ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ৭ কোটিরও বেশি টাকা ব্যায়ে নির্মিত কালীগঞ্জ উপজেলার দুইটি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বালির পরিবর্তে মাটি ও নিন্মমানের ইট, বালি, খোয়া ও রড ব্যবহার করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কাজ দুইটি বন্ধ করে দেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান। অভিযোগ পাওয়া গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার এলাকায় গনপুর্ত বিভাগের অর্থয়নে দেড় কোটি টাকা ব্যায়ে একটি খাদ্য গুদাম (গোডাউন) নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাদ্য গুদাম নির্মাণে নিন্মমানের ইট, বালি, খোয়া ও রড ব্যবহার করছিলো। নির্মান কাজ নিন্মমানের হওয়ায় এলাকাবাসী কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসে অভিযোগ দেন।
অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন তদন্ত করেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেকুর রহমান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি প্রাথমিক ভাবে নি¤œমানের কাজ করার সত্যতা পান। এরপর তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। এদিকে ঠিকাদারের ভাই মিজানুর রহমান লাড্ডু ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরুর পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্মাণ কাজের আগে ইস্টিমেট অনুযায়ি কোন সিটিজেন চার্ট টানানো হয়নি। কাজ তদারকীর দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের ভাই মিজানুর রহমান লাড্ডু বলেন, বুঝেন তো উপরের লেভেল থেকে আসতে হয়। এজন্য কাজও একটু হেরফের হবেই।
এদিকে বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে নির্মান কাজ করায় কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভবন নির্মানের কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যায়ে উপজেলা পরিষদের নতুন ভবনের এই নির্মান কাজ চলছিলো। সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান সরেজমিনে পরিদর্শন করে অনিয়ম দেখে দ্বায়িতপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের লোকজনকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তবে ঠিকাদারের লোকজন বলছে, অনিয়ম নয়, তারা ভুল করেই বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে কাজ করছিল। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান জানান, ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যায়ে উপজেলা পরিষদের অভ্যান্তরে “কনফারেন্স রুম” ভবনের নির্মান কাজে ঠিকাদার বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে ভরাট করছে বলে অভিযোগ পায়। এ জন্য সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুজিত কুমার ও ঠিকাদারের লোকজনকে তার দপ্তরে ডেকে এনে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, যশোরের মইন উদ্দিন বাশি নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডার পেয়ে পেয়ে কাজ করছেন। পরিষদের কনফারেন্স রুম ভবনের মেঝেতে সাড়ে ৩ ফিট বালি দিয়ে তার উপর ঢালায় দেবার কথা। কিন্তু‘ ঠিকাদারের লোকজন বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে ভরাট করছিল। এমন অনিয়ম দেখে প্রথম দিনেই তিনি মাটি না ফেলার জন্য বলেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন কথা শোনেনি। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান জানান, দুইটি নির্মান কাজে অনিয়ম দেখে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সঠিক ভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা পেলে তাদের আবার কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন কাজ বন্ধ করার পর দুই ঠিকাদারের কেও এখনো তার সাথে যোগাযোগ করেনি।

































