বাউল সম্রাট আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে এবং সারাদেশে বাউল-ফকির-সূফীদের উপর হামলা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন হয়ে বটতলায় গিয়ে শেষ হয়।
এই সময় শিক্ষার্থীদের হামলা মামলা হুলিয়া নিতে হবে তুলিয়া, রাষ্ট্র তুমি দায় নাও বাউলের উপর হামলা থামাও, কথা বলার স্বাধীনতা, বাউলের স্বাধীনতা দিতে হবে দিয়ে দাও, ভিন্ন মতের স্বাধীনতা দিতে হবে দিয়ে দাও, লাগবো রে লাগবো স্বাধীনতা লাগবো ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন বলেন, “আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে আমরা আসলে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বলতে ক্লান্ত। আমরা এই দেড় বছর ধরে দেখছি প্রতিনিয়ত মাজারে ও বাউলদের উপর হামলা হচ্ছে।
কিন্তু এই ঘটনাগুলোর বিপরীতে ইন্টেরিমের দিক থেকে আসলে ব্যবস্থা কি?”
দেশের চলমান পরিস্থিতিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, “আজকে ধর্ম অবমাননার দায় দিয়ে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় যা আসলে এক ধরনের জুলুম। ঐ বাউল শিল্পির মুক্তির দাবিতে মানিকগঞ্জে তার ভক্ত-সমর্থকরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার সময় জামাত শিবিরের একটি মব গিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়, আগ্রাসন চালায়, আক্রমণ চালায়। পুলিশ থাকার পরও তারা কি করে সেই বাউল ভক্তদের উপর গায়ে হাত তুলতে পারে? আমরা সেই গোষ্ঠীর এই ধরনের আগ্রাসী আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সজিব আহমেদ জেনিচ বলেন, “আবুল সরকারের চার ঘণ্টার পালা গানের মাত্র চার মিনিটের একটি খণ্ডিত অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে তাকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা তাকে ডিমোনাইজ ও ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপনের সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা। এই দেশে বাউল, সুফি, ফকির, আস্তিক, নাস্তিকসহ সব মতের মানুষ নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার রাখে। মত প্রকাশের অধিকার, আদর্শ চর্চার অধিকার কারো থেকে কম নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কোনো আদর্শ অন্য আদর্শের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে ওঠে না।”
তিনি আরো বলেন, “৫ আগস্টের পর কিছু মৌলবাদী গোষ্ঠী নিজেদের অতিরিক্ত ক্ষমতাবান মনে করলেও বাংলাদেশ কোনো ধর্মীয় আইন নয়, গণতান্ত্রিক আইনেই পরিচালিত রাষ্ট্র। সকল আদর্শ সমানভাবে চর্চিত হওয়াটাই বাংলার ইতিহাস ও পরিচয়। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ দাবি জানাচ্ছে আবুল সরকারকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং মানিকগঞ্জে তার ভক্তদের উপর হামলার বিচার করতে হবে।”





















































