বাংলাদেশ একটি বহু-ধর্মীয় এবং বহু-সংস্কৃতির দেশ। এখানে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সাম্প্রদায়িক ঐক্য ছিল এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ধারণা বর্তমান বাংলাদেশে মাঝে মাঝে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান ঐতিহ্য
বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সম্প্রীতির উদাহরণ রয়েছে। যেমন, বাংলা সাহিত্যের নানা সংস্কৃতির মধ্যে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের অংশগ্রহণ ছিল সুদীর্ঘকাল। বিশেষত, বিংশ শতকের প্রথমার্ধে, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনেও মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব যেমন দুর্গা পূজা, মুসলমানদের ঈদ, বৌদ্ধদের বৈশাখী পূজা, খ্রিস্টানদের বড়দিন—এগুলো সবই সবার মধ্যে সমানভাবে উদযাপিত হয়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও রাষ্ট্রের ভূমিকা
বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবসময়েই তৎপর। দেশের বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী ইসলাম হলেও, অন্য ধর্মাবলম্বীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে বিগত সরকার থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। বিশেষ করে কিছু অরাজনৈতিক গোষ্ঠী বা মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেলেও সেগুলো বেশ সুচারুভাবেই দমন করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য শক্তিশালী হলেও, বর্তমান সময়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং জনগণের সচেতনতায় আশা করা যায়, সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের চেতনাকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মনে করে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে নিরপরাধ কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারেও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে। সম্প্রীতি বিনষ্টের অপপ্রয়াসে লিপ্তদের চিহ্নিত করে যে কোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় পরিষদ সরকার, প্রশাসন ও শান্তি প্রিয় ধর্মপ্রাণ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।