হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)-এর ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য ৮০টি শূন্য সিটে ভর্তি শুরু হয়েছে। এ আসনের বিপরীতে ইতিমধ্যে তিন জন বিদেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছে।
হাবিপ্রবির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সেকশনের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. হাসানুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আরো কয়েক জন বিদেশি শিক্ষার্থী হাবিপ্রবিতে ভর্তির জন্য তার সাথে যোগাযোগ করেছেন। ওই বিদেশি শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আবেদন করবে বলে তিনি আশা করেন।
তিনি জানান, এ বছর ১ জন সোমালিয়ার শিক্ষার্থী মাস্টার্স প্রোগ্রামে এবং ২ জন নেপালি শিক্ষার্থী পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছেন। স্নাতক পর্যায়ের ভর্তি, একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরবর্তী ১ মাস পর্যন্ত চলবে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০১ জন। তন্মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ৮০ এবং মেয়ে শিক্ষার্থী ২১ জন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আবাসিক হলের ব্যবস্থা না থাকায় ছেলেরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলে এবং মেয়েরা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থান করছেন।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হল সুপার প্রফেসর ড. মো. মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তাদের এদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক স্থানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, আর্থিক অসুবিধা দূর করতে সহায়তা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা এরমধ্যে অন্যতম।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ভিসা জটিলতা, সেশন জট, সীমিত সুযোগ সুবিধা এবং নানান জটিলতায় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সেকশনের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সেকশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়াতে কাজ শুরু হয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও স্থানীয় সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভর্তির জন্য দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ই-মেইলের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছি। ফলে বিদেশী শিক্ষার্থীরা আমার সাথে সহজে যোগাযোগ করে ভর্তির সব বিষয় জানতে পারছেন।
এ বিষয়ে হাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা জটিলতাসহ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেসব বিষয় খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গত এক দশকে সর্বোচ্চ-সংখ্যক বিদেশি গ্রাজুয়েট তৈরি করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। হাবিপ্রবিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ২০১৪ সালে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় ২২ জন, ২০১৫ সালে ৪২ জন, ২০১৬ সালে ৫৯ জন, ২০১৭ সালে ৬১ জন, ২০১৮ সালে ৬১ জন, ২০১৯ সালে ২৫ জন এবং ২০২০ সালে ৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন বলে সূত্রটি জানায়।
এরপর বিভিন্ন কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সেভাবে হয়নি। চলতি বছর আবার নতুন করে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করছেন।
উল্লেখ্য, নেপাল, ভুটান, ভারত, জিবুতি, নাইজেরিয়া ও সোমালিয়ার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় এক সময় মুখরিত থাকত উত্তর জনপদের আশার বাতিঘর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। অথচ ক্রমশ: হ্রাস পাচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির হার। সর্বশেষ ২০২৪ সেশনে ১৮ জন ভর্তির আবেদন করলেও ভর্তি হতে আসেননি তারা।