিকাটি প্রতিশ্রুতিমতো তার সব মিষ্টি বালকটিকে দিয়ে দিল।

ওই রাতে বালিকাটি একটি প্রশান্তির ঘুম দিল। কিন্তু বালকটি একটুও ঘুমাতে পারল না, সারা রাত তাকে এই ভাবনা অস্থির করে রাখল যে সে যেভাবে তার সবচেয়ে সুন্দর মার্বেলটি আড়াল করে রেখেছে, বালিকাটিও সেরূপ কিছু রসগোল্লা তার কাছে লুকিয়ে রাখেনি তো?

তেমনি সম্পর্কের মধ্যে নিজের শতভাগটি না দিলে সব সময় সন্দেহ হতে থাকবে যে অন্যজনও বোধ হয় তার শতভাগটি আমাকে দেয়নি।…বিষয়টি সব রকম সম্পর্কের ক্ষেত্রেই সত্য; যেমন প্রেম, বন্ধুত্ব, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পর্ক ইত্যাদি।

সব ব্যাপারে নিজের শতভাগটি দিলে শান্তিতে ঘুম হবে। তবে নিজের শতভাগ চাপিয়ে দিতে চাইলে অন্যের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সেটাও মাথায় রাখা ভালো।

জাদু কলমের একটি আঁচড়ে জীবনের গল্পটাকে মধুর সম্পর্কের গল্প করা যায় না, নিজেকেই এ জন্য চেষ্টা করতে হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন

সম্পর্কের রস রসায়ন

আপডেট সময় : ০৪:০৬:৪৩ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

একটা জীবনে একাধিক সম্পর্ক নিয়েই আমাদের পথচলা। অনুভূতির নানা রঙে সাজানো থাকে সম্পর্ক। কখনো সম্পর্ক মধুর, কখনো তিক্ত। সম্পর্কের টানাপোড়েন জীবনে চলেই। পরস্পর সম্পর্কে চিড় ধরলে কী করে তা সামাল দেওয়া যায়, তা জানা চাই।

আমরা নিজেরা যদি একটু ছাড় দিই, বোঝাপড়া করি নিজেদের মধ্যে, তাহলে আবার শীতল সম্পর্কও উষ্ণ হয়ে ওঠে। কৌশলটা কেবল জানা চাই। কোনো কোনো মানুষের স্বভাবই থাকে অন্যের ওপর কর্তৃত্ব দেখানোর। পরিবারেই হোক, বন্ধুদের বেলাতেই হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রে। কেউ কেউ হয়তো নেহাত সম্পর্ক রক্ষার খাতিরে এই কর্তৃত্ব মেনে নেয়। কখনো মুখ ফুটে কিছু বললেই হলো। ব্যস, ঝামেলা বেধে গেল।

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের ওঠানামা, সম্পর্কে জট বাঁধে কখনো কখনো। ভালোবেসে কিংবা দেখে-শুনে হোক, বিয়ে মানে অনেক সময় একটি জটিল অঙ্কও বটে। তবে বুঝতে পারলে উত্তরটা বেশ সোজা। শ্বশুরবাড়ির রসায়নটিও কম জটিল নয়। নতুন বউ, নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেবে, কেবল এই মানিয়ে নেওয়া যেন সেই বউটির দায়িত্ব, অন্যের কোনো দায়ই নেই। পরিবারের সবাই যদি ঘরে আসা নতুন বউকে আদর করে মানিয়ে নেয়, তাহলে সবার লাভ।

পরিবারে সবার মতামতও এক হয় না। মনোমালিন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। এমন কিছু ঘটলে দুপক্ষই সামাল দিন।

সামনাসামনি মিটিয়ে ফেলুন। অযথা তিলকে তাল না করাই ভালো।

মতান্তর হলোই বা! বউকেও বলি। নতুন বিয়ে। স্বামীকে চোখে হারাবেন ঠিকই। কিন্তু সংসারে সবার সঙ্গে আলাপ বাড়াতে হবে, তাদেরও সময় দিতে হবে।

অনেক স্বামী বড় খুঁতখুঁতে। পান থেকে চুন খসলে মেজাজ গরম। সবকিছু নিখুঁত হতে পারে না—এই সরল সত্যটিই মানতে চান না স্বামী। এ বড় অন্যায়। আধুনিক নাগরিক জীবনের মর্মে ঢুকে গেছে দৌড় দৌড় ইঁদুরদৌড় আর টেনশন। তাই সবাই ব্যস্ত। স্বামী-স্ত্রী দুজনে কর্মজীবী হলেও সংসারের বড় দায়িত্ব যেন স্ত্রীতেই বর্তায়। এই কালচার এখনো তেমন পাল্টায়নি।

অফিস থেকে ফিরে স্বামী অফিসফেরত স্ত্রীর কাছে দাবি করেন ধূমায়িত এক কাপ চা ও নাশতা। শেয়ারিং ও কেয়ারিং যেন একপেশে, তবে ব্যতিক্রমও আছে। স্বামী-স্ত্রীর সংসারে অবশ্য মনান্তর হবে, ঝগড়াঝাঁটি, মান-অভিমান, ভুল-বোঝাবুঝির ক্ষণগুলো আসবে, একান্ত কাছের এই সম্পর্কের এই রংও বদলায়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল-অমিলও হবে। কেউ হয়তো ‘বেড টি’ ভালোবাসেন, কেউ দাঁত না মেজে খান না। কেউ গল্পের বই পড়তে পড়তে ঘুমান, কেউ চান ঘর অন্ধকার ঘুম। আলো জ্বাললে ঘুমাতে পারেন না।

কিন্তু অমিলগুলো বড় করে দেখা কেন? কম-বেশি ছাড় দিয়ে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিলেই হয়। পরিবারের পাঁচজনের সঙ্গে তো পথ চলতে হবে। সমস্যাকে যদি মনে করা হয় চলার পথে নিজের শক্তিপরীক্ষা—জীবন হলো কৌতুক রস বজায় রেখে চলা, ভালোবাসার মানুষকে বুঝতে শেখা—ভালো হলো না?

একজনের অপরের ওপর প্রভুত্ব বিস্তারের প্রয়াস কেন? নিজের মূল্যবোধ অন্যের ওপর চাপানো কেন? বাড়ির বাজার কী হবে, বউ কার সঙ্গে মিশবে, কোন পোশাক পরবে, সন্তানের সব ধরনের সিদ্ধান্তই চাপান স্বামী। এটি না করে দৃষ্টিভঙ্গিতে উদারতা আনতে হবে। অন্যকে ছোট করে দেখার প্রবণতা এড়িয়ে চলতে হবে। তা না হলে তিক্ততা বাড়বে, সম্পর্ক নষ্ট হবে।

বরং ভালোবাসার মানুষকে স্পেস দিন, বুঝতে শিখুন, পরস্পর বোঝাপড়া দৃঢ় করুন। পরস্পর বন্ধু হয়ে উঠুন। দুজনে একসঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটান। বিশেষ কোনো দরকার না থাকলেও ফোন করে, এসএমএস করে খোঁজখবর নিন।

কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব থাকে, এমন কিছু বন্ধুও হয় কখনো কখনো। ধরা যাক, বন্ধুরা মিলে কোথাও যাবে, সবটার মধ্যে একধরনের ছড়ি ঘোরানোর প্রবণতা থাকবে তাঁর। এটি থেকে বন্ধুত্বেও ফাটল ধরে।

আমরা যেন বুঝি মনান্তর মিটে যেতে যেতেও মিটে না যখন দুয়ার আগলে দাঁড়ায় অহং। পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে একই টিমের খেলোয়াড় ভাবা সুখের চাবিকাঠি।

অফিসেও সে রকম সহকর্মীদের সঙ্গে অশান্তি হয়। অফিসের ছোট অশান্তি যেন বড় না হয়, তা-ও দেখতে হবে দুপক্ষকেই। প্রয়োজন নিজের মধ্যে আন্তরিক যোগাযোগ বাড়ানো। ছোটখাটো মনোমালিন্য মনে পুষে না রাখা।

সব শেষে ধার করা একটি ছোট্ট গল্প দিয়ে শেষ করি।

একটি বালক ও একটি বালিকা একত্রে খেলছিল। বালকটির কাছে কতগুলো মার্বেল ছিল আর বালিকাটির কাছে ছিল কিছু রসগোল্লা। বালকটি বালিকাকে বলল, যদি সে তার মিষ্টিগুলো তাকে দেয়, তাহলে সে তার সব মার্বেল তাকে দিয়ে দেবে। বালিকাটি রাজি হয়ে গেল।

বালকটি সবচেয়ে বড় ও সুন্দর মার্বেলটি লুকিয়ে রেখে বাকি মার্বেলগুলো বালিকাকে দিয়ে দিল। বিনিময়ে বালিকাটি প্রতিশ্রুতিমতো তার সব মিষ্টি বালকটিকে দিয়ে দিল।

ওই রাতে বালিকাটি একটি প্রশান্তির ঘুম দিল। কিন্তু বালকটি একটুও ঘুমাতে পারল না, সারা রাত তাকে এই ভাবনা অস্থির করে রাখল যে সে যেভাবে তার সবচেয়ে সুন্দর মার্বেলটি আড়াল করে রেখেছে, বালিকাটিও সেরূপ কিছু রসগোল্লা তার কাছে লুকিয়ে রাখেনি তো?

তেমনি সম্পর্কের মধ্যে নিজের শতভাগটি না দিলে সব সময় সন্দেহ হতে থাকবে যে অন্যজনও বোধ হয় তার শতভাগটি আমাকে দেয়নি।…বিষয়টি সব রকম সম্পর্কের ক্ষেত্রেই সত্য; যেমন প্রেম, বন্ধুত্ব, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পর্ক ইত্যাদি।

সব ব্যাপারে নিজের শতভাগটি দিলে শান্তিতে ঘুম হবে। তবে নিজের শতভাগ চাপিয়ে দিতে চাইলে অন্যের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সেটাও মাথায় রাখা ভালো।

জাদু কলমের একটি আঁচড়ে জীবনের গল্পটাকে মধুর সম্পর্কের গল্প করা যায় না, নিজেকেই এ জন্য চেষ্টা করতে হয়।