শিরোনাম :
Logo উচাং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইবির সমঝোতা স্মারক পর্যালোচনা বৈঠক Logo ইবিতে হিন্দুধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন Logo সিরাজগঞ্জের শিশু নামাজ পড়তে গিয়ে নিখোঁজ Logo সিরাজগঞ্জে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে পরিবার অবরুদ্ধ করার অভিযোগ Logo আলোকিত পথপ্রদর্শক: পীরে কামেল শাহসূফি সৈয়দ আবুল ওলা (রহ.) Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে চাঁদপুর জেলা পুলিশের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন Logo প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভিডিও করে সিরাজগঞ্জের শিপলুর চাঁদাবাজি Logo চাঁদপুর এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মুঃ ইসতিয়াক হাসানের যোগদান Logo কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ সুন্দরবনের দুর্র্ধষ ডাকাত আসাবুর বাহিনীর ২ সহযোগী আটক Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনসাফভিত্তিক মানবতাবাদী বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারঃ মোশাররফ হোসেন মিয়াজী

আত্মহত্যা করছেন গাজাফেরত অনেক ইসরায়েলি সেনা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৩২:০৮ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৫১ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজারে পৌছেছে। গাজা থেকে ফেরার পর ইসরায়েলের হাজার হাজার সেনা নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। সোমবার (২১ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য।

এলিরান মিজরাহি, ইসরায়েলের একজন সেনাসদস্য ছিলেন। গত বছর গাজায় লড়াই করতে পাঠানো হয়েছিল তাকে। আহত হলে এলিরানকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা হয়। আহত এলিরানকে বাচানো যায় নি। যুদ্ধের ভয়াবহতায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন তিনি। পুনরায় ওই ভয়াবহতার মধ্যে পাঠানোর আগে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

এলিরানের মা জেনি মিজরাহি বলেন, ‘সে গাজা ছেড়েছিল, তবে গাজা তাকে ছাড়েনি। সেই অবসাদেই আমার ছেলে মারা গেল।’

এলিরানের বোন শির সিএনএনকে বলেন, সে সব সময় বলত, আমি যে কী দেখে এসেছি, তা কেউ বুঝবে না।

গাজায় চার মাস ছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন চিকিৎসক। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি সিএনএনকে জানান, গাজার পর এখন অনেক সেনাকে লেবাননে পাঠানো হতে পারে—এই ভয় আছেন তারা। ইসরায়েলি বাহিনীর অনেক সেনাসদস্য এখন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে বিশ্বাস করেন না।

গাজায় সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নেই। যতটুকু কাজের সুযোগ রয়েছে তাও ইসরায়েলি বাহিনীর পাহারা ও নজরদারির মধ্যে থেকে করতে হচ্ছে। ফলে ইসরায়েলের হামলায় গাজার ফিলিস্তিনিদের কতটা দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে বা সেখানে ইসরায়েলি সেনারা কেমন অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছেন, সে চিত্রটা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

গাজাফেরত ইসরায়েলি সেনারা সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজায় তারা যে ভয়াবহতা দেখেছেন, তা বাইরের মানুষ সত্যিকার অর্থে কল্পনাও করতে পারবেন না।

গুই জাকেন, এলিরানের বন্ধু। তিনি গাজায় এলিরানের সঙ্গে বুলডোজার চালাতেন। এখন মাংস মুখে নিতে পারেন না তিনি। খাওয়ার সময় গাজায় বুলডোজারের ভেতর থেকে দেখা নানা দৃশ্যের কথা তার মনে পড়ে।

গাজায় দেখা মরদেহকে ‘মাংসের’ মতো মনে হয় জাকেনের কাছে। তিনি বলেন, ‘আপনি যখন বুলডোজারের বাইরে ফিলিস্তিনিদের ও ইসরায়েলি সেনাদের রক্ত ও মাংস পড়ে থাকতে দেখবেন, তখন তা সত্যিকার অর্থে আপনার খাবারের ওপর প্রভাব ফেলবে।’

গাজা যুদ্ধ থেকে ফেরা এক–তৃতীয়াংশ ইসরায়েলি সেনাই মানসিক স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। গত আগস্টে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, প্রতি মাসে এক হাজারের বেশি আহত সেনাসদস্যকে চিকিৎসার জন্য ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তাদের ৩৫ শতাংশ নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে এই সেনাদের ২৭ শতাংশের অবস্থা উন্নতির দিকে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ১৪ হাজার ইসরায়েলি সেনাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৪ হাজার ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হবেন।

গাজা থেকে ফেরার পর ইসরায়েলের হাজার হাজার সেনা ‘পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার’ (পিটিএসডি) সহ নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তবে তাদের কতজন আত্মহত্যা করেছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। সূত্র: সিএনএন

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

উচাং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইবির সমঝোতা স্মারক পর্যালোচনা বৈঠক

আত্মহত্যা করছেন গাজাফেরত অনেক ইসরায়েলি সেনা

আপডেট সময় : ০৯:৩২:০৮ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজারে পৌছেছে। গাজা থেকে ফেরার পর ইসরায়েলের হাজার হাজার সেনা নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। সোমবার (২১ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য।

এলিরান মিজরাহি, ইসরায়েলের একজন সেনাসদস্য ছিলেন। গত বছর গাজায় লড়াই করতে পাঠানো হয়েছিল তাকে। আহত হলে এলিরানকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা হয়। আহত এলিরানকে বাচানো যায় নি। যুদ্ধের ভয়াবহতায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন তিনি। পুনরায় ওই ভয়াবহতার মধ্যে পাঠানোর আগে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

এলিরানের মা জেনি মিজরাহি বলেন, ‘সে গাজা ছেড়েছিল, তবে গাজা তাকে ছাড়েনি। সেই অবসাদেই আমার ছেলে মারা গেল।’

এলিরানের বোন শির সিএনএনকে বলেন, সে সব সময় বলত, আমি যে কী দেখে এসেছি, তা কেউ বুঝবে না।

গাজায় চার মাস ছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন চিকিৎসক। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি সিএনএনকে জানান, গাজার পর এখন অনেক সেনাকে লেবাননে পাঠানো হতে পারে—এই ভয় আছেন তারা। ইসরায়েলি বাহিনীর অনেক সেনাসদস্য এখন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে বিশ্বাস করেন না।

গাজায় সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নেই। যতটুকু কাজের সুযোগ রয়েছে তাও ইসরায়েলি বাহিনীর পাহারা ও নজরদারির মধ্যে থেকে করতে হচ্ছে। ফলে ইসরায়েলের হামলায় গাজার ফিলিস্তিনিদের কতটা দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে বা সেখানে ইসরায়েলি সেনারা কেমন অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছেন, সে চিত্রটা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

গাজাফেরত ইসরায়েলি সেনারা সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজায় তারা যে ভয়াবহতা দেখেছেন, তা বাইরের মানুষ সত্যিকার অর্থে কল্পনাও করতে পারবেন না।

গুই জাকেন, এলিরানের বন্ধু। তিনি গাজায় এলিরানের সঙ্গে বুলডোজার চালাতেন। এখন মাংস মুখে নিতে পারেন না তিনি। খাওয়ার সময় গাজায় বুলডোজারের ভেতর থেকে দেখা নানা দৃশ্যের কথা তার মনে পড়ে।

গাজায় দেখা মরদেহকে ‘মাংসের’ মতো মনে হয় জাকেনের কাছে। তিনি বলেন, ‘আপনি যখন বুলডোজারের বাইরে ফিলিস্তিনিদের ও ইসরায়েলি সেনাদের রক্ত ও মাংস পড়ে থাকতে দেখবেন, তখন তা সত্যিকার অর্থে আপনার খাবারের ওপর প্রভাব ফেলবে।’

গাজা যুদ্ধ থেকে ফেরা এক–তৃতীয়াংশ ইসরায়েলি সেনাই মানসিক স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। গত আগস্টে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, প্রতি মাসে এক হাজারের বেশি আহত সেনাসদস্যকে চিকিৎসার জন্য ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তাদের ৩৫ শতাংশ নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে এই সেনাদের ২৭ শতাংশের অবস্থা উন্নতির দিকে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ১৪ হাজার ইসরায়েলি সেনাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৪ হাজার ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হবেন।

গাজা থেকে ফেরার পর ইসরায়েলের হাজার হাজার সেনা ‘পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার’ (পিটিএসডি) সহ নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তবে তাদের কতজন আত্মহত্যা করেছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। সূত্র: সিএনএন