তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, দেশ এখন একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তিনি সোমবার (১০ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই মন্তব্য করেন।
মাহফুজ আলম তার পোস্টে উল্লেখ করেন, গতকাল (৯ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সভায় নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়ন বন্ধে, নিষিদ্ধ সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির বিষয়টি আলোচনা হয়।
তিনি আরও জানান, সরকার ইতোমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের গ্রেফতার চলমান রয়েছে এবং বিচারের কাজ দ্রুত ও সুষ্ঠু করার জন্য সরকার তৎপর রয়েছে। এছাড়াও, সরকার ছাত্র-যুবকদের জন্য লক্ষাধিক চাকরির ব্যবস্থা এবং তরুণদের জন্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে এবং এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সমন্বিত তৎপরতা শুরু হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। তবে, সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী মহল এবং মিডিয়ার মধ্যে বিরোধ, পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শক্তির একত্রিত হওয়ার প্রক্রিয়া সরকারকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলছে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার এখন একটি শক্তিশালী দেশি-বিদেশি জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের ঐক্যকে নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তবে, তিনি মনে করেন সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল ও গণ-অভ্যুত্থানকারীদের মুখোমুখি না করাই সরকারের জন্য ভালো হবে।
এদিকে, মাহফুজ আলম আরও জানান, দেশে বর্তমান পরিস্থিতি আসলে একটি যুদ্ধের মতো, যা বাইরের শক্তির দ্বারা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি কন্ট্রোল রুম থেকে পরিচালিত হচ্ছে এবং প্রতি সপ্তাহে এই যুদ্ধের কর্মসূচি মনিটর করা হয়। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এই পরিস্থিতির ফলে রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যা ও লুটপাটের বিচার, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনরুজ্জীবন এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কাজ অনেকটাই পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে, তিনি আশাবাদী যে, সরকার পরিবর্তনের পরিকল্পনা থাকলেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়েও দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।
এছাড়া, খুনি, ধর্ষক ও লুটেরাদের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।