নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে বিএনপি শতভাগ আশ্বস্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের মধ্যে এখানো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলেছি, ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন চাই। কেন নির্বাচন চাই? এজন্য সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ আছে। আমরা বলছি, ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু কেউ কেউ বলছে, যে রোজার আগে অথবা একটা সমঝোতা দুই পক্ষের মধ্যে করা যায় কিনা। ড. ইউনূস সরকার অথবা অন্যান্য রাজনৈতিক দল যদি মনে করে যে, ডিসেম্বরে হলে বিএনপির কথাই হয়ে যায়, আমরা রাজনীতিতে একটা সমঝোতায় বিশ্বাস করি।
আমরা মনে করি, রাজনীতিতে পারস্পরিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং হল সবচেয়ে বড় অর্জন। সেই ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, যদি মনে করে ডিসেম্বরে না ফেব্রুয়ারিতে হয়, তাহলে বিএনপির আপত্তি থাকার কথা না। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপি শতভাগ আশ্বস্ত হতে পারছে না। কারণ ওনার (প্রধান উপদেষ্টার) কথার মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা এখনো রয়েছে।
মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, একটা ন্যারেটিভ দাঁড় করাতে চাচ্ছে যে, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়, সংস্কার চায় না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এপ্রিলে কখনো কোনোনির্বাচন হয়নি। কারণ তখন বৈরি আবহাওয়া থাকে। তারপর রমজান। এবার প্রেক্ষাপটটা কিন্তু আলাদা।
ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের এর মাঝামাঝি পর্যন্ত রমজান। রমজানের পরে এসএসসি পরীক্ষা। এরপর এইচএসসি শুরু হবে। সামগ্রিক অবস্থা মিলিয়ে এপ্রিলে নির্বাচন করা আসলে সম্ভব না, যার জন্য আমরা মনে করি, এটা এক ধরনের চালাকি করা হচ্ছে। যদি এপ্রিলে কোন কারণে নির্বাচন না করতে পারে, তাহলে আগামী ডিসেম্বর ছাড়া কিন্তু সম্ভব না।
তিনি বলেন, গত ১০ মাসে অনেক সূচকে আমরা অনেকটা পিছিয়ে গেছি। সাম্প্রতিককালে আমরা ২৬টি দেশের ইন্টেরিয়াম গর্ভমেন্ট নিয়ে একটা গবেষণা করে দেখেছি। কোনো সরকার সফল হতে পারেনি। কোথাও পারেনি।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দেশের যে অর্থনৈতিক সংকট, ব্যাংকে টাকা নাই। বৈদেশিক সহায়তা নাই। ডেভলপমেন্ট পার্টনার বা যারা আমার উন্নয়ন সহযোগী তারা বলছে ইন্টেরিয়াম গভমেন্টের সঙ্গে কাজ করবে না। তাহলে অর্থনীতির চাকাটা সচল হবে কীভাবে? আইনশৃঙ্খাকারী বাহিনীর আজকে নানা ট্রামার মধ্যে তারা আছে। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন তো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তারা মাজা সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। আবার এখনো নানা ধরনের প্রপাগান্ডা নানা ক্ষেত্রে হচ্ছে। একদিকে আইনশৃঙ্খলা অবস্থারি অবনতি, অর্থনীতি সংকট, সামাজিক অনিশ্চয়তা। সামগ্রিকভাবে দেশটা কিন্তু একটা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে। এই ঝুঁকিটা যদি আরো প্রলম্বিত হয়, তাইলে বাংলাদেশ তো রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে আগামী দিনে। বিএনপির স্পষ্ট বলেছে, এই অবস্থা থেকে দেশটাকে উত্তরণ দরকার। আমাদের অর্থনৈতিক স্থিশীলতার জন্য। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই। এই ক্ষেত্রে আমাদের কোনো আপস নাই। কিন্তু এরপরও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে যদি কোনো সমঝোতা হয়, সেক্ষেত্রে বিএনপি ছাড় দিতে রাজি আছে।