কানাডা-মেক্সিকো-চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ কার্যকর

0
6
আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ, কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। যদিও গতকাল শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ট্রাম্প বলেন, কানাডার তেলের ওপর শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ রাখা হবে। আর এই শুল্ক পরে, ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুবিচার করেনি—এই দাবি করে ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওপরও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপের কারণ হলো, ‘আমাদের দেশে তাদের সরবরাহ করা এবং ছড়িয়ে দেওয়া অবৈধ ফেন্টানিল। যা কয়েক কোটি মার্কিনীর প্রাণ নিয়েছে।’

ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিপুলসংখ্যক অবৈধ অভিবাসী ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির সমাধান করা। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে লেভিট বলেন, ‘এসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, আর প্রেসিডেন্ট এখন তা বাস্তবায়ন করছেন।’

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং প্রশাসনকে বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

২০১৮ সালের পর হতে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির পরিমাণ কমেছে। ট্রাম্পের প্রথম দফার ধারাবাহিক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এটি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরায় বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে একজন শীর্ষ চীনা কর্মকর্তাও ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দেন, যদিও তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার দিং শুয়েশিয়াং বলেন, তার দেশ বাণিজ্য উত্তেজনার সমাধানে ‘উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক’ পথ খুঁজছে এবং আমদানি বাড়াতে চায়।

মেক্সিকো থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা পণ্য হচ্ছে যথাক্রমে: কার ও ট্রাক, অটো পার্টস, কম্পিউটার ও অ্যাকসেসরিজ, তেল, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, টেলিকম সরঞ্জাম, চিকিৎসা সরঞ্জাম, শিল্পের যন্ত্রপাতি, অ্যাভাকাডো-ব্লুবেরি-স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ফল। কানাডা থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা পণ্য হচ্ছে যথাক্রমে: তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য, কার ও ট্রাক, অটো পার্টস, অ্যালুমিনিয়াম ও বক্সাইট, ধাতব পণ্য, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ব্রেড-প্যাস্ট্রিসহ অন্যান্য বেকারি পণ্য। চীন থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা পণ্য হচ্ছে যথাক্রমে: সেলফোন, কম্পিউটার ও অ্যাকসেসরিজ, ইলেকট্রিক ও শিল্পের সরঞ্জাম, খেলনা-গেমস ও স্পোর্টস পণ্য, অ্যাপ্লায়েন্স ও ফার্নিচার, পোশাক ও বস্ত্র, কার পার্টস ও টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তিন বাণিজ্য অংশীদার চীন, কানাডা ও মেক্সিকো। গত বছর মার্কিন বাজারের মোট আমদানির ৪০ শতাংশের জোগান দিয়েছে এই তিনটি দেশ। ফলে নতুন এই চড়া শুল্ক আরোপ বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।