শিরোনাম :
Logo পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট Logo কুবিতে এক সাংবাদিক সংগঠনের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন Logo বিনামূল্যে বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুর সদরের ৫২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা

ডায়াবেটিস রোগীদের রোজার আগে করণীয়

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:১০:০৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে

 রোজা শুরুর আগে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজায় অন্যসময়ের খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন কাজের একটু তারতম্য হয় কিছুটা। 

সারাবছর দিনের তিন-চার বেলা খাবার গ্রহণ করলেও রোজায় সেই সুযোগ থাকে না আমাদের। তবে সুস্থ মানুষের জন্য রোজা রাখা যতটা সহজ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের পক্ষে সম্ভব না।

বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, আবার ইফতার ও সেহরিতে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই রোজা শুরুর আগে সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জেনে নিন সেসব-

চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
রোজা রাখার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে রোজা রাখার উপযুক্ততা নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজন হলে ওষুধের মাত্রা ও সময়সূচিতে পরিবর্তন আনবেন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা
রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসবে, তাই পূর্বেই সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজের সঠিক সমন্বয় থাকে। সেহরি ও ইফতারে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন লাল আটা, ওটস, শাকসবজি এবং চিবিয়ে খাওয়া যায় এমন ফলমূল গ্রহণ করুন। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

সেহরি ইফতারের সময়সূচি নির্ধারণ
সেহরি যতটা সম্ভব দেরিতে এবং ইফতার সময়মতো করুন। সেহরিতে ধীরপাচ্য কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি প্রদান করে। ইফতারে দ্রুত শোষণযোগ্য কার্বোহাইড্রেট, যেমন খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙুন, তবে পরিমাণে সংযম বজায় রাখুন।

পর্যাপ্ত পানি পান
রোজার সময় পানিশূন্যতা এড়াতে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। চিনি যুক্ত পানীয় পরিহার করুন, কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

শারীরিক পরিশ্রম ব্যায়াম
রোজার সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে দিনের সময়। হালকা ব্যায়াম, যেমন সন্ধ্যায় হাঁটা, ইফতারের পর করতে পারেন।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ
রোজার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করুন। যদি শর্করার মাত্রা খুব কমে যায় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা খুব বেড়ে যায় (হাইপারগ্লাইসেমিয়া), তবে রোজা ভেঙে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

ওষুধ ইনসুলিনের সময়সূচি সমন্বয়
রোজার সময় ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেহরি ও ইফতারের সঙ্গে ওষুধ গ্রহণের সময় নির্ধারণ করুন।

ইফতারে পরিমিত খাবার গ্রহণ
ইফতারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে না যায়।

মানসিক প্রস্তুতি
রোজার সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সহায়তা নিন।

সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরাও নিরাপদে রোজা পালন করতে পারেন। তবে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত এবং শরীরের সংকেতগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।

সূত্র: ডায়াবেটিস ইউকে, ডায়াবেটিস অন দ্য নেট

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট

ডায়াবেটিস রোগীদের রোজার আগে করণীয়

আপডেট সময় : ০৩:১০:০৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 রোজা শুরুর আগে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজায় অন্যসময়ের খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন কাজের একটু তারতম্য হয় কিছুটা। 

সারাবছর দিনের তিন-চার বেলা খাবার গ্রহণ করলেও রোজায় সেই সুযোগ থাকে না আমাদের। তবে সুস্থ মানুষের জন্য রোজা রাখা যতটা সহজ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের পক্ষে সম্ভব না।

বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, আবার ইফতার ও সেহরিতে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই রোজা শুরুর আগে সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জেনে নিন সেসব-

চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
রোজা রাখার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে রোজা রাখার উপযুক্ততা নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজন হলে ওষুধের মাত্রা ও সময়সূচিতে পরিবর্তন আনবেন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা
রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসবে, তাই পূর্বেই সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজের সঠিক সমন্বয় থাকে। সেহরি ও ইফতারে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন লাল আটা, ওটস, শাকসবজি এবং চিবিয়ে খাওয়া যায় এমন ফলমূল গ্রহণ করুন। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

সেহরি ইফতারের সময়সূচি নির্ধারণ
সেহরি যতটা সম্ভব দেরিতে এবং ইফতার সময়মতো করুন। সেহরিতে ধীরপাচ্য কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি প্রদান করে। ইফতারে দ্রুত শোষণযোগ্য কার্বোহাইড্রেট, যেমন খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙুন, তবে পরিমাণে সংযম বজায় রাখুন।

পর্যাপ্ত পানি পান
রোজার সময় পানিশূন্যতা এড়াতে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। চিনি যুক্ত পানীয় পরিহার করুন, কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

শারীরিক পরিশ্রম ব্যায়াম
রোজার সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে দিনের সময়। হালকা ব্যায়াম, যেমন সন্ধ্যায় হাঁটা, ইফতারের পর করতে পারেন।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ
রোজার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করুন। যদি শর্করার মাত্রা খুব কমে যায় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা খুব বেড়ে যায় (হাইপারগ্লাইসেমিয়া), তবে রোজা ভেঙে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

ওষুধ ইনসুলিনের সময়সূচি সমন্বয়
রোজার সময় ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেহরি ও ইফতারের সঙ্গে ওষুধ গ্রহণের সময় নির্ধারণ করুন।

ইফতারে পরিমিত খাবার গ্রহণ
ইফতারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে না যায়।

মানসিক প্রস্তুতি
রোজার সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সহায়তা নিন।

সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরাও নিরাপদে রোজা পালন করতে পারেন। তবে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত এবং শরীরের সংকেতগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।

সূত্র: ডায়াবেটিস ইউকে, ডায়াবেটিস অন দ্য নেট