নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজার জেলার বাঁকখালী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত ডিপিপিতে নয়টি প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়নের জন্য মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির পরিবর্তে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সূত্র জানায়, বাঁকখালী নদী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল থেকে উৎপত্তি হয়ে কক্সবাজার জলার মহেশখালী চ্যানেলে পড়েছে। নদীটি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ও বাইশাড়ী এবং কক্সবাজার জেলার রামু ও কক্সবাজার উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। প্রতি বছর পাহাড়ি ঝরনা থেকে আসা প্রচুর পলিমাটি নদীতে পড়ে। দীর্ঘদিন এভাবে পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা কমে গেছে। এর ফলে নদীর তীরভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রায় প্রত্যেক বর্ষা মৌসুমে নদীর তীর প্লাবিত হয়ে কৃষি জমিসহ বসত বাড়ির অনেক ক্ষতি হয়। বাঁকখালী নদীর নাব্যতা বাড়ানোর মাধ্যমে নৌচলাচল সুগম করা, নদী সংরক্ষণ ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় কৃষি জমিসহ সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা/সম্পদ নদীভাঙন থেকে রক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ‘কক্সবাজার জেলার বাঁকখালী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্প (প্রথম পর্ব)’ সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি গত বছর ২২ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয় এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৩ জানুয়ারি প্রশাসনিক আদেশ জারি করা হয়। সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ১ আগস্ট শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্পটির অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পটির আওতায় ২৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং, ৩৮ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ, ১২ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, আটটি পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ, ১ দশমিক ৮০০ কিলোমিটার নদী সংরক্ষণ কাজ, শূন্য দশমিক ৮০০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের ভৌত কাজ নয়টি প্যাকেজের মাধ্যমে খোলা দরপত্র পদ্ধতিতে (ওটিএম) সম্পাদনের সংস্থান রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের সুবিধার্থে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) করার আগ্রহ প্রকাশ করলে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এতে সম্মতি দিয়েছে। ডিপিএম পদ্ধতিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অনুমোদিত ডিপিপিতে প্রকল্পটির ভৌত কাজসমূহ ওটিএম পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ওটিএম বাস্তবায়নে নয়টি ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজে নয়জন বা একাধিক ঠিকাদার নির্বাচিত হলে কাজটি বাস্তবায়নে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিতে পারে এবং কাজ বাস্তবায়ন বিলম্বিত হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে প্রস্তাবিত নয়টি প্যাকেজকে একটি প্যাকেজের আওতায় এনে তা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কোনো একক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতে পারে।