ইবিতে বাংলার লোকজ অলংকার প্রদর্শনী: ঐতিহ্যের ঝলক

বাংলার প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নানা ধরনের অলংকার একসময় গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই অলংকারগুলো আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলার এই লুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নানা স্থান থেকে প্রাচীন অলংকার সংগ্রহ করে সেগুলো প্রদর্শনের মাধ্যমে তুলে ধরেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ।

শনিবার (২৮ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের ৫ম তলার করিডরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহ করা বাংলার প্রাচীন যুগে ব্যবহৃত নারীদের বিভিন্ন অলংকার প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে রূদ্রাক্ষ, কল্কা, রূপার নূপুর, নাকছাবি, ঘুঙরা, কাঠের চুড়ি, শঙ্কের হার, হাতির দাঁতের দুল, বাশের কেশবন্ধনী, পুতির মালা, ধান তাবিজ, টিকলী, তুলসী মানা, মাটির চুড়ি, তিন ধাতুর চুড়ি, তামার পেটি, রত্নপাথরের আংটি ইত্যাদি বিভিন্ন অলংকার প্রদর্শন করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, এখন আগের যুগের অলংকার আর ব্যবহৃত হয় না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন নতুন ডিজাইনের অলংকার এখন মানুষ ব্যবহার করে। তাদের নানি-দাদিদের আমলে এগুলো ছিল না। তারা যেগুলো ব্যবহার করতেন, সেগুলোর মধ্যে চেষ্টা করে যতটা সম্ভব তারা বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে আজকে এখানে প্রদর্শন করেন৷ এগুলোর অনেক কিছুই সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্বাস থেকে ব্যবহার করা হতো।

বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড. এরশাদুল হক বলেন, “আমাদের বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘বাংলার লোকজীবনে ব্যবহৃত লোক অলংকার’ শিরোনামে একটি প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ সমাজে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী অলংকারের নান্দনিকতা, ব্যবহারিক দিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রদর্শনীর প্রতিটি উপাদান আমাদের লোকসংস্কৃতির জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণাধর্মী চিন্তাভাবনার ফল এবং বাংলার লোকজীবন সম্পর্কে গভীর অনুধাবনের প্রমাণ।”

বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. শিবলী চৌধুরী বলেন, “আজ ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা একটি চমৎকার লোকজ অলংকার প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, ঐতিহ্যবাহী অলংকারগুলির নান্দনিকতা এবং ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সফলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে বাংলার লোকজ অলংকার প্রদর্শনী: ঐতিহ্যের ঝলক

আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

বাংলার প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নানা ধরনের অলংকার একসময় গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই অলংকারগুলো আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলার এই লুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নানা স্থান থেকে প্রাচীন অলংকার সংগ্রহ করে সেগুলো প্রদর্শনের মাধ্যমে তুলে ধরেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ।

শনিবার (২৮ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের ৫ম তলার করিডরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহ করা বাংলার প্রাচীন যুগে ব্যবহৃত নারীদের বিভিন্ন অলংকার প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে রূদ্রাক্ষ, কল্কা, রূপার নূপুর, নাকছাবি, ঘুঙরা, কাঠের চুড়ি, শঙ্কের হার, হাতির দাঁতের দুল, বাশের কেশবন্ধনী, পুতির মালা, ধান তাবিজ, টিকলী, তুলসী মানা, মাটির চুড়ি, তিন ধাতুর চুড়ি, তামার পেটি, রত্নপাথরের আংটি ইত্যাদি বিভিন্ন অলংকার প্রদর্শন করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, এখন আগের যুগের অলংকার আর ব্যবহৃত হয় না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন নতুন ডিজাইনের অলংকার এখন মানুষ ব্যবহার করে। তাদের নানি-দাদিদের আমলে এগুলো ছিল না। তারা যেগুলো ব্যবহার করতেন, সেগুলোর মধ্যে চেষ্টা করে যতটা সম্ভব তারা বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে আজকে এখানে প্রদর্শন করেন৷ এগুলোর অনেক কিছুই সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্বাস থেকে ব্যবহার করা হতো।

বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড. এরশাদুল হক বলেন, “আমাদের বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘বাংলার লোকজীবনে ব্যবহৃত লোক অলংকার’ শিরোনামে একটি প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ সমাজে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী অলংকারের নান্দনিকতা, ব্যবহারিক দিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রদর্শনীর প্রতিটি উপাদান আমাদের লোকসংস্কৃতির জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণাধর্মী চিন্তাভাবনার ফল এবং বাংলার লোকজীবন সম্পর্কে গভীর অনুধাবনের প্রমাণ।”

বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. শিবলী চৌধুরী বলেন, “আজ ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা একটি চমৎকার লোকজ অলংকার প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, ঐতিহ্যবাহী অলংকারগুলির নান্দনিকতা এবং ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে সফলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”