নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) আগামী তিন বছরে ৪০ কোটি মানুষের মধ্যে জরুরি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৩০ কোটিরও বেশি শিশুর শিক্ষার জন্য প্রায় ১ কোটি শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি ১৩ থেকে ১৮ কোটি শিশুকে দেওয়া হবে টিকা। আগামী বছর থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়ে চলবে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক দরিদ্র দেশগুলোকে সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগার্তায় অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডা) ১৮তম বৈঠকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন দাতা ও ঋণগ্রহীতাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের নেওয়া অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে সাড়ে ৪ কোটি মানুষের নিরাপদ পানির সংস্থানে সহায়তা করা, কমপক্ষে ৪০ থেকে ৬০ লাখ মানুষকে আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসা, শিশু নিরাপত্তাবলয়ের আওতায় ১ কোটি ১০ লাখ মা-কে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার পাশাপাশি কমপক্ষে ৩০টি দেশের পরিসংখ্যাগত ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্য রয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় ৫ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগেরও লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মোটকথা, বিশ্বব্যাপী চরম দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য এসব উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এদিকে চরম দারিদ্র্য নিরসনে ৬০-এর চেয়ে বেশি দাতা বিশ্বব্যাংকের তহবিলে ৭৫ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। ওই বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক জানায়, নতুন উদ্ভাবনী অর্থায়ন প্যাকেজের মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোর সহযোগিতা বাড়ানো হবে (বিশেষ করে যারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে), যাতে তারা সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, উন্নয়ন সহযোগীদেরসহ বেসরকারি খাত এবং পুঁজিবাজার থেকেও প্রতিশ্রুতির অর্থ আসবে, যা উন্নয়নশীল দরিদ্র্য দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচনে বিনিয়োগ করা হবে। এই তহবিল অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, অসমতা রোধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জেন্ডার অসমতা দূর করতে বাড়তি তহবিলের মাধ্যমে নাটকীয়ভাবে সহায়তা করবে বলে আশা করেছে বিশ্বব্যাংক। সেই সঙ্গে সুশাসন তৈরি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
ইন্দোনেশিয়ায় আইডা ১৮ তহবিল নিয়ে নেগোসিয়েশনের বৈঠকে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে পরবর্র্তী তিন বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত অর্থায়নের রূপরেখা ও তহবিল সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আইডার ১৮তম বৈঠকের কো-চেয়ার ডিডি ইকাউ বলেন, নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে উন্নয়নের নতুন গল্প শুরু হতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর হতে অনেকটাই সহায়তা করবে।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এক্সেল ভেন ট্রজেনবার্গ বলেছেন, নতুন এই উদ্ভাবনী অর্থায়নের বিষয়টি এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে যদি কেউ এক ডলার সহযোগিতা করে সেটি পরিবর্তিত হয়ে ৩ ডলারে গিয়ে বাস্তবায়নকারীদের কাছে পৌঁছাবে। এটি ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহযোগিতা করবে বলে মনে করেন তিনি।