নিউজ ডেস্ক:
আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি, গোটা বিশ্ব তার ফুটবল জাদুতে মুগ্ধ। আর তিনি মুগ্ধ ছোটবেলার বান্ধবী আন্তনেলা রোকুজ্জোতে! আর তাই দীর্ঘ দশ বছরের সংসার শেষে সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন এ যুগল। সেই আলো ঝলমলে বিয়ের আয়োজনের অপর পৃষ্ঠায় আছে অন্ধকার এক জগত। সেখানে আছে দারিদ্র্যের হাহাকার! আছে কুখ্যাত ড্রাগ মাফিয়া গ্যাংয়ের গল্প।
এর কোনও কিছুই একে অন্যের পাশে বসে না। কিন্তু ঘটনাচক্রে আগামীকাল শুক্রবার বৈপরীত্যের এই দুনিয়া এক হয়ে যেতে বসেছে। ফুটবল ঈশ্বরের রাজকীয় বিয়ের আসর বসছে মেসির জন্মস্থান আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। কিন্তু যে বিলাসবহুল হোটেলে এই বিয়ের অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে, তার চারদিক ঘিরে রয়েছে অপরাধের সাম্রাজ্য। আর্জেন্টিনার কুখ্যাত ড্রাগ মাফিয়া চক্র ‘লস মনোস’ যে সাম্রাজ্য চালায়। যেখানে দারিদ্র্য, ড্রাগ, রাহাজানি, খুন এসব খুব পরিচিত শব্দ!
কেন ঠিক এই অঞ্চলে মেসি বিয়ে করতে চলেছেন? এটা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। স্থানীয় প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ অফিসার কার্লোস দেল ফ্রেদে বলেছেন, ‘মেসির বিয়েটা বেশি করে সামনে নিয়ে আসছে আমাদের সমাজের বৈষম্য। ‘
আর্থিক বৈষম্যের পাশে আরও যে ব্যাপারটা উঠে আসছে, তা হল অপরাধের কালো ছায়া। এই তো গত ১৭ জুন মেসির বিয়ে যেখানে হবে, সেই হোটেল থেকে মাইল খানেকেরও কম দূরত্বে খুন হয়ে যান এক নারী। মোটরবাইকে চেপে দুই সন্ত্রাসী এসে ৪ নারীর ওপর গুলি চালায়। যে ঘটনায় মৃত্যু হয় ৫৬ বছর বয়সী এক নারীর। ঘটনাচক্রে নিহত নারী আবার ‘লস মনোস’ দলের নেতার বোন।
এর পর থেকেই আশঙ্কা, এই খুন ঘিরে আবার কখন না জানি ‘গ্যাং ওয়ার’ শুরু হয়ে যায়! এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রোজারিওতে এসে হাজির হচ্ছেন মেসিসহ ফুটবল দুনিয়ার মহাতারকারা। এ ছাড়াও থাকবেন বহু সেলিব্রিটি অতিথি। যাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, মেসি নাকি নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত এক আর্জেন্টাইন সামরিক অফিসারের ওপর। ৩০০ নিরাপত্তকর্মী হোটেল ঘিরে থাকবে। কিন্তু তাতেও কি অস্বস্তি কমবে?
মেসি এবং রোকুজ্জো দুজনেই একসঙ্গে রোজারিওতে শৈশব কাটিয়েছেন। বিয়ের দিনটায় তাই তারা ফিরে যেতে চেয়েছেন নিজেদের কৈশোরে। কিন্তু স্থানীয় মানুষ এর পিছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। স্থানীয় এক সংগঠনের প্রতিনিধি মিকায়েলা লেনা নামে ২৪ বছর বয়সি এক তরুণী বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, আমি বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যখন শুনি ওরা এখানে বিয়ে করবে বলে ঠিক করেছে।