নিউজ ডেস্ক:
সাভারে জমি লিখে না দেওয়ায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শাহাবুদ্দিন শাহা (৩২) নামের এক যুবক ও তার পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৯টার দিকে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সামাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এমনকি শুধু পিটিয়ে খান্ত হয়নি তারা হাতুড়ি দিয়ে হাত পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার পর সাথে তার নিকট হতে অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে ওই যুবককে।
স্থানীয়রা এবং আহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সামাইর গ্রামে প্রায় দুই বিঘা জমির উপর শাহাবুদ্দিন শাহার বসত বাড়ি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করেন তিনি। তবে দীর্ঘ দিন যাবৎ একই গ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন তাদের জমিতে মালিকানা দাবি করে আসছে। এমনকি বেশ কয়েকবার নাম মাত্র কিছু টাকা দিয়ে তাদের জমি লিখে নেওয়ার কথাও জানায় তারা। তবে বরাবরই জমি লিখে দিতে অস্বীকৃতি জানায় ওই যুবকের পরিবার। এরই সূত্র ধরে শনিবার রাতে এশার নামাজ শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় শাহাবুদ্দিন। আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা চেয়ারম্যানের লোকজন তার পথের গতিরোধ করে তাকে উঠিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় ওই যুবকের বৃদ্ধ বাবা শানু মিয়া ও মা উযুবা খাতুন বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরে ওই যুবকরে হাত-পা বেঁধে পেটায় সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে শাহাবুদ্দিন শাহাকে বিবস্ত্র করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার হাত ও পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। পরে তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে দেখিয়ে পুলিশে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ওই যুবককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত শাহাবুদ্দিনের বড় ভাই শাহাজাহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন ও তার বড় ভাই একাধিক মামলার আসামী তাদের জমি দখল করে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার পায়তারা করে আসছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানকে জমি লিখে দিতে রাজী না হওয়ায় তার ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে আবার একটি অস্ত্র দেখিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন দাবি করেন, ”ওই যুবক স্থানীয় বিএনপির সাথে জড়িত, সে সন্ত্রাসী। এ কারণেই তাঁর লোকজন তাকে মারধর করেছে। এছাড়াও তাঁর সাথে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।
এ দিকে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও যুবলীগ উপজেলা সভাপতি এবং ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য সেলিম মন্ডল বলেন, শাহাবুদ্দিন সাহা একজন নিরীহ যুবক। তাকে অন্যায়ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে।
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এছাড়াও অস্ত্র পাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।